Hot

১০ বছরে দেশে এসেছে ৩৩ হাজার প্রবাসীর মরদেহ

ভাগ্য বদলানোর আশায় প্রতিবছর কয়েক লাখ প্রবাসী বিদেশি পাড়ি জমায়। সুস্থ শরীরে বিদেশে গেলেও প্রত্যেক মাসে কয়েকশ’ প্রবাসী লাশ হয়ে দেশে ফিরেন। আর বছর শেষে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় কয়েক হাজারে। গত বছরে ৪ হাজার ৫৫২ জন শ্রমিক লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের বার্ষিক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে। আর গত ১০ বছরে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ৩৩ হাজার ৯৯১ জন প্রবাসী শ্রমিক। 
 
এদিকে শুধু গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ৩৪৮ প্রবাসী লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্ধরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক দেবব্রত ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি মরদেহ আসে। মৃতদের সঙ্গে আসা নথিপত্র অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি প্রবাসী মারা যান মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত (ব্রেইন স্ট্রোক) কারণে। এদের একটা বড় অংশই মধ্যবসয়ী কিংবা তরুণ। এ ছাড়াও হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা কিংবা প্রতিপক্ষের হাতেও খুন হন বাংলাদেশিরা।

তবে তরুণ কিংবা মধ্যবয়সে কেন এতো বিপুল সংখ্যক প্রবাসী স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুসন্ধান হয়নি। প্রবাসী বাংলাদেশি, মৃতদের স্বজন ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য মূলত মরু আবহাওয়ার দেশ। প্রচণ্ড গরমে প্রতিকূল পরিবেশে অদক্ষ এই বাংলাদেশিরা ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকেন। একদিকে প্রতিকূল পরিবেশ, অন্যদিকে অমানুষিক পরিশ্রম, ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে থাকা, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং সব মিলিয়ে মানসিক চাপের কারণেই সাধারণত স্ট্রোক বা হৃদরাগের মতো ঘটনা ঘটে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ৪ হাজার ৫৫২জন, ২০২২ সালে ৩ হাজার ৯০৪জন, ২০২১ সালে ৩ হাজার ৮১৮ জন, ২০২০ সালে ৩ হাজার ১৯ জন ও ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৩৪ জন, ২০১৮ সালে  ৩ হাজার ৫৭ জন, ২০১৭ সালে ২ হাজার ৯১৯ জন, ২০১৬ সালে ২ হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮৩১ এবং ২০১৪ সালে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ২ হাজার ৮৭২ জন। গত ২০১৪ হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ৩৩ হাজার ৯৯১ জন প্রবাসী শ্রমিক।

প্রবাসীদের মরদেহের সঙ্গে যে নথিপত্র আসে সে অনুযায়ী মৃত্যুর কারণ লিখে রাখা হয় বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কে। কীভাবে এতো প্রবাসী মারা যাচ্ছে সেটা বোঝার জন্য ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আসা ৩০৭ জন প্রবাসীর লাশের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করেন তারা। 

এতে দেখা গেছে, ১৭৬ জনই (৫৬ শতাংশ) মারা গেছেন স্ট্রোকে যারা তরুণ কিংবা মধ্যবয়সী। এরপর ৬২ জনের (২০ শতাংশ) মৃত্যুর কারণ হৃদরোগে আক্রান্ত বা স্বাভাবিক মৃত্যু। কর্মক্ষেত্রে বা বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৫৭ জন (১৮ শতাংশ)। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১২ জন (৪ শতাংশ)। আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন। বাকি ২জন খুন। শুধু এক মাস নয়, গত ১৪ বছরের বিভিন্ন সময়ের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ একইরকম তথ্য পাওয়া গেছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d