Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

হাসনাতেই জিম্মি ছিল বরিশাল

১৫ বছরের আওয়ামী লীগের শাসনামলে গোটা বরিশালই ছিল দলটির কাছে জিম্মি। একটি পরিবারের সিদ্ধান্তেই সব চলতো সেখানে। সেই পরিবারের নাম সেরনিয়াবাত পরিবার। স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক মেয়র ছিলেন বরিশালের সর্বেসর্বা। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতো বিভিন্ন নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন, ঠিকাদারি এবং রাজনীতি। 

সম্প্রতি সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের একক নিয়ন্ত্রক ছিলেন সেরনিয়াবাত আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে। অর্থের বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা, দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ পাইয়ে দেয়া ছাড়াও সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে কমিশন, সরকারি বরাদ্দের অর্থ নিজের সম্পদ উন্নয়নে ব্যয় করা ও ব্যাপক জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে হাসনাত আবদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে। আর এসবে ভূমিকা রাখতেন তার তিন ছেলে মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও আশিক আবদুল্লাহ। গত ৫ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালানোর পরপর সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। যদিও মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি জামিনে ছাড়া পান। গত ৩রা ডিসেম্বর ফের তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ: আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে বরিশাল অঞ্চলের যেকোনো নির্বাচনে মনোনয়ন কে পাবেন সেটার নির্ধারক ছিলেন আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা জেলা ও জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করে দিতেন তিনি। বিজয়ী প্রার্থীও নির্ধারণ করতেন তিনি। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতেন হাসনাত আবদুল্লাহ। টাকা না দিলে প্রার্থিতা মিলতো না- এমন অভিযোগও রয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ’র পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিলে নিজেই বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করাতেন। আর তাকে জয়ী করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা কাজে লাগাতেন। 
বিভাগের ছয় জেলা ও ৪২টি উপজেলায় বেশির ভাগ কমিটিতে পদ-পদবি পেয়েছেন তার অনুসারীরা। পাশাপাশি উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের বেশির ভাগ চেয়ারম্যান ও মেয়রও হয়েছে তার পছন্দের লোকজন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য করেছেন তিনি। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের গুনতে হয়েছে এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে ৫০ লাখ থেকে এক কোটির অধিক টাকা। 

তার নিজের পছন্দের লোক ছাড়া দলের পদ ও জনপ্রতিনিধি হওয়া প্রায় অসম্ভব করে ফেলেছিলেন আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। তার নির্দেশ অমান্য করতে পারে, এমন কোনো নেতা বা জনপ্রতিনিধি শান্তিতে থাকতে পারতো না। 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক কর্মী মানবজমিনকে বলেন, হাসনাত আবদুল্লাহ’র প্রভাবে ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্তত ৯জন চেয়ারম্যান হন। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য প্রত্যেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নেয় তার পরিবার। ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য তাদের দিতে হয়েছে এক কোটি টাকা করে। বিষয়টি তখন ওপেন সিক্রেট ছিল। মনোনয়ন বঞ্চিতরা তখনই বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি তুলেছিলেন। 


স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বরিশালের বিভিন্ন উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে টাকা দিতে হতো। গৌরনদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমান এবং আগৈলঝাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটনের মাধ্যমে হাসনাত এই টাকা নিতেন। 

উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন: দলীয় নেতাকর্মী ও ঠিকাদারিতে জড়িত বেশ ক’জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পৌরসভাসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্পের কোন কাজ কে পাবেন, সেটাও ঠিক করে দিতো হাসনাত পরিবার। কয়েক বছর ধরে হাসনাতের মেয়ে আর তিন ছেলে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা রাখতেন। হাসনাত পরিবারকে প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ১০ শতাংশ থেকে ক্ষেত্রবিশেষে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন কাজ শুরুর আগেই দিতে হতো। উন্নয়ন কাজের দরপত্র বণ্টন ও কমিশন আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন  গৌরনদী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমান হারিছ এবং আগৈলঝাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন। 

জমি দখলে সেরা: জমি পছন্দ হলেই নিজের করে নিতেন আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও তার পরিবার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দুই একর ১৯ শতাংশ জমির রেকর্ড নিজ নামে করেছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এছাড়াও বরিশাল নগরীর বান্দ রোড, কালিবাড়ী রোড, সিঅ্যান্ডবি রোড, কাশিপুরে এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কয়েক একর জমির মালিক তিনি ও তার পরিবার। এসব জমি নামমাত্র টাকায় ভয়-ভীতি দেখিয়ে কেনার অভিযোগ রয়েছে। বরিশাল নগরীসহ গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় নামে-বেনামে শত একরের ওপর জমি রয়েছে। 

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ‘দি লক্ষ্মণ দাস সার্কাস’ এর মালিকের অরুণ দাসের মালিকানাধীন লীলা সিনেমা হলের ভবনসহ ৩৪ শতাংশ জমি জোর দলিল করে নিয়েছেন। এছাড়াও অরুণ দাসের আরও ৯৬ শতাংশের দীঘি নেয়ার চেষ্টা করেন। অরুণ দাস অভিযোগ করেন, পূর্বপুরুষের ৯৬ শতাংশ জমির ওপরে থাকা ঐতিহ্যবাহী পালরদী দীঘি তার নামে নেয়ার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা। বাধ্য হয়ে গত ১০ বছর ধরে গৌরনদী যাননি তিনি। 

আওয়ামী লীগ ক্ষমতার ১৫ বছরে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ পালরদী গ্রামের রিকশা মিস্ত্রি নূর মোহাম্মদের ১ একর ৪৮ শতাংশ, পৌর যুবলীগের সদস্য ফিরোজ হাওলাদারের ৫৬ শতাংশ, উত্তর বিজয়পুরে দুই হিন্দু পরিবারের ৭০ শতাংশ, এক চিকিৎসকের ১০ শতাংশ, অপর একটি পরিবারের ৬০ শতাংশ জমি লিখে নেন আবুল হাসনাত। ২০১৯ সালে উপজেলার উত্তর বিজয়পুর এলাকার মৃত ময়জুদ্দিনের ২৮ শতাংশ জমি হাসনাতের মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক কলেজকে রেকর্ড করে নিয়েছেন। গৌরনদী মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি পাঠাগারের নামে বিভিন্ন জনের ৩০ শতাংশ জমি রেকর্ড করিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। 

অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি: হাসনাত আবদুল্লাহর নির্বাচনী এলাকা বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া)। গত তিনটি সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া সম্পদ বিবরণী থেকে জানা যায়, ১০ বছরে হাসনাত আবদুল্লাহ’র ব্যক্তিগত সম্পদ বেড়েছে। 
১০ বছরের ব্যবধানে হাসনাত আবদুল্লাহ’র বার্ষিক আয় ১৬ গুণ বেড়ে হয় ৪ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৩৪ টাকা। আর আর্থিক বা অস্থাবর সম্পদ ১৩ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার ৮২০ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষিজমি কিছুটা কমে ১৭ একর এবং অকৃষিজমি কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক শূন্য ৪৯ শতাংশ। আগের পুরোনো দালানের বাইরেও রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের কথা হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি।

সিটি করপোরেশনে চাচা-ভাতিজার ত্রাস: ২০১৮ সালে অনেকটা বিতর্কিত ভোটের মধ্য দিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র হন হাসনাত আবদুল্লাহ’র ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। পাঁচ বছরে পরিবারের ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ সব নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। ২০২৩ সালে তাকে আর আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ভাতিজার বদলে দেয়া হয়েছে বরিশাল মহানগীরর রাজনীতিতে অচেনা মুখ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। তিনিও শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে। এক বছরেই নানা বিতর্ক এবং অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। 

বরিশাল সিটির একাধিক প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানবজমিনকে জানান, খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র হওয়ার পর বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নেন। বিভিন্ন স্থাপনা, বাস টার্মিনাল, বালুমহাল, ব্যবসায়িক স্থান ইত্যাদি দখল করেন। বরিশালের বিভিন্ন হাটবাজারের ইজারা বাতিল করার পর সেগুলো তার দলের লোকজনের কাছে তুলে দেয়া হয় এবং এর মাধ্যমে নিয়মিত উৎকোচ আদায় হতো। এ ছাড়া ছয়তলা বা তার বেশি উচ্চতার ভবনের প্ল্যান অনুমোদনের সময়ও উৎকোচ গ্রহণের ব্যাপারে অভিযোগ আছে। বরিশাল সিটি করপোরেশন চলতি বছরের মার্চ মাসে নগরীর সড়ক ও ড্রেন সংস্কারের জন্য ২৬৭ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করে। এই টেন্ডারে বরিশালের বিতর্কিত ঠিকাদার মাহফুজ খানের নামও উঠে আসে। একাধিক ঠিকাদার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, এসব প্রকল্পের কাজ ঠিকাদারদের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেয়া হতো এবং এসব কাজের জন্য শতকরা ১০ শতাংশ অগ্রিম টাকা দাবি করা হতো। প্রায় সব ঠিকাদারি কাজে খোকন সেরনিয়াবাতের লোকজন নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ টাকা নিতেন, যা পৌঁছাতো খোকনের হাতে।

বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও খোকন তার লোকজন বসান। যেখানে আগে ছিলেন বাসমালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব হোসেন। খোকন তাকে সরিয়ে ছাত্রলীগ নেতা অসীম দেওয়ানকে সেখানে বসিয়ে দেন। স্থানীয় বাজারগুলো থেকে আয় প্রতিদিন তার বাসায় পৌঁছাতো। এ ছাড়া খোকন সেরনিয়াবাতের লোকজন বরিশাল লঞ্চঘাটসহ অন্যান্য নদীবন্দরের ঘাট দখল করে নেন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা জানান, একসময় ঘাটের রাজস্ব আদায় বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। একইভাবে, বরিশালের দু’টি বাস টার্মিনাল থেকে প্রতি মাসে ২৫-৩০ লাখ টাকা আদায় করা হতো; যা খোকনকে দিতে হতো। নতুন দূরপাল্লার পরিবহনের আগমনের পরও ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা তার হাতে পৌঁছাতো। এ ছাড়া বরিশাল প্ল্যানেট পার্কের চুক্তি নবায়নকালে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। পার্কের পরিচালনা পরিষদের এক সদস্য জানান, চুক্তির নবায়ন এবং সিটি করপোরেশনের ফি ছাড়াও আলাদা ৪০ লাখ টাকা খোকন সেরনিয়াবাতকে দিতে হয়েছিল।

৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর খোকন সেরনিয়াবাত বরিশাল ছেড়ে পালিয়ে যান, এরপর তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এদিকে, বরিশাল আওয়ামী লীগ নেতারা তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, খোকন সেরনিয়াবাত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়া সরাসরি মেয়র হয়ে ওঠেন; যা বরিশালবাসীর জন্য এক দুঃখজনক ঘটনা। বরিশালবাসী এবং স্থানীয় রাজনীতিবিদরা খোকন সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য পদক্ষেপ এবং সরকারি পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে আরও খতিয়ে দেখার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। 

অভিযোগের বিষয়ে খোকন সেরনিয়াবাত, সাদিক আবদুল্লাহ কিংবা হাসনাত আবদুল্লাহ’র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সাদিক দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে, খোকন সেরনিয়াবাত দেশের ভেতরেই কোথাও পালিয়ে রয়েছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto