Bangladesh

হাসিনার নতুন ফাঁদ ‘গুজব’

আ.লীগ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘গুজব লীগ’ ভারতে আশ্রয় নেয়া আওয়ামী লীগ নেতা-আমলাদের ‘লো প্রফাইলে’ চলাফেরার নির্দেশনা দেশ গঠনে জাতির প্রত্যাশা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সতর্কতা ও সেনাপ্রধানের দৃঢ়তার প্রত্যাশা ড. ইউনূসের সাফল্যের ধারাবাহিকতা ব্যাহত করতে হাসিনার দেশীয় দোসরদের নানামুখী ষড়যন্ত্র

‘এই নিয়েছে ঐ নিল যা:! কান নিয়েছে চিলে/চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে/কানের খোঁজে ছুটছি মাঠে, কাটছি সাঁতার বিলে/আকাশ থেকে চিলটাকে আজ ফেলব পেড়ে ঢিলে’ (শামসুর রাহমান)। ‘কান নিয়েছে চিলে’ ছড়ার মতোই কিছু মানুষ চিলের পিছে (আওয়ামী গুজব) ছুটতে শুরু করেছে। ‘গণহত্যাকারী হাসিনার আওয়ামী লীগ আগরতলায় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে’, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভারতের আগরতলায় সমাবেশ করে প্রবাসী সরকার গঠনের চেষ্টা করছে’ এসব আজগুবি তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘গুজব’ ছড়ানো হচ্ছে। এসব ‘ফেইক তথ্য’ একশ্রেণির গণমাধ্যম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু-একজন নাবালক সমন্বয়ক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে সাইবার য্দ্ধু! গ্রাম-গঞ্জে ‘শেয়াল এসেছে, শেয়াল এসেছে’ গুজব রটলে যেমন মুরগির মালিক গেরস্থ বধূদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, ‘আওয়ামী লীগ ভারতে প্রবাসী সরকার গঠন করবে’ এমন খবরে কিছু মানুষের মধ্যে সেই দশা হয়েছে। ভারতে সত্যিই কি আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত হচ্ছে? আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বলছে এসবই ‘আজগুবি তথ্য’। বরং আওয়ামী লীগের অনুগত সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত বিবিসির সাংবাদিক শুভজ্যোতি ঘোষকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,্ এসব তথ্য গাঁজাখুরি, ভিত্তিহীন, প্রোপাগান্ডা। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসে ভারতে যারা আশ্রয় নিয়েছে দিল্লি তাদের অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘লো প্রোফাইল’ বজায় রেখে চলার নির্দেশ দিয়েছে।

১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যকাণ্ডের পর ভারতে পালিয়ে গিয়ে ‘র’ এর সহায়তায় আবদুল কাদের সিদ্দিকী এমন চেষ্টা করেন। এতে ব্যক্তিগতভাবে তিনি লাভবান হলেও সীমান্তের কাছেই ঘেঁষতে পারেননি। বরং ভারতের ক্ষমতাসীন জনতা পার্টি কাদের সিদ্দিকীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিল। ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের কাছে ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা করবো না’ দাসখত দেয়ার পর জনতা পার্টি কাদের সিদ্দিকীকে ভারতে থাকার অনুমতি দেয়।

‘শেখ হাসিনা পালায় না’ ঘোষণা দিলেও বাস্তবতা হলো গণহত্যা করে হাসিনা পালিয়ে গেছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা বিদেশে থাকায় একমাত্র বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে গেছেন। এতে দেশে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকে দেশে বিপদে ফেলায় তারা শেখ হাসিনাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ উপাধি দেন। শেখ হাসিনা সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারে গুজব ছড়িয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগ ও পুলিশের দলদাস কর্মকর্তাদের উস্কানি দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছিলেন। তিনি দিল্লি পালানোর পর ১৯৪৯ সালে জন্ম নেয়া আওয়ামী লীগের রাজনৈতিকভাবে অপমৃত্যু ঘটে গেছে। সেই অপমৃত্যু থেকে আওয়ামী লীগ নামক ‘লাশ’কে টেনে তুলতে ‘চট করে দেশে ফিরবো’, ‘ড. ইউনূসের সরকার এক মাসও টিকবে না’ ইত্যাদি বক্তব্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেন। অতঃপর গ্রামের মুরগিওয়ালি বউদের ‘শিয়াল আসছে’ ভয় দেখানোর মতোই ‘প্রবাসী সরকার গঠন করা হবে’ ‘আগরতলায় সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ’ ইত্যাদি গুজব ছড়াচ্ছেন। শুধু তাই নয় সোশ্যাল মিডিয়ায় কখনো গুজব ছড়াচ্ছে, সোহেল তাজ-সেলিনা হায়াত আইভির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন করা হচ্ছে; কখনো গুজব ছড়াচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত হবে। বাস্তবতা হচ্ছে এসবই ফেইক তথ্য। পতিত আওয়ামী লীগ কার্যত গুজবলীগে পরিণত হয়েছে। বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব ছড়ানো হচ্ছে। উদ্দেশ্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করে তোলা। কিছু তথাকথিত সুশীল প্রতিনিধি, সিনিয়র সংবাদিক, নাটক-সিনেমার কর্মী এসব গুজব প্রচার করছেন। সিনিয়র সাংবাদিকদের কেউ কেউ নিরপেক্ষতার ভাব নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।

কঠিন সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশ গঠনের দায়িত্ব নেন। তিনি এই আড়াই মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক ইমেজ কাজে লাগিয়ে দৃঢ় নেতৃত্ব দিয়ে প্রায় সব সেক্টরে সাফল্য আনেন। দেশের অর্থনীতির ওপর থেকে দুর্যোগের মেঘ কেটে যায়। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পায়, রিজার্ভ বেড়ে যায় এবং অর্থনৈতিক সেক্টরে সোনালি সূর্যের হাসি দেখা দেয়। কূটনীতিতে তিনি অভাবনীয় সাফল্য দেখান এবং জনগণের ভোটের অধিকার সুনিশ্চিতে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে নিয়ে আসেন। এ অবস্থায় কেউ কেউ ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা পদ থেকে সরিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে পুতুল হিসেবে বসানোর ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। গত আড়াই মাসে জুডিশিলাল ক্যু, সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন, আনসার দিয়ে সচিবালয় ঘেরাও, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা, পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় তারই ধারাবাহিকতায় হঠাৎ করে ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্টের কাছে নেই’ কার্ড ছুড়েছেন। দু’দিন থেকে ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগ করেননি’ তথ্য সম্বলিত গুজব নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় চলছে। কিছু গণমাধ্যম এই ‘ফেইক তথ্য’ লুফে নিয়ে ফলাও করে প্রচার করছে। অথচ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি মীমাংসিত এবং এ বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন’। তারপরও এ ইস্যুতে বিতর্ক জিইয়ে রাখা হচ্ছে এবং সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি গোটা বিশ্ব যখন একাট্টা বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তখন ইউনূসকে প্রেসিডেন্ট করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রচারণার নেপথ্যে কারা কাজ করছেন? প্রশ্ন হলো প্রেসিডেন্ট যেখানে বলছেন মীমাংসিত ইস্যু তখন সেটা নিয়ে হঠাৎ বিতর্ক সৃষ্টির নেপথ্যের রহস্য কি? ফ্যাসিস্ট হাসিনার দেশীয় এজেন্টরা কি চাচ্ছেন?

অপ্রিয় হলেও সত্য যে, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে গণহত্যা করায় দেশে আওয়ামী লীগের জনভিত্তি ধ্বংস হয়ে গেছে। দলটির সাংগঠনিকভাবে প্রকাশ্যে সমাবেশ দূরের কথা ঘরের ভেতরেও সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করার মতো অবস্থায় নেই। অথচ হাজারো জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলার পরও বিএনপি মাঠে ছিল। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দলটি একের পর এক কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। এমনকি জামায়াতের ওপর ১৫ বছর সুনামি চালানো এবং নির্বাচন কমিশনে দলটির নিবন্ধন বাতিল এমনকি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও দলটি মাঠে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সে অবস্থা নেই। ভারতের সহায়তায় ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে দলটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। দেশেও রয়েছে শত শত কোটি টাকা। গ্রেফতার অভিযানে আওয়ামী লীগ নেতাদের যার বাসায় হানা দেয়া হয় সেখানে পায় টাকার বস্তা। আবার সজীব ওয়াজেদ জয় প্রায় আড়াই কোটি টাকায় যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন। মার্কিন নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন ডিসির প্রভাবশালী লবিং ফার্ম ‘স্ট্রেক গ্লোবাল ডিপ্লোম্যাসিকে’ নিয়োগ করেছেন। দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা এই লুটের টাকা খরচ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ইস্যুতে গুজব ছড়াচ্ছে। অথচ ভারত ইতোমধ্যে বুঝে গেছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার। হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। যেকোনো সময় বাংলাদেশ ‘বন্দি বিনিময় চুক্তির আলোকে’ তাকে ফেরত চাইতে পারে। ফলে হাসিনা ভারতের ‘গলার কাঁটা’ হয়ে গেছেন। ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট দিয়েই তাকে অন্য কোনো দেশে পাঠাতে পারলে দিল্লির গলার কাঁটামুক্ত হয়। সেই ভারতে আওয়ামী লীগের নেতাদের সমাবেশ করতে দেবে?

হাসিনা পালানোর পর থেকে কিছু গণমাধ্যম ও কিছু ব্যক্তি দিল্লির নীলনকশা বাস্তবায়নে নানা ফন্দিফিকির প্রচার করছে। তাদের এই ফাঁদে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাধারণ মানুষকে পা দেয়া যাবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও তারা দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠা, বুদ্ধিমত্তা, মেধা, যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। বয়স কম, অভিজ্ঞতা কম কিন্তু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিসারী চিন্তা-ভাবনা, উদ্যম ও সততা তাদের সফলতার পথ দেখাচ্ছে। ‘শেখ মুজিব জাতির পিতা নয়’ বক্তব্য দিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সত্যের সন্ধানে গোটা জাতিকে ধাবিত করেছেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক আওয়ামী গুজব ফাঁদে পা দিয়েছেন। দু’জন সমম্বয়ক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আগরতলায় একটা সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ প্রবাসী সরকার ঘোষণা দিয়ে এ দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করতে চায়’। বাস্তবতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের সে সুযোগ নেই। ভারত নিজেদের স্বার্থে ইতোমধ্যেই পলাতক নেতাদের টাইট দেয়া শুরু করেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যে কয়েকজন সমন্বয়ক উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন; তারা তারুণ্যের সাফল্য দেখাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টার কর্মতৎপরতা নিয়ে বির্তক থাকলেও তরুণ উপদেষ্টাদের দৃঢ়তা বেশ প্রখর। অন্তর্বর্তী সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে এবং গণহত্যাকারী হাসিনার দল সুবিধা পায় শিক্ষার্থীদের তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা উচিত নয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

খবরে প্রকাশ, একজন সিনিয়র সাংবাদিককে প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই।’ এই বক্তব্য তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাসছে। আবার এর আগে প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন’। সেটাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। এ নিয়ে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট মিথ্যা বলছেন এবং তিনি প্রেসিডেন্ট পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন।’ বিশিষ্ট রাজনীতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মাজহার বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনকে এতদিনেও অপসারণ না করাটা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। তাকে অনেক আগেই অপসারণ করা উচিত ছিল।’ প্রেসিডেন্টকে অপসারণ নিয়ে নানাজন নানা বক্তব্য দিচ্ছেন। পরিচিত সাংবাদিকদের কাছে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন নাকি জানিয়েছেন ‘তিনি আর বঙ্গভবনে থাকতে চাচ্ছেন না’। এ ক্ষেত্রে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেয়া সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজের মতো ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।

ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ১৫ বছর হাসিনা রেজিমকে ক্ষমতায় রাখলেও দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বন্ধুত্ব অপরিহার্য। ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর পর দীর্ঘ আড়াই মাসে দিল্লি হাসিনার কথায় কয়েক দফা বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতার কার্ড ছুড়লেও তা ভণ্ডুল হয়ে গেছে। ভারত বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হাসিনা এখন ডাস্টবিনের ভাগাড়। তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অর্থ ময়লা আবর্জনায় হাত নষ্ট করা। নিজেদের স্বার্থে ঢাকার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা অপরিহার্র্য। ইতোমধ্যেই গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে। এরপর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হবে। সেখানে ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। শাপলা চত্বরে রাতের আঁধারে গণহত্যা চালিয়ে কয়েকশ’ নিরীহ শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। সে বিচার শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। চীন নতুন করে ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দিয়ে সংকটের সৃষ্টি করছে। ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্মানিত বন্ধু। তাকে ঘাটানো যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবে নেবে না। আবার চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একে অপরের জন্য পরিপূরক। কাজেই ভারত ড. ইউনূসকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে হাসিনাকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে না। যার কারণে আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে গিয়ে ভারতে জায়গা পেলেও তাদের ‘লো প্রফাইলে’ চলাফেরার নির্দেশনা দেয়া হয়। এখন সেনাপ্রধানের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। হাসিনা রেজিমে সেনা-পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবিতে চাকরি করে যারা বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেন, হাসিনার অন্যায় আদের্শ নির্দেশ পালন করে নানা অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন তাদের পর্যায়ক্রমে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ যখন দানবীয় কায়দায় পৈশাচিকভাবে গণহত্যা চালিয়েছে তখন সেনাবাহিনী হাসিনার অবৈধ নির্দেশ মানেননি। ৫ আগস্ট সাহসী ভূমিকার জন্য জেনারেল ওয়াকার উজ জামান শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন। সেনাপ্রধানের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা বর্তমান আওয়ামী গুজবের ডালপালাকে সমূলে বিনষ্ট করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ৫ আগস্ট টেলিভিশনে তার বক্তব্য শোনার জন্য মানুষ উন্মুখ হয়ে ছিল। তার বক্তব্য শোনার পর মানুষ উল্লাসে রাস্তায় নেমে এসেছে। মিষ্টি বিতরণ করেছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূস সাফল্য দেখিয়েছেন। তার নেতৃতে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল অবস্থায় ফেলতে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ব্যাপারে তিনি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d