৭.২৩% এ উঠলো কল মানি রেট, এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ
কল মানি মার্কেট ছিল ব্যাংকগুলোর জন্য সহজে প্রয়োজন মেটানোর, অর্থাৎ তারল্য ব্যবস্থাপনার একটা মাধ্যম। এখানে রেট বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো, ব্যাংকগুলো আরও বেশি সুদে ডিপোজিট সংগ্রহের দিকে ঝুঁকবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পলিসি রেট বৃদ্ধির পরের দিনই প্রভাব পড়েছে আন্তব্যাংক লেনদেনের কলমানি মার্কেটে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ব্যাংকগুলোর গড়ে ৭.২৩% সুদে লেনদেন হয়েছে যা প্রায় ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আগে ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ উঠেছিল কলমানি রেট।
রিপোর্ট বলছে, বৃহস্পতিবার কলমানি মার্কেটে ১ থেকে ৯০ দিন মেয়াদি মোট লেনদেন হয়েছে ৫,৩৭৪ কোটি টাকা। যার গড় রেট ছিল ৭.২৩%।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯.৫০% সুদে ৩২ ও ৯০ দিন মেয়াদে দুটি ব্যাংক ধার করেছে ৮০ কোটি টাকা।
আর একদিন মেয়াদি ঋণে সর্বোচ্চ সুদ ছিল ৮.৫০% ও সর্বনিম্ন ৬.৫০%। এর মাধ্যমে ১৪০টি বিটে ৪৬৬১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
ব্যাংকাররা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাচ্ছে তাদের হাতে থাকা মূলনীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কমাতে। যার কারণে বুধবার নীতিগত সুদহার ৬.৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭.২৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়।
এর প্রভাব পড়েছে কল মানি মার্কেটে। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেট সস্তা থাকলে অন্য রেটও সস্তা হয়।
এতোদিন ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১০.২০ শতাংশ। গতকাল তা আরও দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ১০.৭০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান টিবিএসকে বলেন,
“পলিসি রেট বাড়ার রিফলেকশন হচ্ছে কল মানি মার্কেটে। এখন টাকা আরও টাইট হয়ে যাবে। যার ফলে ব্যাংকগুলোর বেসরকারি ঋণ প্রবাহ আরও কমবে।”
তিনি বলেন, কল মানি মার্কেট ছিল ব্যাংকগুলোর জন্য সহজে প্রয়োজন মেটানোর, অর্থাৎ তারল্য ব্যবস্থাপনার একটা মাধ্যম। এখানে রেট বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো, ব্যাংকগুলো আরও বেশি সুদে ডিপোজিট সংগ্রহের দিকে ঝুঁকবে।
আরেকটি ব্যাংকের ট্রেজারি হেড বলেন, ব্যাংকগুলো বেশি রেটে ধার করলে গ্রাহক পর্যায়েও বেশি রেট রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গ্রাহক পর্যায়ে সুদ সিমিত পরিসরে রাখতে হয়। যার ফলে ব্যাংগুলোর প্রফিট কমে আসবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকগুলো থেকে হাজারো কোটি টাকা নিচ্ছে। অথচ ট্রেজারি বিলের রেট দিচ্ছে কম।
এই রেট আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন তিনি। সরকার যদি সস্তায় ব্যাংকগুলো থেকে টাকা নিয়ে যায়, তাহলে ব্যাংকগুলোর তারল্য মার্কেট সংকটে পড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কল মানি গড় রেট ছিল ৫.৮০%, যেখানে সেই বছরের জুনে এটি ছিল ৪.৮৮%।
২০২২ সালের ২১ মার্চ থেকে কলমানি রেট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়তে শুরু করেছে।