International

হিজাব নিয়ে কঠোরতা অবসানের প্রতিশ্রুতি দিলেন ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট

ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ঘোষণা করেছেন, নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরা নিয়ে আর ‘বিরক্ত’ করবে না নৈতিকতা পুলিশ। সোমবার রাজধানী তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন। তার এ মন্তব্য আসে এমন সময় আসলো, যখন জাতিসংঘ কয়েকদিন আগে সতর্ক করে বলেছে, নারীদের পোশাক নীতির লঙ্ঘনের জন্য এখনও সহিংস শাস্তির শিকার হতে হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের এই বক্তব্য মাশা আমিনির মৃত্যুর দ্বিতীয় বার্ষিকীতে আসলো। ২২ বছর বয়সী ইরানি এই নারী সঠিকভাবে হিজাব না পরার কারণে ইরানের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল, এবং পরবর্তীতে পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনা দুই বছর আগে ইরানে বিশাল বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল। জাতিসংঘের মতে, ইরান সেই সময় থেকে নারীদের অধিকারকে সীমিত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং আন্দোলন দমনের জন্য ‘আগ্রাসী প্রচেষ্টা’ চালিয়ে যাচ্ছে।  কিন্তু প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেছেন, নৈতিকতা পুলিশের আর নারীদের সাথে সরাসরি সংঘর্ষের কোনো প্রয়োজন নেই। সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর পেজেশকিয়ান নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। তাকে একজন সংস্কারপন্থী নেতা হিসেবে ধরা হচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করা হয় এবং পরে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

একজন নারী সাংবাদিক সংবাদ সম্মেলনে পেজেশকিয়ানের কাছে জানতে চান, তিনি পুলিশ ভ্যান এড়িয়ে এখানে আসার জন্য বেশ কয়েকটি রাস্তা বদল করতে বাধ্য হয়েছেন। ওই সাংবাদিক তার হিজাব পরা থাকলেও কিছু চুল দেখা যাচ্ছিল। পেজেশকিয়ান যখন জিজ্ঞেস করেন, পুলিশ এখনও রাস্তায় আছে কি না। তখন সাংবাদিকটি নিশ্চিত করেন, নৈতিকতা পুলিশ এখনও কার্যক্রম চালাচ্ছে। উত্তরে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘তাদের (নারীদের) আর বিরক্ত করা উচিত নয়, আমি এ বিষয়টি দেখব।’

জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি পেজেশকিয়ানের প্রথম সংবাদ সম্মেলন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বাধ্যতামূলক হিজাব পরার জন্য আর নারীদের পুলিশ টহল দিয়ে হয়রানি করা হবে না।

পেজেশকিয়ান ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের কঠোর নীতির কিছু অংশ শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মূলত ২০২২ সালে নারীদের নেতৃত্বে সারা দেশে হওয়া সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর থেকে ইরান সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি বাড়িয়ে দেয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম উদ্যোগগুলোর মধ্যে একটি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button