২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বেকারত্ব বাড়বে
- ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং স্থবির উৎপাদনশীলতায় উদ্বেগ
- করোনার পর বাংলাদেশে নারীদের কাজে যোগ দেওয়ার হার বেড়েছে
২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বেকারত্ব বাড়বে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও স্থবির উৎপাদনশীলতা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠবে বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক ট্রেন্ড ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।
সংস্থাটির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির অভিঘাত এখনো শ্রমবাজারে অনুভূত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী তরুণদের বেকারত্বের হার চ্যালেঞ্জ হিসেবেই থেকে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান, শিক্ষা বা প্রশিক্ষণে নেই এমন মানুষের সংখ্যা এখনো অনেক বেশি, বিশেষ করে তরুণ নারীদের মধ্যে। তবে মহামারির পরবর্তী পর্যায়ে বাংলাদেশে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণের হার ২৯ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৪২ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব শ্রেণির মানুষের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার প্রাক-মহামারি পর্যায়ে একই হারে ফেরত যাবে না, বরং এক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকবে। তবে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। তারপরও নারী-পুরুষের ব্যবধান থেকে যাচ্ছে, বিশেষ করে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থানের জন্য এসব বিষয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেকারত্বের হার প্রাক-মহামারি স্তরের নিচে নেমে গেছে। তবে ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বেকারত্ব বাড়বে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও স্থবির উৎপাদনশীলতা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি সত্ত্বেও শ্রমবাজার আশ্চর্যজনকভাবে স্থিতিস্থাপক ছিল। তবে নতুন নতুন ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এসব ঝুঁকি ও সংকট মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সামাজিক ন্যায্যতা প্রচেষ্টার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বাস্তবতা কেবল পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝা যাবে না বলে মনে করছে আইলও। কারণ, শ্রমবাজারে নাজুক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। আইএলওর অনুমান শ্রমবাজারের আভাস ও বিশ্বব্যাপী বেকারত্ব উভয়ই খারাপ দিকে যাচ্ছে।
২০২৪ সালে অতিরিক্ত ২০ লাখ মানুষ বাজারে কাজ খুঁজবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জি-২০ভুক্ত বেশির ভাগ দেশেই মানুষের কর-পরবর্তী আয় কমেছে। মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের জীবনযাত্রার মান কমেছে, যে ক্ষতি দ্রুত পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এছাড়া চাকরির ক্ষেত্রে উচ্চ ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়ে গেছে। ২০২৩ সালে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে চাকরির জোগান চাহিদার ব্যবধানের হার ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ; নিম্ন-আয়ের দেশে যা ২০ দশমিক ৫ শতাংশে উঠেছে। একইভাবে ২০২৩ সালে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ থাকলেও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়বৈষম্যের বিষয়ে। ক্রয়ক্ষমতা সমতার সাপেক্ষে যাদের দৈনিক আয় ৩ দশমিক ৬৫ ডলার, অর্থাৎ যাদের মধ্যম সারির দরিদ্র বলা হয়, এমন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৮৪ লাখ। মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়া সমষ্টিগত চাহিদা বৃদ্ধি ও টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য নেতিবাচক হতে পারে। অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের হার স্থির থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে; ২০২৪ সালে যা ছিল বৈশ্বিক কর্মশক্তির প্রায় ৫৮ শতাংশ।