USA

থ্রিডি প্রিন্টারে নির্মাণ হচ্ছে ১০০ বাড়ি, দাম কত

টেক্সাসের জর্জটাউন শহরে থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে মোট ১০০টি একতলা বাড়ি তৈরি করা হবে

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের জর্জটাউন শহরে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি আবাসিক এলাকা। এই এলাকার বাড়িগুলোয় একটি বিশেষত্ব রয়েছে। সেগুলো তৈরি করা হচ্ছে থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে। এরই মধ্যে একটি বাড়ির কাজ শেষও হয়েছে।

আবাসিক এলাকাটি তৈরির প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি ও ডেনমার্কভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে মোট ১০০টি একতলা বাড়ি তৈরি করা হবে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এই বাড়িগুলোয় বসবাস শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্মাতারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে কয়েকটি বাড়ি বিক্রিও হয়ে গেছে।

থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণের বিষয়টি হয়তো অনেকের কাছে অজানা। আসলে এটি অত্যাধুনিক একটি প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে অবকাঠামো গড়ে তুলতে ব্যবহার করা হয় বিশাল আকারের সব প্রিন্টার। সাধারণ ছাপার কাজে সচরাচর যেসব প্রিন্টার দেখা যায়, এগুলো তেমন নয়।

কালির বদলে থ্রিডি প্রিন্টারে ব্যবহার করা হয় নির্মাণ-উপাদান বা কংক্রিটের মিশ্রণ। কম্পিউটারে আগে থেকেই সংরক্ষণ করা থাকে বাড়ি বা অবকাঠামোর নকশার গাণিতিক হিসাব। সেই হিসাব মেনেই প্রিন্টারের নলের অগ্রভাগ থেকে কংক্রিটের মিশ্রণ বের হয়ে স্তরে স্তরে গড়ে তোলে অবকাঠামো।

টেক্সাসের ওই বাড়িগুলোর নির্মাতারা জানিয়েছে, নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৪৬ ফুট চওড়া রোবট প্রিন্টার। বাড়িগুলোর দেয়াল তৈরির পর দরজা, জানালা ও ছাদ নির্মাণ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এসব বাড়িতে যুক্ত করা হয়েছে সোলার প্যানেল। বাড়িগুলোর আয়তন ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ১০০ বর্গমিটার। প্রতিটি বাড়িতে তিন থেকে চারটি শোবার ঘর রয়েছে। বাড়িগুলো বিক্রি হচ্ছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার থেকে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ডলারে।

বাড়িগুলোর আয়তন ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ১০০ বর্গমিটার। তিন থেকে চারটি শোবার ঘর রয়েছে

বাড়িগুলোর আয়তন ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ১০০ বর্গমিটার। তিন থেকে চারটি শোবার ঘর রয়েছেছবি: নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইকনের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে নির্মাণকাজ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমায় বলে উঠে এসেছে স্বাধীন এক গবেষণায়। এতে নির্মাণবর্জ্যও কম বের হয়। এ ছাড়া প্রিন্টার ব্যবহারের মাধ্যমে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত উপাদান কম লাগে। প্রতিবছর সারা বিশ্বে ৮ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের জন্য দায়ী সিমেন্টের ব্যবহার।

২০২০ সালে সিঙ্গাপুরে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে একটি বাথরুম তৈরি করতে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ খরচ কম হয়। এ ছাড়া প্রচলিত নির্মাণকৌশলের তুলনায় প্রায় ৮৬ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড কম নিঃসরণ হয় প্রিন্টার প্রযুক্তিতে।

এসবের পরও থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহারের মাধ্যমে নির্মাণকাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তাঁদের ভাষ্যমতে, থ্রিডি প্রিন্টারে এখনো এমন কংক্রিট ব্যবহার করা হচ্ছে, যেগুলো কার্বন নিঃসরণের সঙ্গে জড়িত। আর অবকাঠামোর নিরাপত্তাসংক্রান্ত যেসব নীতিমালা আছে, সেগুলো এখনো ব্যাপক হারে মেনে চলা হচ্ছে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button