মহাসাগরে প্রচণ্ড ঘূর্ণির পেছনে রয়েছে মঙ্গল গ্রহের প্রভাব
পৃথিবী থেকে ১৪০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে মঙ্গল গ্রহের অবস্থান। কিন্তু পৃথিবীর গভীর মহাসাগরে ‘প্রচণ্ড ঘূর্ণি’ সৃষ্টিতে রয়েছে লাল এই গ্রহের প্রভাব। নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। গভীর মহাসাগরের স্রোতের শক্তি আরো ভালোভাবে বোঝা এবং পৃথিবীর কয়েক মিলিয়ন বছর আগের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা অর্ধশতাব্দী ধরে শত শত গভীর সমুদ্র থেকে সংগ্রহ করা পলি বিশ্লেষণ করেছেন।
বিশ্লেষণের ফলাফল ছিল অবাক করার মতো। নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, পলি বিশ্লেষণে দেখা গেছে গভীর সুমদ্রের স্রোত ২.৪ মিলিয়ন বছরব্যাপী জলবায়ুচক্রকে দুর্বল ও শক্তিশালী করেছে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলি বিশেষজ্ঞ ও গবেষক অ্যাড্রিয়ানা ডুটকেহভিচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই চক্র আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের কাছে অপ্রত্যাশিত। এ ব্যাপারে তাঁদের একমাত্র ব্যাখ্যা হচ্ছে, বিষয়টি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় মঙ্গল গ্রহ ও পৃথিবীর মিথস্ক্রিয়া চক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত।
গবেষকদের মতে, এটিই প্রথম গবেষণা, যেখানে এই সংযোগের বিষয়টি উঠে এসেছে। দুটি গ্রহ একে অন্যকে প্রভাবিত করার বিষয়টিকে বলা হয় ‘রেজোন্যান্স’। এর মাধ্যমে দুটি প্রদক্ষিণকারী বস্তু পরস্পরের দিকে একটি মহাকর্ষীয় ধাক্কা ও টান প্রয়োগ করে। বিষয়টিকে কখনো কখনো দূরবর্তী গ্রহগুলোর মধ্যে এক ধরনের সামঞ্জস্য হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়।
এই মিথস্ক্রিয়া তাদের কক্ষপথের আকৃতি পরিবর্তন করে এবং সূর্য থেকে তাদের দূরত্বকে প্রভাবিত করে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর জন্য মঙ্গলের সঙ্গে এই মিথস্ক্রিয়া বর্ধিত সৌরশক্তির সময়কালে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ পৃথিবী উষ্ণ জলবায়ুর মুখোমুখি হয়। এই উষ্ণ চক্রই প্রচণ্ড সামুদ্রিক ঘূর্ণির সঙ্গে সম্পর্কিত।