হারিকেন হেলেনের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলে ঢেউ, নাসার পর্যবেক্ষণে রেকর্ড
ফ্লোরিডার গালফ কোস্টে সেপ্টেম্বর মাসে আঘাত হানা শক্তিশালী হারিকেন হেলেন এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে বিশাল ঢেউ বা ‘অ্যাটমোসফেরিক গ্রাভিটি ওয়েভ’ সৃষ্টি করেছে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) স্থাপিত নাসার ‘অ্যাটমোসফেরিক ওয়েভস এক্সপেরিমেন্ট’ (AWE) এই ঢেউগুলো প্রায় ৯০ কিলোমিটার ওপরে রেকর্ড করেছে, যা পৃথিবীর আবহাওয়ার মহাকাশের আবহাওয়ার উপর প্রভাব প্রদর্শন করে। AWE যন্ত্রটি এই ঢেউগুলো বায়ুপ্রভা (airglow) পরিমাপের মাধ্যমে শনাক্ত করে, যা মেসোস্ফিয়ারে গ্যাস থেকে নির্গত একটি মৃদু আলো। ইউটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক লুডগার শেরলিয়েস বলেছেন, যেভাবে একটি পুকুরে পানিতে ফেলা পাথরের চারপাশে ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক তেমনি হারিকেন হেলেনের প্রভাবে ফ্লোরিডার উত্তর-পশ্চিম উপকূল থেকে ঢেউ পশ্চিম দিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
হারিকেন হেলেন ক্যাটাগরি ৪ এর একটি ঝড় ছিল, যা ২২৫ কিমি/ঘণ্টা গতিতে ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হানে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, এই ঝড়ে ২৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন এবং বিপুল সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়। হারিকেন হেলেনের কয়েক সপ্তাহ পর ফ্লোরিডা রাজ্য আরও একটি শক্তিশালী ঝড়, হারিকেন মিলটনের সম্মুখীন হয়।
অ্যাটমোসফেরিক গ্রাভিটি ওয়েভ কী?
অ্যাটমোসফেরিক গ্রাভিটি ওয়েভ হলো বায়ুমণ্ডলে সৃষ্ট ঢেউ, যা তখনই ঘটে যখন বায়ু বাধাগ্রস্ত হয়ে দোলতে শুরু করে। এটি অনেকটা শান্ত পুকুরে পাথর ফেলার পর সৃষ্ট ঢেউয়ের মতো। তবে এটি পানির পরিবর্তে বায়ু এবং মেঘের স্তরে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত পাহাড়, ঝড় বা হারিকেনের মতো বড়ো আবহাওয়াগত ঘটনায় এ ধরনের ঢেউ সৃষ্টি হতে পারে।
গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ থেকে পার্থক্য কী?
অ্যাটমোসফেরিক গ্রাভিটি ওয়েভ বায়ুমণ্ডলের ঢেউ, আর গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ মহাবিশ্বের স্থান-কালের মধ্যে শক্তিশালী ঘটনার ফলে সৃষ্ট ঢেউ। ব্ল্যাক হোল বা নিউট্রন তারকার সংঘর্ষের মতো ঘটনা থেকে এ ধরনের ঢেউ তৈরি হয়।