বন্যাকবলিত কেনিয়ায় বাঁধ ফেটে নিহত অন্তত ৪৫
কেনিয়ার রিফট ভ্যালিতে একটি শহরের কাছে বাঁধের পার ফেটে অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির পুলিশ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে। এতে মার্চ থেকে মে মাসে ভেজা মৌসুমে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ১২০ জন অতিক্রম করল। দেশটি ইতিমধ্যে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত।
পূর্ব আফ্রিকায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেখানে এল নিনোর আবহাওয়ার ধরণ দেখা যাচ্ছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাটি নাকুরু কাউন্টির মাই মাহিউর কাছে রাতের শেষের দিকে ঘটেছে। এতে পাহাড়ের নিচের দিকে পানি প্রবাহিত হয় এবং সব কিছুকে গ্রাস করে।
মারাত্মক বন্যা একটি রাস্তাকে প্লাবিত করেছে, গাছ উপড়ে ফেলেছে, বাড়িঘর ও যানবাহন ভেসে গেছে।
নাকুরু কাউন্টি পুলিশ সদর দপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফোনে বলেছেন, এখনো সেই বাঁধের ট্র্যাজেডি থেকে ৪৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকারীরা এখনো অনুসন্ধান করছেন।
জরুরি প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় বাসিন্দা স্টিফেন এনজিহিয়া এনজোরোজ বলেছেন, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে ১২ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু অনেকের জন্য অনেক দেরি হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা গাছের কাছে রাখা কিছু মৃতদেহ সংগ্রহ করেছি এবং আমরা জানি না কতজন মাটির নিচে আছে।’
এদিকে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিথুরে কিনডিকি বলেছেন, সরকার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের এখতিয়ারের সব সরকারি ও বেসরকারি বাঁধ ও জলাশয়গুলো পরিদর্শন করতে।
দেশটির কর্মকর্তারা শনিবার বলেছিলেন, মার্চ থেকে কেনিয়ায় ৭৬ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
অঞ্চলজুড়ে অশান্তি
বর্ষা প্রতিবেশী তানজানিয়াতেও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
সেখানে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১৫৫ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ বুরুন্ডিতে প্রায় ৯৬ হাজার মানুষ কয়েক মাসের অবিরাম বৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘ ও দেশটির সরকার এই মাসের শুরুতে এ তথ্য দিয়েছে।
সেই সঙ্গে উগান্ডাও ঝড়ের শিকার হয়েছে। নদীর তীর ফেটে গেছে। দেশটিতে দুইজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং কয়েক শ গ্রামবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এল নিনো হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট জলবায়ু প্যাটার্ন, যা সাধারণত বিশ্বব্যাপী তাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। এতে বিশ্বের কিছু অংশে খরা এবং অন্যত্র ভারি বৃষ্টিপাত হয়। গত বছরের শেষের দিকে কেনিয়া, সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ায় বৃষ্টি ও বন্যায় তিন শতাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন মার্চ মাসে বলেছে, এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা পাঁচটি শক্তিশালী এল নিনোর মধ্যে সর্বশেষটিও একটি।