পুড়ছে বরেন্দ্র জনপদ
রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি : তাপপ্রবাহ বইছে ১২ জেলায় : সিলেটে টানা ৬ষ্ঠ দিনে দমকা হাওয়া বজ্রসহ একশ’ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত
তীব্র তাপদাহের বিস্তৃতি ঘটছে। খরতাপে পুড়ছে রাজশাহীর বরেন্দ্র জনপদসহ দেশের অনেক অঞ্চল। ফল-ফসল, সবজি ক্ষেত-খামার, মাঠ-ঘাট তীব্র রোদের তেজে পুড়ে খাক। সেই সাথে খরতপ্ত পরিস্থিতিতে এবার আগেভাগেই পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে সর্বত্র। টানা গরমে-ঘামে নাকাল জনজীবন। দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে বাতাসে যেন লু হাওয়া বইছে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ সমগ্র রাজশাহী বিভাগ মিলিয়ে দেশের ১২টি জেলার উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে ও দেশের আরো বিভিন্ন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে জনজীবনে ঘামে-গরমে অস্বস্তি বিরাজ করছে।
গতকাল শুক্রবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অবশ্য রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে এসে ৩৪ ডিগ্রিতে নামলেও রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে হয়েছে ২৭.৫ ডিগ্রি সে.। তাছাড়া দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল গতকাল চুয়াডাঙ্গায় ৩৮, পাবনায় ৩৭.৫, নওগাঁয় ৩৬.৪, মোংলা ও কুষ্টিয়ায় ৩৬ ডিগ্রি সে.।
দিনের তাপমাত্রার সঙ্গে রাতের বেলায়ও ‘সর্বনিম্ন’ তাপমাত্রা দেশের অনেক এলাকায় ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রির কাছাকাছি উঠে গেছে। যা মৌসুমের এ সময়ে অস্বাভাকি ঊর্ধ্বে। এ কারণে দিনে-রাতে তাপদাহে কোথাও স্বস্তি নেই। গরমের যন্ত্রণায় টেকা দায়। সেই সাথে ঘন ঘন লোডশেডিং ও বিশুদ্ধ পানির কষ্টে রোজাদারদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি বেড়েই চলেছে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, আজ শনিবার সারা দেশে তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী সোমবারের দিকে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তখন সাময়িকভাবে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আবারও তাপদাহের দাপট বেড়ে যেতে পারে।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৬ষ্ঠ দিনের মতো একশ’ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই সঙ্গে অনেক জায়গায় দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে ছিল বজ্রবৃষ্টি। সিলেট ছাড়া গতকালও দেশের কোথাও ছিটেফোঁটা বৃষ্টি ঝরেনি।
আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামীকাল রোববার সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী সোমবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত এবং তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনে তাপমাত্রা আবারও বৃদ্ধির দিকে যেতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।