৭০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা ধার দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নগদ টাকার ঘাটতি আরো খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ব্যাংকগুলোর তারল্য চাহিদা মেটাতে এক দিনে সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৬১৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা স্বল্পমেয়াদি ধার নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। নিলামের মাধ্যমে গত বুধবার ৪৭টি ব্যাংক ও তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এই টাকা ধার দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর আগে এক দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এত ধার দেওয়ার নজির নেই।
ব্যাংকগুলোকে এই ধার এক থেকে ২৮ দিনের জন্য দেওয়া হয়েছে। এর আগে সর্বোচ্চ ১৪ দিনের জন্য এই ধার দিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তারল্য সংকট মোকাবেলায় গত ২৫ অক্টোবর ব্যাংকের রেকর্ড ২৪ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা ধার দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ে সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর ধারের স্থিতি ছিল ৫৩ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা।
গত বুধবার পর্যন্ত ধারের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য রেপো, লিকুইডিটি সাপোর্ট সুবিধা, স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি এবং শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি সুবিধার (আইবিএলএফ) নিলামে এই ধার দিয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন পর্যাপ্ত আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। মূল্যস্ফীতিতে মানুষের ব্যয় বেড়েছে।
এতে উল্টো আর্থিক সংকট মেটাতে মানুষের টাকার চাহিদা বেড়েছে। ফলে গ্রাহকদের চাহিদামতো টাকা দিতে ব্যাংকগুলো ধার করা বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, নীতি দুর্বলতার কারণে ঋণের অর্থ তুলতে পারছে না ব্যাংকগুলো। এতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় চাপ আরো বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার সাত দিন মেয়াদি রেপোর বিপরীতে ২৫টি ব্যাংক ও তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়েছে ১২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। এক দিন মেয়াদি রেপোর বিপরীতে একটি ব্যাংক ৩৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা নিয়েছে।
শরিয়াভিত্তিক ছয়টি ব্যাংক ৬.৭৫ থেকে ৮.৫০ শতাংশ সুদে ১৪ দিন মেয়াদি ধার করেছে চার হাজার ২৭ কোটি টাকা। ‘স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি’ হিসেবে একটি ব্যাংক ৯.৭৫ শতাংশ সুদে এক দিনের জন্য নিয়েছে ২১৫ কোটি টাকা। আর এক দিন মেয়াদি তারল্য সুবিধার আওতায় ১৪টি ব্যাংকে ৭.৭৫ শতাংশ সুদে নিয়েছে সাত হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা।