৭০ শতাংশ মানুষ অনলাইনের বাইরে থাকা সত্ত্বেও শতভাগ টিকেট অনলাইনে কেন?
দেশের ৭০ শতাংশ নাগরিক অনলাইন ব্যবহার থেকে বাইরে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষের জন্য শতভাগ টিকেট অনলাইনে কেন রেখেছে এই প্রশ্ন তুলেছেন গ্রাহক স্বার্থ অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
অনলাইনের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের জন্য স্বশরীরে কাউন্টারে টিকিট কাটার ব্যবস্থা রাখার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন,
দেশে বর্তমানে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ৬৩ লাখ এবং ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী এক কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার। অন্যদিকে পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশে ৭.৪ শতাংশ নাগরিক কম্পিউটার ব্যবহার করে, ল্যাপটপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ দশমিক ৯ শতাংশ, আর সর্বশেষ মত ফোন ব্যবহারকারী ৮-৯.৯% কিন্তু এর মধ্যে ৬৫% ফিচার ফোন ব্যবহারকারী হওয়ায় এরা অনলাইনে টিকিট কাটতে পারবেন না। বিসিএস এর তথ্য মতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ২৪.৯ শতাংশ। অর্থাৎ করে যদি আমরা ৩০ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসাব করে তাহলেও সত্য শতাংশ নাগরিক অনলাইন সেবার বাইরে থাকছে।
তিনি বলেন, রেল মন্ত্রণালয় যদিও কালোবাজারি থেকে মুক্ত এবং নাগরিকদের হয়রানি থেকে বাঁচতে শতভাগ অনলাইনের ব্যবস্থা করেছে। উদ্যোগটি মহৎ কিন্তু যে দেশে এখনো শতভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করা থেকে দূরে রয়েছে সেখানে শতভাগ অনলাইনে টিকেট বিক্রি করা হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না। এটি এক ধরনের নাগরিক বৈষম্য সৃষ্টি করছে যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। আর ডিভাইস এবং ইন্টারনেট না থাকার সুযোগ নিচ্ছে পাড়া মহল্লায় ফোন-ফেক্স এর দোকানদার। তারা প্রতিটি কেটে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে ঘরমুখো মানুষদের কাছে। তার মানে কালোবাজারি থেকে মুক্ত হওয়া গেলেও অতি লোভী মানুষের হাত থেকে রক্ষা পায়নি নাগরিকগণ।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনলাইন টিকেট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান সহজ ডট কম যদিও বলছে বা রেল কর্তৃপক্ষ বলছে ৩২ হাজার টাকা টিকিটের জন্য হিট করেছে ২ কোটি ব্যবহারকারী। তবে এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো এই দুই কোটি মানুষ কিন্তু সারা দেশ থেকে অনলাইনে হিট করেছে। ঈদে ঘরফেরা মানুষ এর মধ্যে অধিকাংশই বলা চলে প্রায় ৯৫ শতাংশ সাধারণ শ্রেণীর যাত্রী। আর এর মধ্যে বেশিরভাগ যাত্রীর কাছে নেই ডিভাইস এবং ইন্টারনেট। তাই সাধারণ শ্রেণীর নাগরিকদের জন্য বা ইন্টারনেট ব্যবহার না করা নাগরিকদের জন্য পর্যাপ্ত কাউন্টার এর ব্যবস্থা করে সশরীরে টিকিটের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।