১৮৩১ সালে সূর্যের নীল বর্ণ রহস্যের সমাধান করলেন বিজ্ঞানীরা
১৮৩১ সালে পৃথিবীর আকাশে সূর্যের নীল বর্ণ ধারণ করার দীর্ঘ রহস্যের সমাধান করেছেন বিজ্ঞানীরা। স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি নতুন গবেষণায় জানিয়েছেন, রাশিয়া এবং জাপানের মধ্যে বিতর্কিত সিমুশির দ্বীপের জাভারিৎসকি আগ্নেয়গিরির ভয়াবহ বিস্ফোরণ এর মূল কারণ।
১৮৩১ সালে এই আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে প্রচুর পরিমাণে সালফার ডাইঅক্সাইড বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা কমে গিয়েছিল এবং অস্বাভাবিক আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, বিস্ফোরণের সময় উৎপন্ন ছাই ও গ্যাস সূর্যের রশ্মি ছড়িয়ে নীল বর্ণের সৃষ্টি করেছিল।
গবেষণাটি সম্প্রতি ‘Proceedings of the National Academy of Sciences (PNAS)’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা বরফের কোর বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিস্ফোরণের সময়কাল এবং এর তীব্রতা নির্ধারণ করতে পেরেছেন। গবেষণার সহলেখক উইল হাচিনসন বলেন, ল্যাবরেটরিতে যখন আগ্নেয়গিরির ছাই ও বরফের কোরের ছাই একসঙ্গে বিশ্লেষণ করছিলাম, তখন এটি ছিল আমাদের জন্য একটি প্রকৃত ‘ইউরেকা মুহূর্ত’।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যতে এমন আরেকটি বড় আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের সম্ভাবনা এক-ষষ্ঠাংশ। এই ধরনের বিস্ফোরণ পৃথিবীর জলবায়ুকে বড় ধরনের পরিবর্তনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। গবেষণার প্রধান লেখক উল্লেখ করেছেন, যদি এমন একটি বিস্ফোরণ এখন ঘটে, তাহলে আমরা ১৮৩১ সালের চেয়ে খুব বেশি প্রস্তুত নই।
১৮১৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার তাম্বোরা পর্বতের ভয়াবহ বিস্ফোরণে সারা পৃথিবী ‘গ্রীষ্মহীন বছর’ এর মুখোমুখি হয়। এই বিস্ফোরণে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস ও ধূলিকণা বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছিল, যা উত্তর গোলার্ধের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমিয়ে দেয়।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, একটি বড় আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। তবে এমন বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট ঠান্ডা জলবায়ু প্রভাব সাময়িক হবে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে পৃথিবী আবার উষ্ণতার দিকে ফিরে যাবে।
এমন গবেষণা আগাম সতর্কতার পাশাপাশি মানবজাতির মহাকাশ ও জলবায়ু পর্যবেক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।