Hot

হেলিকপ্টার থেকে ডলার ফেলার পরই জাহাজ থেকে নেমে পড়ে সোমালি নৌদস্যুরা: মুক্ত ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ

সোমালিয়ার নৌদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ২৩ নাবিকসহ মুক্তি পেয়েছেন। বাংলাদেশে সময় শনিবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে এ খবর নিশ্চিত করেছে জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ। জানা গেছে হেলিকপ্টার থেকে জাহাজে ডলার ফেলার পরই নাবিকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে কত ডলার মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

গত ১২ মার্চ বাংলাদেশি জাহাজটি ছিনতাই করে সোমালিয়ার নৌদস্যুরা। এরপর তারা জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায়। নিজ দেশের উপকূলে নেওয়ার নয় দিনের মাথায় দস্যুরা মুক্তিপণের জন্য জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। নানা পর্যায়ে দর-কষাকষির পর দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছছিল বলে ঈদের আগেই আভাস দিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ।

জানা গেছে, মুক্তিপণের ডলার বুঝে পাওয়ার পর দস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে পড়ে। এরপর মুক্তির আনন্দ নিয়ে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দস্যু কবলিত এলাকা থেকে বন্দরের উদ্দেশে চলতে শুরু করে। আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠা নাবিকেরা সেজদায় অবনত হয়ে মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া আদায় করেন। মুক্তির সুসংবাদ জানিয়ে দেন দেশে অপেক্ষায় থাকা বাবা মা স্ত্রী স্বজনদের। সব নাবিকসহ জাহাজটি মুক্তি পাওয়ার কথা জানিয়ে কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেছেন, জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে।

জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে দস্যুদের কবলে পড়েছিল। এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারী অস্ত্রধারী দস্যুদের কবল থেকে ২৩ নাবিকের অক্ষত অবস্থায় মুক্তির খবরে তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরে পৌঁছার পরে তাদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হবে। জাহাজে থাকা নাবিকেরা হলেন- জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো . আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুর উদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।

এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরবসাগরে সোমালিয়ান দস্যুদের কবলে পড়েছিল একই প্রতিষ্ঠানের আরেকটি জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button