৬৮ শতাংশ কারখানার বেতন ৩০ শতাংশ কারখানায় বোনাস হয়নি: পোশাক শিল্প
পোশাক শিল্পের ব্যবসায়ী নেতা ও শিল্প পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঈদুল ফিতরের ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও এখনও ৬৮শতাংশ কারখানার বেতন এবং ৩০ শতাংশ কারখানার বোনাস হয়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী আজ সোমবার শেষ দিনে অধিকাংশ কারখানার বোনাস এবং বেতন হয়ে যাবে। অন্যান্য বছরের মতো গার্মেন্টস শ্রমিকদের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি তৈরি হবে না। যদিও শ্রমিক নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, শ্রমিকদের বেতন-বোনাস যথাসময়ে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মালিকরা। তাই শ্রমিকরা চুপচাপ আছে। আজ সোমবারের মধ্যে বেতন-বোনাস না হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। পোশাক শ্রমিকরা রাাস্তায় নামতে পারে।
সূত্র মতে, পোশাক শিল্পের ব্যবসায়ী নেতা ও শিল্প পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঈদুল ফিতরের ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিলেন। শ্রম আইন অনুসারে প্রথম সাত কার্যদিবসের মধ্যেই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হবে মালিকপক্ষকে। পোশাক শিল্পের নেতারা বলছেন, ঈদের ছুটি মাথায় রেখে ছুটির আগেই তারা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে মহাসড়কে যানজট ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে অনেক পোশাক কারখানায় উৎসবকালীন এই ছুটি শুরু হয়েছে গতকাল ৭ এপ্রিল থেকে। যদিও এখনও অধিকাংশ কারখানারই ছুটি হয়নি। শিল্প পুলিশের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমস্যায় পড়তে পারে এমন শিল্প কারখানার সংখ্যা ৪১৬টি। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১০০-১৫০টির বেশি কারখানা এখনও তাদের শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারির বেতনই পরিশোধ করতে পারেনি। যদিও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ জানিয়েছে সকল কারখানা ফেব্রুয়ারির বেতন পরিশোধ করেছে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ডিআইজি ইনটেলিজেন্স মো. আজাদ মিয়া বলেন, রোববার পর্যন্ত ৭০ শতাংশ কারখানার বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে ৯৮৬৯ কারখানার মধ্যে ৬৬২৬ টির বোনাস হয়েছে। একই সঙ্গে ২৯৬৬ কারখানার মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। যা ৩২ শতাংশ। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী এ বছর অধিকাংশ কারখানার বেতন-বোনাস পরিশোধ হয়ে যাবে। অন্যান্য বছরের মতো কোন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির তৈরি হবে না।
জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন বলে জানিয়েছে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা বলেন, কারখানা মালিকদের আশ্বাসে শ্রমিকরা বসে আছি। তবে আজ সোমবারের মধ্যে বেতন-বোনাস না হলে শ্রমিকরা কোথায় যাবে। আমরা বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামবে। তিনি আজকের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের আহবান জানান। মো. মোস্তফা বলেন, শিল্প পুলিশের হিসেব নিয়ে মতভেদ আছে। তবে আমার ধারণা ২৫০ থেকে ৩০০ কারখানায় বেতন-বোনাস নিয়ে সমস্যা হবে।
বিজিএমইএ’র নব-নির্বাচিত সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, কারখানাগুলো নিয়ে শিল্প পুলিশের উদ্বেগ সঠিক ছিল। আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কঠিন অবস্থায় আছি। এ বছরের মতো খারাপ অস্থা পোশাকখাতে আর আসেনি। তারপরও আশাবাদী যথাসময়েই অধিকাংশ কারখানা বেতন-বোনাস পরিশোধ করবে।
উল্লেখ্য, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঈদের আগে বেতন ও বোনাস দিতে দেরি হলে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই শিল্প পুলিশ কারখানা মালিকদের এ বছর আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শ্রমিকদের সময় মতো বেতন দিতে হবে।