Bangladesh

১০ বছরে বিএসএফের হাতে নিহত ৩০৫ বাংলাদেশী

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির তথ্য

গত ১০ বছরে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে কমপক্ষে ৩০৫ জন বাংলাদেশী নিহত এবং অন্তত ২৮২ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং সংগৃহীত তথ্য থেকে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) গতকাল বিএসএফের এ বর্বরতার কথা জানিয়েছে।

গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, পঞ্চগড়ের ভিতরগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মো: আল আমিন (৩৬) নামে এক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। নিহত আল আমিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাতপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় সীমান্তে ৭৪৪ নম্বর মেইন পিলারের ৭ নম্বর সাব-পিলার-সংলগ্ন এলাকার কাঁটাতারের বেড়ার লিংক রোডসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে ৬ মার্চ দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভারতের খাসিয়াদের হামলায় শাহেদ মিয়া (২৫) নামে এক বাংলাদেশী যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত শাহেদ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার মঙ্গলপুর গ্রামের মোশাহিদ মিয়ার ছেলে। হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে সীমান্তে বিএসএফের হাতে কমপক্ষে ৩০৫ বাংলাদেশী নিহত এবং অন্তত ২৮২ জন আহত হয়েছেন। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক শুধু ২০২৪ সালে ৫৭টি হামলার ঘটনায় ২৬ জন বাংলাদেশী নিহত, ২৫ জন আহত, ৪৭ জন গুলিবিদ্ধ এবং ১৫৮ জন গ্রেফতার হয়েছেন। একইসময়ে সীমান্তে ৯ বাংলাদেশীর লাশ পাওয়া গেছে যারা ভারতীয় নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় নিহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের ১৫টি হামলার ঘটনায় চারজন বাংলাদেশী নিহত, ১০ জন আহত, পাঁচজন গুলিবিদ্ধ ও ১৫ জন গ্রেফতার হয়েছেন। এ সময় সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় তিনজন বাংলাদেশী নিহত হন।

বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, এসব ঘটনা সীমান্তের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নাজুক পরিস্থিতি নির্দেশ করে। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই দুঃখজনক ঘটনাগুলো উদ্বেগজনক হারে বছরের পর বছর ধরে ঘটছে। তারা আরো বলেন, সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অন্যতম স্পর্শকাতর ইস্যু। দুই দেশের সীমান্তে প্রায়ই বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যার ঘটনা ঘটে, যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অধিকাংশ সময়ই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল যা সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ভাটা পড়েছে। উভয় সরকারই সীমান্তে বেসামরিক জীবন রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলে আসছে। বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। আমরা উভয় দেশের কর্তৃপক্ষকে এই সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে গঠনমূলক সংলাপ এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সীমান্তের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে শূন্যে নিয়ে আসার বিষয়ে আহবান জানাই।

বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি বাংলাদেশ ও ভারত সরকারকে আল আমিন, শাহেদ মিয়া, কিশোরী স্বর্ণা দাস ও ফেলানীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ পূর্ববর্তী সব সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদেরকে শাস্তির আওতায় আনার আহবান জানিয়েছে। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকায় সব সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলোকে মেনে চলতে দুই দেশের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d