Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

১৬ বছর পর হারানো ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালন

  • সশস্ত্র বাহিনীকে কোণঠাসা রেখেই তিন প্রহসনের নির্বাচন
  • এবারের নির্বাচনে মাঠে কার্যকর উপস্থিতি
  • আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক সেনা মোতায়েন চাইবে ইসি
  • সশস্ত্র বাহিনী সুষ্ঠু নির্বাচনের সহায়ক হবে : ইসি আব্দুর রহমানেল মাছউদ
  • এ বাহিনীকে কার্যকর ভূমিকায় রাখলে ভালো নির্বাচন সম্ভব : বেগম জেসমিন টুলি

‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী দেশবাসীর আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। দেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোও বিশ্বাস করে, নির্বাচনে সেনাবাহিনী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে তা সুষ্ঠু নির্বাচনের সহায়ক হবে। এ জন্য আমরা ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২’ সংশোধন করে  আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে আবারও অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। এর ফলে নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে কারো নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে না।

গত সোমবার কালের কণ্ঠকে এই কথাগুলো বলেন, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার মন্তব্য, বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে সেনাবাহিনীর যে অবস্থান তাতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীকেই প্রধান ভরসার স্থল হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গতকাল অফিসার অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এই মর্মে জানান যে এরই মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে এবং সরকার তা অনুষ্ঠানের বিষয়ে বদ্ধপরিকর। তিনি সব সেনা সদস্যকে আইন অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন।

এর আগে  গত ৩ জুলাই মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল (স্টাফ কর্নেল) মো. শফিকুল ইসলাম ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পেলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী।

নির্বাচন কমিশন গত ১১ আগস্ট আরপিও সংশোধনের জন্য যেসব প্রস্তাব অনুমোদন করে তাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবটিও রয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি অনুসারে এই প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়নের পথে।

এর ফলে নির্বাচনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পুলিশ কর্মকর্তাদের মতোই নির্বাচনী অপরাধের জন্য কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর সশস্ত্র বাহিনী এই ক্ষমতাটি আবারও ফিরে পেতে যাচ্ছে।

২০০১ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরপিও সংশোধন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগগুলো বা সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আরপিওর ৮৭ অনুচ্ছেদে এই বিধান যুক্ত করা হয় যে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব পালনকালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো সদস্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা না হয়েও নির্বাচনী অপরাধের জন্য কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবেন। ২০০১ সালে এই বিধান অধ্যাদেশের মাধ্যমে আরপিওতে যুক্ত করা হয়।

শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই নয়, পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইনগুলোতেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তুর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার ওই সংশোধনী অধ্যাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ বাদ দেয়। এর ফলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি, কোস্ট গার্ডের যে ক্ষমতা তা সশস্ত্র বাহিনীর থাকে না।

২০২২ সালের ১২ জুন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক সংলাপে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার আলোচিত এক মন্তব্যে আওয়ামী লীগ সরকারের মত প্রতিফলিত হয়। তিনি বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে সেনাবাহিনীর একেবারেই প্রয়োজন নেই। নির্বাচন পরিচালনায় তারা কাজে আসবে বলে মনে হয় না।’ কে এম নুরুল হুদা ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করাসহ প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

এ বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব বেগম জেসমিন টুলি এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ ভোটাররাও মনে করে, সে সময় ‘যেমন ইচ্ছা তেমন নির্বাচন’ কৌশল বাস্তবায়নের জন্যই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সরকার সেনাবাহিনীকে নির্বাচনে কার্যকর ভূমিকায় রাখতে চায়নি। কিন্তু নির্বাচনব্যবস্থা কমিশন মনে করে, নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে কার্যকর ভূমিকায় থাকলে ভেটাররা নিরাপদ বোধ করবে এবং এর ফলে ভালো নির্বাচন সম্ভব।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক সেনা মোতায়েনে আগ্রহী। গত রবিবার বিএনপির একটি প্রতিনিধিদলের কাছে তিনি এই আগ্রহ ব্যাক্ত করেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম  চৌধুরী গত ১১ আগস্ট সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে ৮০ হাজারের বেশি সেনাসদস্য মোতায়েন করা হবে।

আরপিও সংশোধনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গত সোমবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি নিয়ে এখনো কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুত এটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে।’

নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ : সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীকে কোণঠাসা করে রেখেই প্রহসনমূলক তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের বিজয় নিশ্চিত করেছিল। নির্বাচনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পুলিশ কর্মকর্তাদের মতোই নির্বাচনী অপরাধের জন্য কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবেন—এই বিধান সে সময় ক্ষমতাসীনরা মেনে নিতে পারেনি। সশস্ত্র বাহিনীর ওই ক্ষমতাকে তারা তাদের ভোট লুটের অন্তরায় মনে করে এবং ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২’ সংশোধন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগগুলোকে (সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী) বাদ দেয়। এর ফলে নির্বাচনী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে একজন আনসার সদস্যের যে ক্ষমতা ছিল সেনা সদস্যদের তা ছিল না। স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনেও সেনাবাহিনীকে একইভাবে ক্ষমতাহীন করে রাখা হয়। শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনগুলোতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩১ ধারায় এবং সেনা বিধিমালা ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েনেও গড়িমসি ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের। এই পর্যবেক্ষণ নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, ‘২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনী নিয়োগের জন্য সরকারকে চিঠি দেয়। কিন্তু সেনা নিয়োগ তো দূরের কথা সরকার সেই চিঠির জবাব পর্যন্ত দেয়নি।’ এ ছাড়া ২০১৫ সালের তিন সিটির নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন চার দিনের জন্য সেনা নিয়োগের ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। পরে জানানো হয়, সেনাবাহিনীকে সেনানিবাসেই রিজার্ভ অবস্থায় রাখা হয়েছে।

সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তাদের অনেকেই তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলে আসছেন, নির্বাচনের দায়িত্ব পালনে ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩১ ধারায় এবং সেনা বিধিমালা ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নয়। এ ব্যবস্থায় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটদের রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতাকে বিঘ্নিত করতে পারে। এর ফলে নির্বাচনপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা কমে যেতে পারে।

২০১৭ সালে কে এম নুরুল হুদা কমিশনের নির্বাচনী সংলাপে যোগ দিয়ে সাবেক কয়েকজন নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে থাকলে তাদের দায়িত্ব পালন সঠিক হবে না। তবে তাঁদের এই মতামত সে সময় আমলে  নেওয়া হয়নি।

এর আগে ২০১১ সালে ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় আবারও সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখে। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই সংলাপে আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দলগুলো জানিয়ে দেয়, এ প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়।

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনমূলক দশম সংসদ নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩১ ধারায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। তবে নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদা ছাড়া সেনাবাহিনীর ভোটকেন্দ্রের ভেতর কিংবা ভোট গণনা কক্ষে কোনো প্রকার দায়িত্ব গ্রহণ করা নিষিদ্ধ রাখা হয়। কাজী রকিবের কমিশন ২০১৫ সালে ঢাকার দুই সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রথমে জানানো হয়, মহানগরীর ভেতর সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকবে। রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশ পাওয়ামাত্র তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেবে। সেনা সদস্যদের সঙ্গে ১৬ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। কিন্তু পরে জানানো হয়, সেনাবাহিনী মূলত সেনানিবাসের অভ্যন্তরে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে অবস্থান করবে এবং রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে। কিন্তু ব্যাপক অনিয়মের ওই ভোটে রিটার্নিং অফিসাররা সে ধরনের কোনো অনুরোধ করেননি বা সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা হয়নি।

তার আগে ২০১১ সালের অক্টোবরে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের তৎকালীন এ টি এম শামসুল হুদার নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দুই দিন আগে সেনা নিয়োগ চেয়ে সরকারের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চিঠি দিয়েছিল। এ বিষয়ে সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জে এমন কিছু হয়নি যে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন ছিল। ওই ঘটনায় সে সময় সংবিধান প্রদত্ত নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিএনপির পক্ষে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করে প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশন উভয়ই সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। এ জন্য তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এতে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। আর নির্বাচন কমিশনও সরকারের আজ্ঞাবহ। এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন কেন সেনা মোতায়েন হলো না, এর জবাব চেয়ে সরকারের কাছে চিঠি লেখে। কিন্তু জবাব মেলেনি। সে সময় ওই নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদনও হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ১২০, ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশনকে সহায়তা করতে বাধ্য। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কমিশন সেনা মোতায়েন চেয়েও পায়নি।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের আরেক সদস্য ড. মো. আবদুল আলীম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনব্যবস্থায় সশস্ত্র বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। আজ যে ছবিসহ ভোটার তালিকা, এনআইডি এগুলো সশস্ত্র বাহিনীরই অবদান। সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া এই বিশাল কাজ করা সম্ভব ছিল না। দেশে যে কটি জাতীয় নির্বাচন অনেকাংশে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে সেগুলোতে সশস্ত্র বাহিনীর কার্যকর সহযোগিতা ছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তৎকালীন সরকার সেনাবাহিনীকে কার্যকরভাবে নির্বাচনী দায়িত্বে রাখতে চায়নি। কারণ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালনের সময় নির্বাচনী অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশের মতো কোনো দলের নেতাকর্মীদের চেনেন না। তাঁরা নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীনভাবে দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীর  এই অবস্থান ভোট লুটের অন্তরায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি দেশবাসীর আস্থা বেশি। নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী মাঠে থাকলে মানুষ স্বস্তি পাবে। আর এবার সশস্ত্র বাহিনী থাকবে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা নিয়ে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot toto