হীরা কীভাবে গোলাপি হয়?
হীরা এমনিতেই দামি ও দুর্লভ। এবার যদি তা হয় গোলাপি, তবে তো কথাই নেই। দাম ও চাহিদা বেড়ে যায় অনেক গুণ। তবে হীরা কীভাবে গোলাপি হয় সে নিয়ে অনেকের মনেই আছে প্রশ্ন। একদল বিশ্লেষক অবশ্য বলছেন, বিশ্বের বেশির ভাগ গোলাপি হীরা অতিকায় মহাদেশ বা সুপারকন্টিনেন্ট নুনার বিচ্ছেদ থেকে উদ্ভূত হয়।
ওই গবেষকদের মতে, পৃথিবীর অভ্যন্তরের প্রচণ্ড চাপে হীরার স্ফটিক জালি বিকৃত হলে গোলাপি হীরা উদ্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শক্তিশালী চাপের কারণে হীরার সাধারণ আলোক প্রতিফলনের পরিবর্তন আসে। অতিকায় মহাদেশ নুনা কলম্বিয়া ও হাডসনল্যান্ড নামেও পরিচিত। ২৫০ কোটি থেকে ১৬০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর প্রাচীন সুপার মহাদেশ হিসেবে নুনা টিকে ছিল। এই অতিকায় মহাদেশের অংশবিশেষ এখনকার ভারতের পূর্ব উপকূল ও পশ্চিম উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পশ্চিম কানাডার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
গবেষকেরা বলছেন, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি গোলাপি হীরা পৃথিবীর সুপার মহাদেশ নুনা ভেঙে যাওয়ার কারণে গঠিত হতে পারে। গবেষকেরা নেচার কমিউনিকেশন সাময়িকীতে হীরা তৈরি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।
গবেষকেরা হীরার জন্মরহস্য উন্মোচনে যেসব অঞ্চলে পুরোনো ফাটল আছে, সেখানে অনুসন্ধান করেন। ধারণা করা হয় ভূপৃষ্ঠে কার্বন পরমাণু নরম ও সরল আকৃতির গ্রাফাইট গঠন করে। ভূপৃষ্ঠের বেশ অভ্যন্তরে চরম পরিস্থিতিতে কার্বন কঠিন আকরে পরিণত হয়। এসব আকর থেকে হীরক খণ্ডগুলো দ্রুততার সঙ্গে ম্যাগমাসের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। পৃষ্ঠের কাছাকাছি এসে বিভিন্ন গলিত উপাদান দৃঢ় আকার গঠন করে, যা কিম্বারলাইট পাইপ নামে পরিচিত। বেশির ভাগ হীরা এই পাইপ থেকে পাওয়া যায়।