সত্যিই কি মার্কিন মুসলিমদের কষ্ট ‘বোঝেন’ বাইডেন?
টানা প্রায় ছয় মাস ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচারে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছে আমেরিকা। তারপরও ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় মার্কিন মুসলিমরা যে খুবই মনোকষ্টে রয়েছেন, তা বোঝেন বলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ২০২১ সালে এপ্রিল মাসকে ‘আরব আমেরিকান হেরিটেজ মান্থ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আর দু’দিন পরেই শুরু হচ্ছে এপ্রিল মাস। দরজায় কড়া নাড়তে থাকা ‘আরব আমেরিকান হেরিটেজ মান্থ’কে সম্মান জানিয়ে শুক্রবার এক লিখিত বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় চলছে। প্রতিদিন শত শত বেসামরিক মানুষের সেখানে নিহত হওয়া এবং সহিংসতার জেরে মার্কিন মুসলিমরা যে নিদারুণ মানসিক কষ্টে আছেন তা আমরা বুঝতে পারি। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও এ ইস্যুতে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত।’
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিবৃতিতে এমন দাবি করলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বাইডেন এই বার্তা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলের কাছে বোমা ও যুদ্ধবিমান বিক্রয় সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাইডেন প্রশাসন। যুক্তিতে যত সংখ্যক বোমা ও যুদ্ধবিমানের উল্লেখ রয়েছে, বর্তমান বাজারে সেসবের দাম শত কোটি ডলারের ওপর।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের সবচেয়ে পুরনো, বিশ্বস্ত ও প্রভাবশালী মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্বের এই একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রটিকে আর্থিক, সামরিক, রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।
সেই ধারাবাহিকতায় গাজায় হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলকে সমরাস্ত্র ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এ পর্যন্ত জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত যত প্রস্তাব উঠেছে, সেগুলো মধ্যে সর্বশেষ প্রস্তাবটি ব্যতীত বাকি সবগুলো ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে বাতিল করেছে ওয়াশিংটন।
এদিকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি। বাইডেন প্রশাসনের ওপর দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন যে ক্ষুব্ধ-হতাশ— তা প্রকাশ্যেই বলেছেন মার্কিন মুসলিম নেতারা।
চলতি বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাইডেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে জনসংযোগ ও তহবিল সংগ্রহের কাজও শুরু করেছেন তিনি।
তবে এ সংক্রান্ত তার প্রতিটি সমাবেশে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন মার্কিন মুসলিম ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা।