১২ দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক নির্ধারণ ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি ১২টি দেশের উদ্দেশ্যে একাধিক শুল্কপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা তাদের পণ্যের উপর বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি ১২টি দেশের উদ্দেশ্যে একাধিক শুল্কপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা তাদের পণ্যের উপর বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, এই প্রস্তাবগুলো ‘গ্রহণ করুন অথবা ছেড়ে দিন’ ভিত্তিতে তৈরি। আগামী সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করা হবে।
নিউ জার্সিতে ভ্রমণের সময় প্রেসিডেন্সিয়াল বিমানে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প জানান, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাম এখনই প্রকাশ করা হবে না। তবে সোমবার তা জানানো হবে।
ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, তিনি আশা করেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ছুটির দিন শুক্রবারে প্রথম ব্যাচের চিঠি পাঠানো যাবে। কিন্তু এখন সেই পরিকল্পনা বদলে সোমবার নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এপ্রিলে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, বেশিরভাগ দেশের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ বেস ট্যারিফ এবং কিছু ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে চুক্তি আলোচনা চলমান রাখার সুযোগ দিতে অন্যান্য শুল্ক হার ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়। এই সময়সীমা ৯ জুলাই শেষ হবে।
ট্রাম্প শুক্রবার জানান, শুল্কের হার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং অধিকাংশ শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। তিনি বলেন, ‘আমি কিছু চিঠিতে স্বাক্ষর করেছি এবং সোমবার সেগুলো প্রকাশিত হবে। সম্ভবত তা বারোটি। বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ, বিভিন্ন পরিমাণ শুল্ক।’
প্রথম দিকে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল, তারা বিভিন্ন দেশের সাথে শুল্ক বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে। কিন্তু জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বড় বাণিজ্য অংশীদারদের সাথে আলোচনায় বারবার বাধা আসায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলোচনায় আগ্রহ হারান এবং তার ভাষায়, ‘চিঠিগুলি আরো ভালো … চিঠি পাঠানো অনেক সহজ।’
ট্রাম্প জানাননি ৯ জুলাইয়ের সময়সীমার আগে কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে কিনা।
হোয়াইট হাউসের কৌশলের পরিবর্তন বাণিজ্য নীতিতে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যা শুধু শুল্ক নয়; বরং কৃষি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অন্যান্য অ-শুল্ক বাধাও অন্তর্ভুক্ত করছে। এর সাথে দ্রুত সময়সীমার মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করার চ্যালেঞ্জও যুক্ত হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে অতীতে অধিকাংশ বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হতে বহু বছর সময় নিয়েছে।
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দু’টি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাথে একটি চুক্তিতে মে মাসে ১০ শতাংশ সুদহার বজায় রাখা হয়েছে। এতে অটোমোবাইল ও বিমান ইঞ্জিনসহ কিছু খাতে অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে, ভিয়েতনামের সাথে একটি চুক্তিতে অনেক পণ্যের উপর শুল্ক পূর্বঘোষিত ৪৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে এবং কিছু মার্কিন পণ্য ভিয়েতনামে শুল্কমুক্তভাবে প্রবেশের সুযোগ পাবে।
ভারতের সাথে প্রত্যাশিত একটি চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে বাণিজ্য আলোচনায় তারা কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে পারেননি। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন শুল্ক বৃদ্ধির ঝুঁকি এড়াতে স্থিতাবস্থা রক্ষার চেষ্টা করছে।