কাশ্মীরে হাতে বানানো গোলাপজলের ‘শেষ’ দোকান
ঝিলম নদীর তীরের এক শীতের সকাল। তীরের অদূরে এক দোকানে বসে আছেন আবদুল আজিজ কোজগার। তাঁর চারপাশ গোলাপের সৌরভে ম–ম করছে। ২০০ বছরের উত্তরাধিকার কাঁধে বয়ে চলেছেন তিনি। তাঁর আরেক পরিচয় আর্ক-ই-গুলাব বা কাশ্মীরের ‘শেষ’ গোলাপজল প্রস্তুতকারক হিসেবে।
কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরের খানকাহ-ই-মওলা পাড়ায় তাঁর গোলাপজলের দোকানটি একটুকরা ইতিহাস ধারণ করে আছে। তাঁর দোকানের তাকে তাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে প্রাচীন সব ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের বোতল ও জার। তাঁর এই দোকানটি যতটা অতীতের শিকড়ে গাঁথা, যেন তার বর্তমান হারিয়ে গেছে।
আজিজ কোজগারের পরিবারের সদস্যরা ২০০ বছর ধরে বংশপরম্পরায় গোলাপজল তৈরি করে আসছেন। তাঁদের এই গোলাপজল ত্বক ও মুখের জন্য সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রার্থনালয়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কাশ্মীর উপত্যকায় বিভিন্ন প্রার্থনালয়ে গোলাপজলের ব্যবহারের কথা স্মরণ করে আজিজ কোজগার বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষেরা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য গোলাপজল তৈরি করতেন। এর একটা আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য ছিল।’ গোলাপজল তৈরির ঐতিহ্যবাহী এই ব্যবসা লাভজনক নয় বলে জানালেন তিনি। এখন প্রতিযোগিতাও বেশি উল্লেখ করে আজিজ কোজগার দাবি করেন, ‘বাজারে পাওয়া গোলাপজল মেশিনে তৈরি। আর আমাদেরটা সম্পূর্ণ হাতে তৈরি করা হয়। আমরা এটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করি।’
বিশেষ প্রক্রিয়ায় গোলাপজল প্রস্তুত করার বিষয়টি বছরের পর বছর ধরে অনুসরণ করে আসছে কোজগার পরিবার। তবে কোজগারের পরিবার এতে আর কী কী পদ্ধতি ব্যবহার করে তা দীর্ঘদিন ধরে গোপন রেখেছে। আজিজ কোজগার বলেন, তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম এ ব্যবসা চালিয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তিনি।