Hot

‘গরিবরা ৫ হাজার টাকা ঋণ নিলে কোমরে দড়ি, অথচ বড় খেলাপিদের ধরা যায় না’ শত কোটি আটকে রাখতে বড় আইনজীবী নিয়োগ’

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বড় বড় ঋণ খেলাপিরা শত শত কোটি ঋণ নেয় এবং সেই ঋণ যাতে পরিশোধ করতে না হয়- সে জন্য বড় বড় আইনজীবী নিয়োগ করেন। অথচ পাঁচ-দশ হাজার টাকা ঋণের কারণে কৃষকের মাজায় দড়ি পড়ে। তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে আসা হয়।’ নারায়ণগঞ্জের এক প্রয়াত ব্যবসায়ীর ঋণ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সোমবার এসব কথা বলেন বিচার বিভাগের প্রধান।

নারায়ণগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে ১৯৯৬-৯৭ সালে ৩২ কোটি টাকা ঋণ নেন ব্যবসায়ী মো. ফজলুর রহমান। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির বিপরীতে নিজের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মো. ফজলুর রহমান অ্যান্ড কম্পানি ও স্ত্রী মাজেদা রহমানের নামে এ ঋণ নেন তিনি। ২০১৭ সালে এ ব্যবাসায়ী ও তার স্ত্রী মারা গেলে ঋণ আদায়ে সোনালী ব্যাংক অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করে। সম্পত্তির ওয়ারিশান হিসেবে ফজলুর রহমানের তিন ছেলে, এক মেয়ে ও ফজলুর রহমান অ্যান্ড কম্পানির বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।

ওই বছরই রায় ও ডিক্রি দেন আদালত। রায়ে দায়িকদের (ফজলুর রহমানের চার সন্তান ও ব্যবাসায়ী প্রতিষ্ঠান) দুই মাসের মধ্যে ১০২ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ রায়ের পরও ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৯ সালে অর্থঋণ আদালতে জারি মোকদ্দমা করে সোনালী ব্যাংক। এই জারি মোকদ্দমায় সুদে-আসলে ১১৫ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

কিন্তু দায়িকদের সহায়-সম্পত্তি না থাকায় ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দায়িকদের দেওয়ানি কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। অর্থঋণ আদালতের এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট করেন চার দায়িক অর্থাৎ প্রয়াত ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের চার সন্তান। রিট আবেদনকারীরা হলেন- ফজলুর রহমানের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান, মো. মাসুদুর রহমান, মো. আতিকুর রহমান ও মেয়ে বেগম ফারজানা রহমান।

এ রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ২০২১ সালে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে হাইকোর্ট অর্থঋণ আদালতের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। দায়িকদের দেওয়ানি কারাগারে পাঠাতে অর্থঋণ আদালতের রায় কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। এরপর দফায় দফায় স্থগিতাদেশ বাড়ানো হয়। গত ২২ মে রুল শুনানির মধ্যে হাইকোর্ট দায়িকদের সহায়-সম্পত্তি তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রিট আবেদনকারীরা। আবেদনে বলা হয়, রিট মামলায় হাইকোর্ট দায়িকদের সহায়-সম্পত্তির তালিকা দাকিলের নির্দেশ দিতে পারেন না।

সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন- বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম। সোনালী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ দেলাওয়ার হোসাইন।  

আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ আদেশের ফলে হাইকোর্টের আদেশটি বহাল আছে। ফলে আগামী দুই মাসের মধ্যে দায়িকদের সহায়-সম্পত্তির তালিকা বা হিসাব হাইকোর্টে দাখিল করতে হবে।’ 

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করায় সর্বোচ্চ আদালত উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, অর্ধঋণ আদালতের রায় ও ডিক্রিরে বিরুদ্ধে আপিল না করে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন নিয়ে আসার কোনো কারণ দেখি না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto