Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

৭৬১১টি অস্ত্রের হদিস নেই জাতীয় নির্বাচনে ঝনঝনানির শঙ্কা

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার। যদিও এ নিয়ে নানা মত ও অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে 
নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে সরকার। নির্বাচন কমিশন অফিসেও নানা কর্মযজ্ঞ শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন- এমন প্রার্থীরাও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। প্রস্তুত করা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। কেনা হচ্ছে কিছু সরঞ্জামাদিও। কিন্তু আগামী নির্বাচনে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র নিয়ে বড় শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ ৫ই আগস্টের পর ৪৬০টি থানা ও ১১৪টি ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে পুলিশের যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে সেগুলোর মধ্যে এখনো প্রায় দেড় হাজার অস্ত্রের হদিস মিলছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব অস্ত্র উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একের পর এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেও কোনো লাভ হয়নি। যৌথবাহিনীও অভিযান পরিচালনা করেছে। সর্বশেষ এসব অস্ত্র উদ্ধারে পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার। লুট হওয়া অস্ত্রের বাইরে আওয়ামী লীগের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যেসব অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল এসব লাইসেন্স বাতিল করেছে সরকার। এসব লাইসেন্সের বিপরীতে যেসব অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল সেগুলো এখন অবৈধ। এসব অস্ত্র জমা দেয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেসব অস্ত্র জমা হয়নি সেগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশের লুট হওয়া ও অবৈধ ঘোষণা করা মোট  প্রায় ৭ হাজার ৬১১টি অস্ত্রের হদিস মিলছে না। এসব অস্ত্র কোথায় কার কাছে আছে সেই তথ্যও পুলিশের কাছে নাই। অপরাধ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচনে পেশিশক্তি প্রদর্শনের জন্য এসব অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে। তাই নির্বাচনের আগে এসব অস্ত্র উদ্ধার না করলে জননিরাপত্তা ঝুঁকি থেকেই যায়।

অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, হাত বদল হয়ে পুলিশের লুট হওয়া এসব অস্ত্র আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, দাগী সন্ত্রাসী, চরমপন্থি, স্থানীয় সন্ত্রাসী, জেল পলাতক আসামি, পেশাদার অপরাধী এমনকি রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের হাতে চলে গেছে। লুট হওয়ার পর বিভিন্ন সময় এসব অস্ত্র ব্যবহার করে খুনখারাবি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হয়েছে। তাই যতদিন এসব অস্ত্র পুরোপুরি উদ্ধার করা সম্ভব হবে না ততদিন নিরাপত্তা শঙ্কা থেকেই যাবে। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত গতানুগতিক কৌশল পাল্টে ভিন্ন কোনো কৌশলে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে বিভিন্ন অপরাধে বন্দি থাকা অপরাধীদের পাশাপাশি  বহুল আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও জামিনে মুক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, আব্বাস আলী ওরফে কিলার আব্বাস, সুইডেন আসলাম, খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন, খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসু, ফ্রিডম সোহেল, আরমান, হাবিবুর রহমান তাজ, নাজমুল মাকসুদ মুরাদসহ অনেকেই রয়েছেন। মুক্ত হয়ে তারা দেশে-বিদেশে অবস্থান করে ফের অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করছেন। তারা আবার সন্ত্রাসী দল গঠন করেছেন। সূত্রগুলো বলছে, লুট হওয়া অস্ত্রগুলো চড়া দাম দিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কিনে নিয়েছেন। পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র দিয়ে অহরহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে আসামি গ্রেপ্তার করে লুট হওয়া অস্ত্রের খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। অপরাধীরাও স্বীকার করেছে এসব অস্ত্র দিয়ে অপরাধ করার কথা। 

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ৫ই আগস্টের পর দেশের ৬৬৪টির মধ্যে ৪৬০ থানা ও ১১৪টি ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও গণভবন থেকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৫ হাজার ৭৫৩টি অস্ত্র লুট হয়। এ ছাড়া ৬ লাখ ৫১ হাজার ৮৩২টি গোলাবারুদ নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৮৭টি। এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি ১ হাজার ৩৬৬টি। এ ছাড়া গোলাবারুদের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭টি। এখনো উদ্ধার হয়নি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪৫টি। পুলিশ জানিয়েছে, লুট হওয়া ১১০৬টি চায়না রাইফেলের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৯৯১টি। আরেকটি মডেলের ১২টি রাইফেলের মধ্যে ১১টি উদ্ধার হলেও ১টি উদ্ধার হয়নি। এসএমজি-(টি ৫৬) ২৫১টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ২২১টি। এলএমজি (টি-৫৬) ৩৪টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩১টি। পিস্তল (টি-৫৪) ৫৩৯টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩২৫টি। ৯ ইনটু ১৯ মি.মি ১০৯২টি পিস্তলের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৬৩০টি। ৯ ইনটু ১৯ এসএমজি/এসএমটি ৩৩টির মধ্যে সবক’টি উদ্ধার হয়েছে।  ১২ বোরের শটগান ২০৭৯টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ১৬৭৫টি। ৩৮ মি.মি গ্যাস গ্যান ৫৮৯টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৪৫৮টি। ৩৮ মি.মি টিয়ার গ্যাস লাঞ্চার ১৫টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৮টি। এখনো উদ্ধার হয়নি ৭টি। ২৬ মি.মি পিস্তল ৩টির মধ্যে ১টি উদ্ধার হয়েছে। 

গোলাবারুদের মধ্যে বিভিন্ন বোরের ৬ লাখ ১২ হাজার ৯৮২টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫৫৪টি। এখনো উদ্ধার হয়নি ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৮টি। বিভিন্ন ধরনের টিয়ারগ্যাস সেলের ৩১ হাজার ২১২টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ১৯ হাজার ৮২১টি। বিভিন্ন ধরনের টিয়ার গ্যাস গ্রেনেডের ১৪৮৬টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ১১৯৫টি। সাউন্ড গ্রেনেড ৪৭৪৬টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩৫৭৪টি। কালার স্মোক গ্রেনেড ২৭৩টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ২৩২টি। সেভেন মাল্টিপল ব্যাং স্টান গ্রেনেড ৫৫টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩৩টি। ফ্ল্যাশ ব্যাং/৬ গ্রেনেড ৯০০টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৬১৬টি। হ্যান্ড হেল্ড টিয়ার গ্যাস স্প্রে ১৭৮টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে মাত্র ৬২টি। গণভবনের দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যদের ৩২টি অত্যাধুনিক অস্ত্র এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি। এসব অস্ত্রের মধ্যে এসএমজি টি-৫৬, অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ফ্ল্যাশ ব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি ড্রোন গান, অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম ও বেতার যোগাযোগের ডিভাইসও ছিল। এখনো সেসব অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য মেলেনি। 

এদিকে, গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের তিন মেয়াদে সারা দেশে ১৯ হাজার ৫৯৪টি অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছিল। এরমধ্যে ১০ হাজারের মতো অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়। গণ-অভ্যুত্থানের পর এসব লাইসেন্স ও লাইসেন্সের বিপরীতে ইস্যুকৃত অস্ত্র নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গতবছর এসব লাইসেন্স বাতিল করে। তারপরই এসব লাইসেন্স ও অস্ত্র অবৈধ হয়ে যায়। লাইসেন্সের বিপরীতে যাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র আছে তাদের সেসব অস্ত্র থানায় জমা দেয়ার জন্য গত বছরের ৩রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় সরকার। কিন্তু লাইসেন্স স্থগিত করার পর থানায় জমা পড়েছে মাত্র ১৩ হাজার ৩৪৯টি অস্ত্র। এখনো ৬ হাজার ২৪৫টি অস্ত্র জমা দেয়া হয়নি। এসব অবৈধ অস্ত্র এখন কার কাছে আছে তারও কোনো হদিস নাই। ধারণা করা হচ্ছে- এসব অস্ত্রের কিছুটা স্থগিত করা লাইসেন্সের মালিক ও কিছু অস্ত্র বিক্রি হয়ে যেতে পারে। এখন এসব অবৈধ অস্ত্র নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে এসব অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কা আছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাতিল হওয়া লাইসেন্সের মধ্যে শুধু ঢাকা জেলায় রয়েছে ৩৮১টি। পাবনায় ১৪১, চট্টগ্রামে ৭৩, যশোরে ৬৬ ও কক্সবাজারে ৩৮টি। বাতিল করা লাইসেন্স মালিকদের মধ্যে আওয়ামী লীগের এমপি, ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রয়েছেন। 
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তৌহিদুল হক মানবজমিনকে বলেন, লুট হওয়া যেসব অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি, সেগুলো সমাজের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকি।  সামনে জাতীয় নির্বাচন আসছে এ অস্ত্রগুলো নির্বাচনে ব্যবহার হওয়ার অনেক আশংকা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা দেখতে পেয়েছি যে, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, দখল বাণিজ্যের হাতবদল হয়েছে। এ অস্ত্রগুলো এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে।  পুলিশকে  দ্রুতই চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এসব অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে,  না হলে সমাজের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। 

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, লাইসেন্সের বিপরীতে যেসব অস্ত্রের সন্ধান মিলছে না সেগুলোর চেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র। কারণ লাইসেন্সকৃত অস্ত্রগুলো অবৈধ ঘোষণা করলেও এখনো মালিকদের কাছে লাইসেন্স আছে। এসব অস্ত্র দিয়ে কোনো অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় আনা যাবে। তারা হয়তো কেউ পালিয়ে আছে বা কেউ গ্রেপ্তার ও মবের ভয়ে থানায় গিয়ে অস্ত্র জমা দিতে পারছে না। তবে লুট হওয়া অস্ত্র নিয়ে মারাত্মক শঙ্কা রয়েছে। কারণ অপরাধীরা জানে এটা দিয়ে কোনো অপরাধ করলেও তাদের ধরা এবং দায়বদ্ধ করা যাবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot toto