জেনারেল বাজওয়ার নির্দেশে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল : ফজল
পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল অব. কামার জাভেদ বাজওয়ার নির্দেশে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির জমিয়ত-ই-ইসলামের (জেইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান। পরবর্তী সরকার গঠন নিয়ে ইমরান খানের প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের সাথে প্রস্তাবিত আলোচনার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি এই মন্তব্য করলেন।
বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের সাথে এক সাক্ষাতকারে জেইউআই-এফ প্রধান বলেন, সাবেক সেনাপ্রধানের নির্দেশনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুৎ করার জন্য অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল।
ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) নামে যে জোট গঠিত হয়েছিল, তার প্রধান ছিলেন ফজল। তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ছিলাম। কিন্তু অন্য দলগুলোর জোরাজুরির মুখে আমি যদি না বললাম, তবে এমন ধারণা সৃষ্টি হতো যে আমি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতাকে ‘রক্ষা’ করছি।”
পিডিএম ২০২২ সালের এপ্রিলে পিটিআই সরকারের পতন ঘটায়। এরপর শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে একটি বহুদলীয় সরকার গঠন করা হয়। এই সরকার ১৬ মাস শাসন করার পর কেয়ারটেকার সরকার গঠিত হয়।
ইমরান খান প্রথমে জোর দিয়ে বলেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র তাকে অপসারণ করেছে। জো বাইডেন সরকার দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পরে দায় চাপান জেনারেল বাজওয়ার ওপর।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক সাক্ষাতকারে ইমরান খান এক সাংবাদিকের সাথে ওই অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলের দৃশ্যত কথোপকথনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান যে জেনারেল বাজওয়া ‘আমাদের সরকারের পতনের জন্য তার নেপথ্য কারসাজির কথা গ্রহণ ও সুস্পষ্ট করেছেন।’
সাক্ষাতকারে ফজল বলেন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য আন্দোলন করলেন লে. জেনারেল অব. ফয়েজ হামিদ আমাকে জানিয়েছিলেন যে আমি যা চাই তাই করতে পারি। তবে তা করতে হবে সিস্টেমের মধ্যে।
জেইউআই-এফ প্রধান বলেন, জেনারেল হামিদ তাকে বলেছিলেন যে তিনি ‘সিস্টেমের বাইরে কিছুই করতে পারবেন না।’ এর অর্থ হলো, তাকে রাজপথে নয়, পার্লামেন্টের মধ্যেই সবকিছু করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘তবে আমি ওই নির্দেশনা অগ্রাহ্য করি।’ তবে তিনি পরে উল্লেখ করেন যে বেলুচিস্তান আওয়ামি পার্টি (বিএপি), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) এবং অন্য দলগুলো পিটিআইয়ের নেতৃত্বাধীন সরকার ত্যাগ করে।
তিনি বলেন, তারা যখন বলল যে পিটিআইবিরোধীরা এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ, তখন আমি ইমরান খানকে রক্ষা করতে সম্মত হই।
উল্লেখ্য, পিটিআইয়ের মতো তিনিও জোর দিয়ে বলছেন যে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দল সুস্পষ্টভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্ররা ২৬৪টির মধ্যে ৯২টি আসন পেয়েছে। ফলে তারাই বৃহত্তম গ্রুপ। এরপর আছে পিএমএল-এন (৭৯) এবং পিপিপি (৫৪)।
এদিকে জেনারেল বাজওয়া এবং জেনারেল ফযেজ উভয়েই এ ধরনের কোনো অনিয়মের সাথে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।