হামিদের ফেরা নিয়ে নানা আলোচনা

থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিয়ে এক মাস পর দেশে ফিরেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ। রোববার দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকা পৌঁছান। তার দেশে ফেরার পর এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। গত ৭ই মে দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে আবদুল হামিদ ব্যাংকক যান। মামলা মাথায় নিয়ে তিনি কীভাবে দেশ ছাড়লেন এ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন দেখা দেয়। তুমুল সমালোচনার মুখে পুলিশের চারজন কর্মকর্তাকে শাস্তি দেয়ার কথা জানানো হয়। সাবেক প্রেসিডেন্টের দেশ ছাড়ার পরই জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জোরদার করে বিভিন্ন কর্মসূচি দেয়। যমুনা ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয়া হয়। চাপের মুখে বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। ওই সময় বলা হয়েছিল মামলা থেকেই বাঁচতে আবদুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন।
তার দেশ ছাড়ার পেছনে সরকারের লোকজনের হাত আছে এমন আলোচনাও ছিল। কিন্তু চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় আব্দুল হামিদ গ্রেপ্তার হবেন কিনা, একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কীভাবে আইনের মুখোমুখি হবেন এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা আছে। গত সোমবার এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. অব. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। জবাবে তিনি জানান, আবদুল হামিদ দোষী হলে আইনের বাইরে রাখা হবে না।
ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। গত ১৪ই জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি করা হয়।
মামলার আসামি হয়েও তিনি কীভাবে দেশত্যাগ করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। এরপর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।
ডেপুটি স্পিকার ও স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর আওয়ামী লীগের সময়ে ২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। ২০১৮ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪শে এপ্রিল প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন।