International

গরিব নারীর দান করা ১ পিস ডিম যেভাবে বিখ্যাত হয়ে উঠলো

এটা সোনার ডিম নয়, বাজার থেকে মাত্র ছয় টাকায় কেনা সাধারণ একটা মুরগির ডিম। সেই ডিমটাই নিলামে চড়ানো হয়েছিল। আর তার দাম উঠেছে সোয়া দুই লাখ ভারতীয় টাকা।

এই ঘটনাটি ভারত শাসিত কাশ্মীরের। মাত্র ছয় ভারতীয় টাকা দামের ডিমটা নিলামে সোয়া দুই লাখে বিক্রি হওয়ার ঘটনা এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় একজন গরিব নারীর দান করা ১ পিস ডিমও যে মহামূল্যবান হয়ে উঠতে তারই একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে এই ঘটনাটিকে তুলে ধরছেন অনেকেই৷ আর তা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে নেটিজেনদের মাঝে।

ঘটনাটির শুরু সোপোর জেলার মাল মাপানপুরা গ্রামের একটি মসজিদ থেকে।

মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে ঈদ উপলক্ষে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা নগদ অর্থ আর বিভিন্ন সামগ্রী দান হিসাবে সংগ্রহ করবে।

কেউ নগদ অর্থ দিয়েছেন, কেউ থালা বাসন, মুরগি বা চাল দান করেছেন।

মসজিদ কমিটির এক সদস্য নাসির আহমেদ বলছিলেন, “আমরা দান সংগ্রহ করছিলাম। তার মধ্যেই একটা ছোট বাড়ি থেকে এক নারী মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসেন। আমার কাছে এসে তিনি একটা ডিম দিয়ে বলেন তার দানটা যেন আমি গ্রহণ করি। ওই নারী খুবই গরীব। একটা ভাঙাচোরা ছোট্ট ঘরে একমাত্র ছেলের সঙ্গে বাস করেন।”

তিনি আরও বলছিলেন, “ভারতীয় ছয় টাকা দামের একটা সাধারণ ডিম ওটা। কিন্তু অত্যন্ত গরীব ওই নারী যে আবেগ নিয়ে আল্লাহর নামে দান করেছিলেন, সেটাই ওই ডিমটাকে অমূল্য করে তুলেছে।”

ডিমটাকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনদিন পরে ডিমটা ফেরত নিয়ে নেওয়া হবে, এরকম সিদ্ধান্তও জানানো হয়। প্রথম দুদিনে ১০, ২০, ৩০ আর ৫০ হাজার ভারতীয় টাকা পর্যন্তও দর উঠেছিল। প্রতিবারই ডিমটা ফেরত নিয়ে নেওয়া হতো। এরপর শেষ দিনে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত নিলাম চলবে, এরকম একটা ঘোষণা করা হয়। শেষ পর্যন্ত সোয়া দুই লাখ ভারতীয় টাকায় ডিমটি বিক্রি হয়।

ফেসবুকে মো: মমিনুল লিখেছেন, আমাদের মসজিদেও ফল,শাকসবজি, মুরগি, ডিম এগুলো তিন-চার গুন চড়া দামে জুম্মার নামাজ পর ডাক করে কিনে। আসলে এখানে পরোক্ষভাবে দান করার উদ্দেশ্য থাকে। যেহেতু টাকাটা মসজিদের ফান্ডে জমা হয় তাই মানুষজন অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনতে পিছপা হয় না।

কে এম ইমরান লিখেছেন, পুরো নিউজটা পড়লাম। আল্লাহর রাস্তায় ছোট্ট একটা দানও আল্লাহ শত শত গুন বাড়িয়ে দিতে পারেন।শুধু নিয়তটা সহিহ হতে হবে।

সৌদিয়া জাহান লিখেছেন, এক গরীব, সহায় সম্বলহীন মানুষের মাত্র ৬ টাকার বিনিময়ে মসজিদের ছাদ তৈরি হচ্ছে, মহিলার দান সৃষ্টিকর্তা কবুল করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।

আল আমিন খান লিখেছেন, দান হওয়া চাই এমন। ডিম দানকারীর নিয়্যত সঠিক ছিল। নিলামে সর্বোচ্চ মুল্য দানকারীও সঠিক। এর দ্বারা হালাল উপার্জনকারী দাতা পেল মসজিদ কমিটি। যারা যারা রাস্তায় রাস্তা মসজিদের উন্নয়নের নামে চাদাবাজী করে তাদের জন্য ঘটনাটি শিক্ষনীয় হয়ে থাকবে।

ইউনুস শামিম লিখেছেন, দুনিয়ার বহু অখ্যাত, আসমানে বিখ্যাত। ডিম দাতা গরীব মানুষটার দান রব কীভাবে কবুল করে নিলেন, স্বয়ং রব কতোটা পছন্দ করলেন তার দান, এ যেন তারই এক ক্ষুদ্র নমুনা তাকে দেখালেন।

কাজী মারুফ লিখেছেন, অসাধারণ সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, যিনি ডিমটি মসজিদে দান করেছেন, আর যিনি ক্রয় করেছেন…।

ধনঞ্জয় রায় মন্তব্য করেছেন, অসাধারণ নিউজ,, এ এক বিশাল অনুভূতির ছোয়া পেলাম। নমস্কার ডিম দাতা, গ্রহিতা ও নিলাম কমিটির সদস্য বৃন্দকে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button