Trending

৬৭ শতাংশ ঋণ বাড়াবে এডিবি

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশে তাদের ঋণ প্রতিশ্রুতি গত বছরের এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার থেকে ৬৭ শতাংশ বাড়িয়ে চলতি বছর দুই বিলিয়ন ডলার করতে পারে।

দীর্ঘ বিলম্বিত প্রকল্পগুলোর ঋণ আংশিক বাতিল করে বাড়তি অর্থায়নের প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে।

গত ফেব্রুয়ারিতে সরকারকে পাঠানো এডিবির পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংস্থাটির যেসব প্রকল্প আছে সেগুলোর আংশিক তহবিল বাতিলের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশকে দেওয়া এডিবির ঋণ প্রতিশ্রুতি আগের বছরের তিন দশমিক চার বিলিয়ন ডলার থেকে কমে গত বছর এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চলতি বছর সরকারকে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।’

পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এডিবি বলেছে, নির্বাচনের সম্ভাবনা ও সরকারের নীতিনির্ধারকদের ক্রমাগত রদবদল বিষয়টি বিবেচনায় নিলে ২০২৫ সাল বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জিং বছর হবে।

কয়েকটি প্রকল্প ও ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অনেক দেরি হচ্ছে। ক্রমাগত অসুবিধা ও সংকটের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে এডিবির ঋণের একটি অংশ ফিরিয়ে নেওয়া হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন করে ঋণ দেওয়া হবে বলেও এতে জানানো হয়।

আরও বলা হয়—এটি এডিবির অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সহায়ক হবে। এটি বাংলাদেশে সরকারি অর্থের আরও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

সাধারণত প্রতি বছর এডিবি সদস্য দেশগুলোর জন্য ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। একবার এডিবি বোর্ড ঋণ অনুমোদন দিলে তা ঋণ প্রতিশ্রুতিতে পরিণত ও বিতরণের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

চলতি বছরের শুরুতে এডিবির ৫২ প্রকল্পে বাংলাদেশের ঋণ ছিল ১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার।

এডিবির ঋণ প্রতিশ্রুতির পর কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে দেশটিকে অবশ্যই কমিটমেন্ট চার্জ পরিশোধ করতে হবে।

এডিবির প্রতিবেদন অনুসারে, ঋণ চুক্তি সইয়ের ৬০ দিন পর থেকে সাধারণ মূলধন সম্পদ (ওসিআর) ঋণের জন্য অপরিশোধিত ঋণের ক্ষেত্রে বছরে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ কমিটমেন্ট চার্জ প্রযোজ্য হয়।

বর্তমান পোর্টফোলিওতে সাত দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলার ওসিআর ঋণের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অবিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দুই দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। এক দশকে কমিটমেন্ট চার্জ হিসেবে মোট ৩০ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

গত বছর কমিটমেন্ট চার্জ হিসেবে বাংলাদেশ এডিবিকে তিন দশমিক ৫৮ মিলিয়ন ডলার দেয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বন্ধ বা বন্ধ হওয়ার কথা ছিল এমন ১৫ ওসিআর ঋণের বিশ্লেষণে দেখা গেছে—তিন দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিপরীতে কমিটমেন্ট চার্জ বাবদ ২৩ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে দীর্ঘ সময় নেওয়ায় ও কম পরিমাণে ঋণ বিতরণের ফলে প্রচুর পরিমাণে কমিটমেন্ট চার্জ আদায় করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অপর কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে তিন দিনের আলোচনায় অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এডিবির ঋণ পোর্টফোলিও রিপোর্ট ও দেশে সেই ঋণ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করেন।

দীর্ঘ বিলম্বে থাকা প্রকল্প

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ২৫৫ মিলিয়ন ডলার প্রাক্কলিত খরচে ‘দ্য গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট’ প্রকল্প অনুমোদন পায়। এডিবির ঋণ ছিল ১৬০ মিলিয়ন ডলার।

পরে সময়সীমা ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়তি খরচ মেটাতে অতিরিক্ত অর্থায়ন অনুমোদন করা হয়। মোট খরচ ২৫৫ মিলিয়ন ডলার থেকে ৯৪ শতাংশ বেড়ে ৪৯৪ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এডিবি এ প্রকল্পের জন্য ঋণের পরিমাণ ৬৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১৬০ মিলিয়ন ডলার থেকে ২৬০ মিলিয়ন ডলার করে।

সময়সীমা ও খরচ বেড়ে যাওয়ার একাধিক কারণ আছে। যেমন—খরচের পরিমাণ কম ধরা, বাস্তবায়নের সময় বাড়ানো, নকশার পরিবর্তন, জমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি সেবা স্থানান্তরে দেরি ও ধীর গতি এবং ঠিকাদারদের অপর্যাপ্ত কাজ এবং করোনা মহামারির প্রভাব।

এডিবির প্রতিবেদনে তিনটি প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে দেখানো হয়েছে যে, দীর্ঘ বিলম্ব ও খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নে কী ধরনের প্রভাব পড়ে।

২০১৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে শেষ করার কথা থাকলেও জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন তিন বছরেরও বেশি দেরি হয়েছিল। একইভাবে, সিভিল ওয়ার্ক চুক্তিগুলো নির্ধারিত সময়ের তুলনায় তিন বছরেরও বেশি সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

দ্বিতীয় উদাহরণ—’পাওয়ার সিস্টেম এফিসেন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ ২০১১ সালের আগস্ট নেওয়া হয়েছিল। এটি শেষ হওয়ার তারিখ ছিল ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর।

অনুমোদিত ঋণের পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন ডলার হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা চারবার সংশোধন করে মোট খরচ তিন শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কাজ শেষ করার তারিখ নির্ধারণ করে সময়সীমা আট বছর বাড়ানো হয়।

তৃতীয় উদাহরণটি—’ঢাকা এনভারনমেন্টলি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’ ২০১৩ সালে অনুমোদিত হয়। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন। এটি এখনো শেষ হয়নি।

এই প্রকল্পে এডিবি ঋণ ২৫০ মিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৩২৮ দশমিক ৮০ মিলিয়ন ডলার করে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d