Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
USA

হঠাৎ ভিসা বাতিল জেনে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়লেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় শিক্ষার্থী

দিনটা ছিল শুক্রবার। সাতসকালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিনজন অভিবাসন কর্মকর্তা নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক ফ্ল্যাটের দরজায় হাজির হন। তল্লাশির জন্য সেখানে যান তাঁরা কিন্তু দরজা খোলা হয়নি।

ওই অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন ভারতীয় শিক্ষার্থী রঞ্জনী শ্রীনিবাসন। তিনি জানতে পারেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাঁর শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করেছে। পরের রাতে (শনিবার) অভিবাসন কর্মকর্তারা আবার তাঁর ফ্ল্যাটের দরজায় হাজির হন। ওই সময় রঞ্জনী ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন না।

এর কয়েক ঘণ্টা পর (রোববার) একই ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে। এই ফিলিস্তিনি গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

এসব ঘটনায় শঙ্কা মাথায় নিয়ে দ্রুত ব্যাগ গুছিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন রঞ্জনী। কেননা, গত বছরের বিক্ষোভের সময় তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। যা–ই হোক, নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজে চেপে কানাডায় পাড়ি জমান রঞ্জনী। প্রিয় বিড়ালটিকে রেখে আসেন একজন বন্ধুর জিম্মায়।

অভিবাসন কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার আবারও রঞ্জনীর ফ্ল্যাটে যান। বিচারিক পরোয়ানা নিয়ে তাঁরা রঞ্জনীর ফ্ল্যাটে আসেন। ততক্ষণে রঞ্জনী যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন।

৩৭ বছর বয়সী রঞ্জনী শ্রীনিবাসন গত শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার পর এটাই তাঁর কোনো সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে প্রথম আলাপ। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম।’

রঞ্জনী ফুলব্রাইট বৃত্তি পেয়ে নগর পরিকল্পনা বিষয়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছর ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ফেডারেল অভিবাসন ক্ষমতা ব্যবহার করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। এ জালে আটকে গিয়েছে রঞ্জনীর ভাগ্য।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভের পরিচিত মুখ মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভের পরিচিত মুখ মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে

নিজের ফ্ল্যাটে অভিবাসন কর্মকর্তাদের আনাগোনার সপ্তাহটিতে রঞ্জনী কোনোভাবে বুঝতে পারছিলেন না, কেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা দেওয়া ছাড়াই তাঁর ভিসা বাতিল করেছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তাঁর ভর্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়। কেননা, ভিসা বাতিল হওয়ায় তাঁর আইনি মর্যাদাও খারিজ হয়ে যায়।

তবে শুক্রবার কানাডায় বসে রঞ্জনী তাঁর কৌতূহলের কিছু কিছু জবাব পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এক বিবৃতিতে রঞ্জনীকে ‘সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ‘সহিংসতা উসকে দেওয়া’ ও ‘সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের প্রতি সমর্থনমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার’ অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও তারা এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটিবিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ফুটেজ পোস্ট করেছেন। তাতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার আগে একটি স্যুটকেস হাতে রঞ্জনীকে লাগার্ডিয়া বিমানবন্দরে দেখা যায়।

ক্রিস্টি নোয়েম সানন্দে বলেন, ‘রঞ্জনী শ্রীনিবাসনের যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার ঘটনা নিজে নিজে বিতাড়িত হওয়ার নজির।’

এক্স পোস্টে ক্রিস্টি নোয়েম আরও লিখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও পড়াশোনার জন্য ভিসা পাওয়াটা একটা সৌভাগ্যের বিষয়। কিন্তু যখন আপনি সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের পক্ষে কথা বলেন, তখন সেই সুযোগ বাতিল করা উচিত। আর আপনার এই দেশে থাকা উচিত নয়।’

রঞ্জনীর আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। বরং অভিযোগ তুলেছেন, ‘নিরাপদ রাজনৈতিক বক্তব্য’ দেওয়ায় রঞ্জনীর ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এমনকি ভিসা বাতিল চ্যালেঞ্জ করে অর্থবহ কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেও তাঁকে দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে আইনজীবী নাজ আহমাদ বলেন, বিক্ষোভে দেওয়া বক্তব্যের জেরে গত সপ্তাহজুড়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ তাঁর মক্কেলকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এই উদ্যোগে তারা সফল হয়নি।

শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রঞ্জনী বলেন, ‘আমি শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। ভাবতেই পারছি না, ন্যূনতম পর্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়াজ তোলার মতো সাধারণ কাজের জন্য এমনটা হতে পারে। এ কারণে কেউ যখন আপনাকে সন্ত্রাসীদের বন্ধু বলে, আপনার জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে আপনাকে শঙ্কিত করে তোলে, তখন এটা একটা অবাস্তব দুঃস্বপ্ন হয়ে যায়।’

রঞ্জনী এই পরিস্থিতিতে পড়েছেন গত বছরের বিক্ষোভের জেরে। ওই সময় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হ্যামিলটন হল দখলে নেন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের প্রবেশপথ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রঞ্জনীকে।

তখন রঞ্জনী বলেছিলেন, তিনি কোনো ধরনের ভাঙচুরে জড়িত ছিলেন না। বরং পিকনিক শেষে বন্ধুদের সঙ্গে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ফেরার পথে ভিড় ও ব্যারিকেডের মধ্যে আটকে গিয়েছিলেন। এরপর গ্রেপ্তার হন।

তাঁকে কিছুক্ষণের জন্য আটক রাখা হয়েছিল। দুটি সমন জারি করা হয়েছিল। একটি যানবাহন বা পথচারীদের চলাচলে বাধা দেওয়ার জন্য। অন্যটি বিক্ষোভস্থল ছাড়তে অস্বীকার করার জন্য। তবে ওই সময় রঞ্জনীর মামলা দ্রুত খারিজ হয়ে যায়। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ডও বানানো হয়নি।

রঞ্জনী আরও বলেন, তিনি কখনোই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি হননি। তাঁর শিক্ষাগত অবস্থান বেশ ভালো।

রঞ্জনীর আরেকজন আইনজীবী নাথান ইয়াফে বলেন, প্রায় ১০০ জন বিক্ষোভকারীর সঙ্গে তাঁর মক্কেলকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে আদালত এটা বুঝতে পারেন, রঞ্জনী বাড়ি ফেরার পথে বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। এ জন্য মামলা খারিজ হয়ে যায়।

তবে গত বছরের শেষের দিকে রঞ্জনী যখন ভিসা নবায়নের আবেদন করেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে জারি হওয়া সমনের কথা উল্লেখ করেননি। কেননা, এটা মে মাসেই নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া একটি ঘটনা। তাঁকে দোষীসাব্যস্ত করাও হয়নি, এমনটাই বলেন এই শিক্ষার্থী।

রঞ্জনী আরও বলেন, ‘এটাই (আবেদনে সমনের তথ্য উল্লেখ না করা) হয়তো আমার ভুল ছিল।’

যদি কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতির আশ্রয় নেন, কেউ মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, কেউ দোষীসাব্যস্ত হন কিংবা গ্রেপ্তার হন, তাহলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনসংগত কারণগুলোতে ওই শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করতে পারে।

মাহমুদ খলিলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ। ১২ মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে

মাহমুদ খলিলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ। ১২ মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে

যদিও অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, ভিসা বাতিল হওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের খুঁজতে ক্যাম্পাসগুলোয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বারবার যাওয়া কিংবা অবস্থান করার ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কয়েক দিন ধরে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। এটা অনেক শিক্ষার্থীর বিরক্তির কারণ হয়েছে।

এ বিষয়ে আমেরিকান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী গ্রেগ চেন বলেন, ‘মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে যেসব আচরণ করা হচ্ছে, তা বিরল। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সেখানে ক্যাম্পাসে গিয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোয় ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিতাড়নের উদ্দেশ্যে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ট্রাম্প দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন, ক্যাম্পাসে কোনো ‘অবৈধ বিক্ষোভের’ অনুমতি দিলে তাদের জন্য বরাদ্দ ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হবে।

মাহমুদ খলিল গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক দিন আগে ট্রাম্প কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের ফেডারেল তহবিল বাতিল করেছেন। সেখানকার বিদেশি শিক্ষার্থী আটক করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা আর দেশটির নাগরিক সংগঠনগুলো।

এ বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের অভিবাসন কর্মকর্তা জেসন হাউসার বলেন, ‘আগ্রাসী অভিবাসন নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে বাক্‌স্বাধীনতাকে অপরাধী করা আমাদের গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।’

গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় খলিলকে। তাঁর গ্রিন কার্ড (যুক্তরাষ্ট্রে পাকাপাকি বসবাসের আইনি নথি) রয়েছে। গত বছর ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভের গুরুত্বপূর্ণ মুখ ছিলেন খলিল।

এ ছাড়া শুক্রবার একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লেকা কর্দিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিও বিক্ষোভে বেশ সক্রিয় ছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এর আগেও এপ্রিলে কলাম্বিয়ার একটি বিক্ষোভে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

রঞ্জনী বলেন, খলিল যেমন বিক্ষোভের সক্রিয় কর্মী ছিলেন, তিনি তেমনটা নন। এমনকি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া কোনো সংগঠনের সদস্যও নন তিনি।

ভারতীয় এই শিক্ষার্থী জানান, তিনি ছিলেন একজন স্থপতি। ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে ২০১৬ সালে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ২০২০ সালে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্কিটেকচার, প্ল্যানিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন থেকে নগর পরিকল্পনায় ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার পথে পঞ্চম বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন। আগামী মে মাসে তাঁর এই কোর্স শেষ হওয়ার কথা।

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায়’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব একটা সরব ছিলেন না রঞ্জনী। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে তাঁর কর্মকাণ্ড মূলত লাইক দেওয়া কিংবা শেয়ার দেওয়ার মধ্যে সীমিত। তবে গাজা ইস্যুতে কিছু খোলাচিঠিতে সই করেছিলেন রঞ্জনী। এর মধ্যে স্থপতিদের লেখা ‘ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা’ নিয়েও একটি খোলাচিঠি ছিল।

৫ মার্চ ভারতের চেন্নাইয়ের মার্কিন কনস্যুলেট থেকে একটি ই-মেইল পান রঞ্জনী। তাতে তাঁর ভিসা বাতিলের কথা ছিল। তবে কোনো কারণ জানানো হয়নি। এতে বেশ অবাক হন রঞ্জনী।

তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীবিষয়ক দপ্তরে পরামর্শের জন্য ই-মেইলে যোগাযোগ করেন। পরদিন ৬ মার্চ একজন কর্মকর্তা তাঁকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে গেলেই কেবল এই আদেশ কার্যকর হবে এবং তিনি আপাতত তাঁর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারবেন।

৭ মার্চ সকালে রঞ্জনী যখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীবিষয়ক দপ্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন, ঠিক তখন কেন্দ্রীয় সরকারের অভিবাসন কর্মকর্তারা তাঁর দরজায় কড়া নাড়েন। তাঁর অ্যাপার্টমেন্টটি ক্যাম্পাসের বাইরে, তবে ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন।

যা–ই হোক, রঞ্জনীর রুমমেট দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। দরজার অন্য পাশ থেকে কমর্কতাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেটা রেকর্ডও করেন তিনি। পরে তা সংবাদমাধ্যমকে দেন রঞ্জনীর রুমমেট। ওই সময় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীবিষয়ক দপ্তরের কর্মকর্তা রঞ্জনীকে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

ওই রাতে রঞ্জনী তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে চলে যান। কাজেই পরে যখন অভিবাসন কর্মকর্তারা আবার সেখানে আসেন, তখন রঞ্জনী ছিলেন না। তাঁর রুমমেট আবারও দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। সেদিনও তাঁদের মধ্যকার কথোপকথন রেকর্ড করা হয়।

এর পরদিন রঞ্জনী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি ই-মেইল পান। তাতে বলা হয়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে যে রঞ্জনীর ভিসা বাতিল হয়েছে। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর অবস্থানের আইনি বৈধতা শেষ হয়ে গেছে। তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে হবে।

ই-মেইলে রঞ্জনীকে আরও বলা হয়, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর নিবন্ধন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে শিক্ষার্থী আবাসন ছেড়ে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীবিষয়ক দপ্তরের পাঠানো ই-মেইলে তাঁকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করারও পরামর্শ দেওয়া হয়।

এরপর বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় সরকারের তিনজন অভিবাসন কর্মকর্তা বিচারকের সই করা তল্লাশির পরোয়ানা নিয়ে রঞ্জনীর অ্যাপার্টমেন্টে হাজির হন বলে জানান তাঁর রুমমেট ও আইনজীবীরা। ততক্ষণে রঞ্জনী নিরাপদে কানাডায় পৌঁছে গেছেন।

রঞ্জনী শ্রীনিবাসনের এসব ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানায় কর্তৃপক্ষ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto