International

২৪ আগস্ট থেকে ফুকুশিমার শোধিত তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ফেলবে জাপান

আগামী ২৪ আগস্ট ধ্বংসপ্রাপ্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১ মিলিয়ন মেট্রিক টনেরও বেশি শোধিত তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ফেলা শুরু করবে জাপান। জাপান স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে। এই পরিকল্পনাটি জাপান সরকার কর্তৃক দুই বছর আগে অনুমোদন দিয়েছিল। যা টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কম্পানি (টেপকো) দ্বারা পরিচালিত এই প্লান্টটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে স্থানীয় জেলেগোষ্ঠীগুলো এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করছে। যারা তাদের সুনামের ক্ষতি এবং হুমকির আশঙ্কা করছে। চীনও তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা মঙ্গলবার সকালে বলেছেন, ‘আমি টেপকোকে ‘নিউক্লিয়ার রেগুলেশন অথরিটি’-এর অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুযায়ী পানি নিষ্কাশনের জন্য দ্রুত প্রস্তুতি নিতে বলেছি এবং আশা করছি ২৪ আগস্ট থেকে পানি নির্গমন শুরু হবে, যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে।

কিশিদা আরো বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, মাছ ধরা শিল্পের মাধ্যমে যেন তাদের জীবনযাত্রা চালিয়ে যেতে পারে তা নিশ্চিত করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেব আমরা। যদিও এটি কয়েক দশক সময় নেবে। জাপান বলেছে, পানি ছেড়ে দেওয়া নিরাপদ। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা, জুলাই মাসে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে সবুজসংকেত দেয়। তারা তখন জানিয়েছিল, এটি আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে এবং মানুষ ও পরিবেশের ওপর এর প্রভাব ‘নগণ্য।’

কিছু প্রতিবেশী দেশ পরিকল্পনার নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে বেইজিং সবচেয়ে বড় সমালোচক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জুলাইয়ে বলেছিলেন, জাপান স্বার্থপরতা ও অহংকার দেখিয়েছে এবং পানি ছাড়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুরোপুরি পরামর্শ করেনি। চীন ফুকুশিমা এবং রাজধানী টোকিওসহ জাপানের ১০টি এলাকা থেকে সামুদ্রিক খাবার আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।

অন্যান্য এলাকা থেকে সামুদ্রিক খাবার আমদানি অনুমোদিত কিন্তু তেজস্ক্রিয়তা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং প্রমাণ থাকতে হবে যে, তা ওই ১০টি নিষিদ্ধ এলাকার বাইরে উৎপাদিত হয়েছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মীরাও এই পরিকল্পনার প্রতিবাদ করেছেন। যদিও সিউল তার নিজস্ব গবেষণা থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে পানি মুক্তি আন্তর্জাতিক মান পূরণ করে এবং তারা আইএইএ-এর মূল্যায়নকে সম্মান করে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের পারমাণবিক পরীক্ষার সাইট হওয়ায়, তাদের নিজস্ব ইতিহাসের কারণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপের দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে বিভক্ত হয়েছে। ফিজির প্রধানমন্ত্রী, সিটিভেনি রাবুকা সোমবার এক বিবৃতি প্রকাশ করেছেন, তিনি আইএইএ-কে সমর্থন করেছেন। কিন্তু স্বীকার করেছেন, বিষয়টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চলের জন্য বিতর্কিত।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button