বছর ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২৮৩%
টিসিবির তালিকায় ৫২ পণ্যের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৩টির
এক বছরের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে দাম বৃদ্ধির দিক থেকে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে পেঁয়াজ। বছর ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২৮৩ শতাংশ। এই পেঁয়াজ এখন দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশগুলোর চেয়ে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে কিনছে বাংলাদেশের ক্রেতারা। পেঁয়াজের পরই দাম বৃদ্ধির দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ধনে। বছর ব্যবধানে এ মসলা পণ্যের দাম বেড়েছে ৬১ শতাংশ। দর বাড়ার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রসুন। সেটির দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। আর গরিবের খাবার বলে বিবেচিত আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে একই সময়ে ৩৪ শতাংশ। আদার দাম বেড়েছে ৫৬ শতাংশ। আর বছর ব্যবধানে চিনির দাম বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রকাশিত ‘ঢাকা মহনগরীর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের খুচরা বাজারদর’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। টিসিবির তালিকায় মোট ৫২টি পণ্যের দাম স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ৩৩টির দামই বছর ব্যবধানে বৃদ্ধি পেয়েছে।
টিসিবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গেল বছর মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশীয় পেঁয়াজের কেজি ছিল প্রকার ভেদে ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। এ বছর মার্চের প্রথম সপ্তাহে সেই দেশী পেঁয়াজই কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা করে। একই সময়ে আমদানি করা এই পণ্যটির দাম বৃদ্ধির হার ছিল ২০৭ শতাংশ। গত বছর এই সময়ে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ছিল যেখানে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। সেখানে এবার তার দাম ছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা।
চালের দামের বিষয়ে টিসিবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরু চাল হিসেবে বিবেচিত নাজির/মিনিকেট দাম বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এবার এই চাল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর যা ছিল ৬২ থেকে ৭৫ টাকার মধ্যে। একই সময়ে মোটা চালের দাম বেড়েছে ২ শতাংশ। তবে পাইজাম চালের দাম কমেছে সাড়ে ৪ শতাংশ। একই সময়ে আটা ও ময়দার দামও ৫ থেকে ১৯ শতাংশ কমেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বছর ব্যবধ্যনে সয়াবিন তেলের দামও ৯ থেকে ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এক বছর আগে লুজ (খোলা) সয়াবিন তেলে লিটার প্রতি দর ছিল ১৬৮ টাকা থেকে ১৭২ টাকা। এখন তা হয়েছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা।
আলুর দাম কেজিপ্রতি বর্তমান দর উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এক বছর আগে যা ছিল ১৯ থেকে ২২ টাকার মধ্যে। এখানে উল্লেখ্য, বাজারে এখনো কেজি প্রতি আলু ৩৫ টাকার নিচে পাওয়াই যায় না। ডাল বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে মসুর বড় দানা কেচি ১০৫ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে। এক বছর আগে যা ছিল ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে।
বছর ব্যবধানে আরেক পণ্যের দামও বেশ বেড়েছে। পণ্যটি হচ্ছে চিনি। গত বছর মার্চে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। সেখানে এবার সেই চিনিই বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা করে। আর দেশী চিনি তো ১৬০ টাকা কেজির নিচে পাওয়াই যায় না।
এখানে উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই সব চেয়ে বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশী মুদ্রামানে চিনির দাম কলকাতায় ৬২.৫৭ টাকা (ভারতীয় ৪৮ রুপি), দিল্লিতে ৬৭.৫৪ টাকা (ভারতীয় ৫১ রুপি), করাচিতে ৫১ টাকা (পাকিস্তানি ১৩০ রুপি), কলম্বোতে ৯৯ টাকা (শ্রীলঙ্কার ২৮০ রুপি) এবং কাঠমান্ডুতে ৮২.৭৬ টাকা (নেপালি ১০০ রুপি)। দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান প্রধান শহরগুলোর এই মূল্য গতকাল ইন্টারনেট সূত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। ইন্টারনেট ঘেঁটে এ তথ্য পাওয়া গেছে।