সুপারনোভা থেকে সত্যিই হয়েছে নিউট্রন তারা
বিজ্ঞানীরা অবশেষে প্রমাণ পেয়েছেন ‘এসএন১৯৮৭এ’ নামের সবচেয়ে বেশি গবেষণা হওয়া সুপারনোভাটি থেকে একটি নিউট্রন তারা তৈরি হয়েছিল। আর শক্তিশালী মহাকাশ টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব সম্ভব করেছে এই আবিষ্কার। সূর্যের চেয়ে ৮-১০ গুণ বেশি ভরের নক্ষত্র ধ্বংস হলে যা সৃষ্টি হয় তা-ই সুপারনোভা। মহাবিশ্বে প্রাণের সৃষ্টিকে সম্ভব করে তোলে যে কার্বন, অক্সিজেন, সিলিকন এবং লোহার মতো রাসায়নিক উপাদান, তার মূল উৎস এটি।
একই সঙ্গে নিউট্রন তারা ও ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরসহ নানা বিচিত্র বস্তু গঠনের পেছনেও সক্রিয় এই সুপারনোভা। ১৯৮৭ সালে আমাদের ছায়াপথের অদূরে অবস্থিত বিশাল ম্যাগেলান মেঘপুঞ্জের মধ্যে সুপারনোভা এসএন১৯৮৭এর বিস্ফোরণ ধরা পড়ে। চার শতাব্দীর মধ্যে পৃথিবী থেকে কোনো সুপারনোভা সৃষ্টি হওয়ার দৃশ্য খালি চোখে দেখা যাওয়া সেটাই প্রথম। প্রায় ৪০ বছর ধরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছিলেন ধ্বংস হওয়া নক্ষত্রটির অবশেষের ভেতরে কী লুকিয়ে রয়েছে তা জানার।
এটি কি একটি নিউট্রন তারা বা কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়েছে? নিউট্রিনো কণার উপস্থিতি দেখা গেলেও ঘনসন্নিবদ্ধ নিউট্রন তারা গঠিত হওয়ার নিশ্চিত প্রমাণ তাঁরা পাননি। সুইডেনের গবেষকসহ আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল বলছে, এত দিনে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্য নিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেছে।
সায়েন্স জার্নালে ২২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি গবেষণায়, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক দলটি বলেছে, তারা এসএন১৯৮৭এ সুপারনোভার কাছাকাছি থাকা একটি নীহারিকার (নেবুলা) কেন্দ্র থেকে আসা একটি নিউট্রন তারার সংকেত শনাক্ত করেছে। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সুইডিশ জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী জোসেফিন লারসন বলেছেন, ‘এটি এক দুর্দান্ত আবিষ্কার।
তিনি বলেন, ‘এখনো আমরা কোনো নিউট্রন তারা দেখতে না পারলেও বিস্ফোরিত তারাটির চারপাশে যে গ্যাসের বিকিরণ ঘটেছে তা শুধু নিউট্রন তারার উপস্থিতিতেই সম্ভব।’