Bangladesh

২৪ ঋণ কেলেঙ্কারিতে ৯২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ

সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা চ্যালেঞ্জ: সিপিডি

২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকায়। গত ১৫ বছরে নানা অনিয়মের মাধ্যমে ২৪টি বড় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাংক খাতের অনিয়ম নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ তথ্য তুলে ধরেছে সংস্থাটি।

ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে অর্থনীতির চলমান সংকট ও করণীয় বিষয়ক ব্রিফিংয়ের সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, একটি শ্রেণি ব্যাংকিং খাতকে ব্যবহার করে একের পর এক ঋণ অনিয়ম করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম-কানুনের অভাব নেই। কিন্তু এখন যারা অনিয়ম করে ঋণ নিচ্ছে, তারাই আবার বাংলাদেশ ব্যাংকে নীতিমালা করার জন্য চাপ দেয়। এজন্য শক্তিশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজন।

94d14999fd84b041e1a21f45fa855f7d-61863124ad301

এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, ব্যাংক থেকে যে অর্থ লুট করা হয়েছে, তার কতটা অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে, আর কতটা পাচার হয়েছে? জবাবে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশও করে না। তবে ধারণা করা যায়, এ অর্থের একটি অংশ পাচার হয়েছে, কিছু অংশ হয়তো অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে। সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, সংস্কার পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্থনীতিতে ?সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সহজ কাজ হবে না। কেন না কায়েমি স্বার্থগোষ্ঠী শক্তিশালী এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে।

বর্তমানে ব্যাংক খাত বৈকল্য অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সিপিডি। সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অর্থনীতি ক্রমে ভঙ্গুর থেকে ভঙ্গুরতর হচ্ছে।      

অর্থনীতির চার খাতের মধ্যে ব্যাংক খাত বৈকল্য দশায় পড়েছে। মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়ার ছুটে চলা অব্যাহত রয়েছে, বহিঃখাত পঙ্গুত্বের ভেতরে পড়ছে আর শ্রম খাতে অন্ধত্ব বা স্থবিরতা বিরাজ করছে।

টাকা

সিপিডি বলছে, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন বড় ধরনের চাপ বা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অতীতে অর্থনীতিতে এত ধরনের চাপ কখনো তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক নেতৃত্বের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। এ জন্য বড় ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্থার দরকার। এ ধরনের সংস্কারের জন্য যে রাজনৈতিক ও নির্বাচনব্যবস্থা দরকার, সেটি দেখা যাচ্ছে না। ফলে নির্বাচনের পরও অর্থনীতিতে কোনো সংস্কার হবে কি না, এটি প্রশ্নসাপেক্ষ।

সংস্থাটির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশে বৈষম্য আরও প্রকট হচ্ছে। এতে আমরা আবারও এক দেশে দুই অর্থনীতির পথে চলে যাচ্ছি। অথচ দুই অর্থনীতির বিরুদ্ধেই বঙ্গবন্ধু লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি বলেন, সরকারের যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে তার সব পরিমাণ খরচ হয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পের যে ব্যয় করছে তার পুরোটাই বলা যায় ধারের টাকায়। মধ্য আয়ের ফাঁদ বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, জিডিপির তুলনায় বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়তে থাকায় ঝুঁকি রয়েছে। সেসব দেশ ঋণের ফাঁদে পড়েছে তারা মধ্য আয়ের দেশে উন্নয়ন হওয়ার পরেই হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন মেগা প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয় সিপিডির পক্ষ থেকে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d