Bangladesh

২৫ বছর পর মুক্তি পেলেন ফাঁসির মুখথেকে ফেরা সেই মুক্তিযোদ্ধা

দেবিদ্বারের বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা দীর্ঘ ২৫ বছর পর কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

২০০৮ সালে রাখাল চন্দ্র নাহার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় আটকে যায়।

হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও পরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা পাওয়া কুমিল্লার দেবিদ্বারের বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা দীর্ঘ ২৫ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন। 

রোববার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সত্তরোর্ধ্ব এই বৃদ্ধকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানান সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। 

কারাগার থেকে বেরনোর পর রাখাল চন্দ্রকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবিরসহ সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। 

রাখাল চন্দ্র নাহা দেবিদ্বার উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের মৃত অক্ষয় চন্দ্র নাহার ছেলে। ১৯৯৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জমির বিরোধে হোসেনপুর গ্রামের দীনেশ চন্দ্র দত্তকে হত্যা করা হয়। তিনি রাখালের জেঠাত বোনের স্বামী। এই হত্যা মামলায় আসামি করা হয় রাখাল ও তার ভাই নেপাল চন্দ্র নাহাকে। নেপাল মামলা চলাকালে পলাতক অবস্থায় মারা যান। 

২০০৩ সালে আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০০৮ সালের ৭ এপ্রিল রাত ১১টায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। তখন তার মৃত্যুদণ্ড রদ করার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন।

ফাঁসি কার্যকরের মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে রাত সাড়ে ৯টায় তৎকালীন সেনা প্রধান মঈন ইউ আহমেদের সুপারিশে রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন আহমেদ বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখালের মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফ করেন। 

রোববার বিকালে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, সেদিন রাতে ওয়ারলেসে সেই বার্তা এসেছিল। পরে সাজার আদেশ মৃত্যুদণ্ড থেকে সংশোধিত হয়ে যাবজ্জীবন সাজা হয় ২০০৮ সালের ৩০ জুন। 

২৫ বছর পর মুক্তি পেলেন ফাঁসির মুখ থেকে ফেরা সেই মুক্তিযোদ্ধা

“গত ৩০ জুন তার সাজার মেয়াদ ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে। তার অর্জিত রেয়াত ৫ বছর ৭ মাস ২ দিন।” 

আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, “একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুদণ্ড হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় সব বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ কষ্ট পেয়েছেন। তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ছিলেন না। আমরা কোনোভাবেই বিষয়টি মেনে নিতে পারিনি। তাই বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার ছিলাম। 

“এ ছাড়া রেয়াতসহ রাখাল নাহার মুক্তির সুপারিশ করা হয়েছিলো ২০১৫ সালে। অথচ তখন তিনি মুক্তি পাননি। আজ মুক্তি পেলেন।”

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button