৩৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে মজুরি বাড়ছে জাপানে
জাপানের সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন গ্রুপ সম্প্রতি জানিয়েছে, দেশটির বড় কোম্পানিগুলো এ বছর তাদের কর্মীদের জন্য ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ মজুরি বাড়াতে রাজি হয়েছে। এর ফলে গত ৩৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হারে বাড়ছে দেশটির মজুরি। বড় কোম্পানিগুলোর এমন সিদ্ধান্তের ফলে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দীর্ঘ এক দশক ধরে দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছে এটি। এ মজুরি বৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বলে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যাংক অব জাপান বর্তমানে এর আট বছর ধরে চলা নেতিবাচক নীতি সুদহার বন্ধ করবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী ১৮-১৯ মার্চ এটির নীতিনির্ধারণি বৈঠক হবে। দেশটির সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠন রেঙ্গোর বরাত দিয়ে জাপান টাইমস জানিয়েছে, বার্ষিক দর কষাকষির ফল হিসেবে জাপানের অনেক বড় কোম্পানির কর্মীরা কয়েক দশকের মধ্যে তাদের সবচেয়ে বড় বেতন বৃদ্ধি নিশ্চিত করেছেন।
রেঙ্গো বলছে, মজুরি বৃদ্ধির হার গড়ে পাঁচ শতাংশের বেশি। রেঙ্গোর কর্মকর্তারা গত শুক্রবার ৭৭১টি কোম্পানির সঙ্গে দর কষাকষির ফল ঘোষণা করেন। তারা জানান, গড় মাসিক বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ ১৬ হাজার ৪৬৯ ইয়েন বা প্রায় ১১০ ডলার। এ হিসেবে মজুরি বৃদ্ধি পাচ্ছে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, যা ৩৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এর আগে গত বছর ৩ দশমিক ৬ শতাংশের মতো বেতন বৃদ্ধি করা হয়, যা ১৯৯৯ সালের তুলনামূলক পরিসংখ্যান শুরুর পর রেকর্ড ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতিবাচক সুদহারের ফলে অর্থনৈতিক অভিঘাতের কবলে পড়েছে জাপানের মধ্যবিত্তরা। জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার নীতির নেতিবাচক প্রভাবের পর কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয় দেশটির বড় বড় প্রতিষ্ঠান। মোটরগাড়ি, ইলেকট্রনিকস ও ইস্পাত শিল্পের অনেক কোম্পানি ইউনিয়নের দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত হয়েছে। ছোট ও মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা এখন পূর্ণ উদ্যমে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত রেঙ্গো। তবে এসব কোম্পানির কর্মীরাও উল্লেখযোগ্য বেতন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারবেন কি না, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে ট্রেড ইউনিয়ন।
গত মাসে একটি বেসরকারি জরিপে দেখা গেছে, জাপানের বেশির ভাগ ক্ষুদ্র এবং মাঝারি কোম্পানির কর্মীরা ২০২৪ অর্থবছরে বেতন বৃদ্ধির আশা করছে। তবে বৃদ্ধির পরিমাণ গত বছরের মতো হবে না। ফেব্রুয়ারির শুরুতে টোকিও শোকো রিসার্চ নামের একটি গবেষণা সংস্থা অনলাইন জরিপটি পরিচালনা করে। দেশব্যাপী ৩ হাজার ৮০০টির বেশি ক্ষুদ্র কোম্পানি এতে অংশ নেয়। জরিপের ফলে দেখা যায়, উত্তরদাতাদের ৮৫ শতাংশ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া আগামী অর্থবছরে বেতন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে।