Hot

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র: নির্বাচন নিয়ে টেনশন ছিল, সামনে ‘অস্বস্তিকর’ ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই

ঢাকায় দু’দিনের ব্যস্ত কর্মসূচি শেষ করেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু। সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে গুরুত্বপুর্ণ বৈঠক করেছেন। মতবিনিময় করেছেন নাগরিক সমাজ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং অধিকার কর্মীদের সঙ্গে। তরুণ সমাজের সঙ্গে বসেছেন, তাদের ভাবনাগুলো শুনেছেন। এত ব্যস্ততার মধ্যে পুরো একটি সন্ধ্যা কাটিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্ট তরুণ তুর্কিদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে দই ফুচকারও স্বাদ নিয়েছেন। বিদায়ের আগে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। জার্সি গায়ে মাঠে নেমে তাদের প্রতি শুভ কামনা জানিয়েছেন। বুধবার মধ্যাহ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি মোটাদাগে কিছু বিষয় খোলাসা করেন।

বিজ্ঞাপন নির্বাচনের আগে-পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে যে টানাপড়েন বা উত্তেজনা ছিল সেটাও অ্যাড্রেস করতে ভোলেননি বা এড়িয়ে যাননি তিনি।

 বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় বহুল আলোচিত মার্কিন সহকারী  পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু খোলাসা করেই বলেন নির্বাচন পরবর্তী সরকারের সঙ্গে কঠিন সব ইস্যু নিয়ে তারা কতটা সহজভাবে কাজ করবেন। লু’র সফরের সমাপনীতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস নিজস্ব এক্স হ্যান্ডেল (সাবেক ট্ইুটার) থেকে তার সফরকালীন আলোচনার বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকের ছবি সংবলিত বার্তায় বলা হয়, সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে বাংলাদেশের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জনশক্তি বৃদ্ধি, নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধকে আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে ডনাল্ড লু’র বৈঠকের ছবি সংবলিত মার্কিন দূতাবাস প্রচারিত বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি, পরিবেশবান্ধব ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে আছে আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি বাণিজ্য, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ, কৃষিখাত থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনা, জলবায়ুর ক্ষেত্রে নারী ও তরুণ সমাজকে ক্ষমতায়ন করা। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছে তাই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে ডনাল্ড লু’র সাক্ষাৎ ছিল খুশি হওয়ার মতো বিষয়। 

নির্বাচন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে টেনশন ছিল, তাকে এড়িয়ে সামনের বিদ্যমান ‘অস্বস্তিকর’ ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই: লু
এদিকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু বলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচন নিশ্চিতে গত বছর জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেক চেষ্টা করেছে, যা দুই দেশের সম্পর্কে খানিকটা উত্তেজনা তৈরি করেছিল। কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্র এখন আর পেছনে তাকাতে চায় না বরং সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে কেবলই সামনে তাকাতে চায়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পৃথক বৈঠক শেষে সংক্ষিপ্ত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বাংলাদেশ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করেন। সেগুনবাগিচায় জনাকীর্ণ সংবাদ ব্রিফিংয়ে লু তার সফর বিষয়ক বিবৃতি পড়ে শোনান। তবে উপস্থিত সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন গ্রহণ করেননি। সবার প্রতি সালাম-শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে লু বলেন, আমি গত দু’দিন ধরে ঢাকায় আছি, দুই দেশের জনগণের মধ্যে নতুন করে আস্থা-বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করার জন্য। এখানে একটি  অবাধ, সুষ্ঠু এবং অহিংস নির্বাচন নিশ্চিতে গত বছর জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেক পরিশ্রম করেছে। যা আমাদের সম্পর্কে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি করেছিল। যদিও এটি আমাদের সম্পর্কে খুবই সাধারণ বিষয়। কিন্তু এখন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই, মোটেও পিছনে ফিরতে চাই না।

আমরা আমাদের সম্পর্ককে দৃঢ় করার উপায় খুঁজে বের করতে চাই। দুই দেশের মধ্যে এখনো অনেকগুলো অস্বস্তিকর ইস্যু রয়েছে জানিয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যার মধ্যে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, ব্যবসায়িক পরিবেশের সংস্কারসহ আরও অনেক ইস্যু রয়েছে। যা নিয়ে আমি আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই হার্ড ইস্যুগুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা চলমান থাকবে। পাশাপাশি দু’দেশের সম্পর্কের ইতিবাচক অনেক বিষয় রয়েছে। যেখানে আমাদের পরস্পরের সহযোগিতা দরকার। ডনাল্ড লু বলেন, আমরা এখানে নতুন নতুন বিনিয়োগের কথা ভাবছি। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ অবারিত করা, ক্লিন জ্বালানিসহ ভবিষ্যতের জন্য আমাদের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে। ডনাল্ড লু তার বিবৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি বিষয় উল্লেখ করেন, তা হলো দুর্নীতি। তিনি বলেন, আজকে আমি মন্ত্রীদের সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা করেছি। সরকারি কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। এর মাধ্যমে যেসব কর্মকর্তা দুর্নীতি করেছে তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে পারি। 

ডলার সংকট কি কাটবে, কবে কোম্পানিগুলো বিনিয়োগের অর্থ ফেরত পাবে? জানতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: এদিকে সফরের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন সহকারী মন্ত্রী কবে নাগাদ বাংলাদেশ ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে বাংলাদেশ, আর কবে আটকে থাকা অর্থ পুরোপুরি নিতে পারবে আমেরিকান কোম্পানিগুলো? সে বিষয়ে একটি ধারণা পেতে  চান। উপদেষ্টার গুলশানের বাসভবনে মঙ্গলবার রাতে নৈশভোজে এ বিষয়ে কথা হয়। নৈশভোজ শেষে নিজ বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সালমান এফ রহমান। এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী এম এ আরাফাত উপস্থিত ছিলেন। সালমান এফ রহমান বলেন, ডলার-সংকট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছেন, ‘মার্কিন কোম্পানি যারা এদেশে ব্যবসা করছে, তারা অভিযোগ করছে, তাদের অর্থছাড়ে দেরি হচ্ছে। তারা এটাও বলেছেন, আমরা বুঝি বাংলাদেশের রিজার্ভের ওপর চাপ রয়েছে। বাংলাদেশ কতো দিনে এ অর্থ পরিশোধ করতে পারবে, তা জানতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী বাংলাদেশের রিজার্ভ বাড়বে। আমাদের রপ্তানি বাড়বে, রেমিট্যান্সও বাড়ছে। মার্কিনদের জানিয়েছি যে, যদিও আমাদের অর্থ পরিশোধে একটু সমস্যা হচ্ছে, একটু দেরি হচ্ছে, তবে আমাদের অর্থছাড় বন্ধ নেই, এটি চলমান। আমরা একেবারে অর্থছাড় করা বন্ধ করিনি। নৈশভোজে চীন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

ভিসা নীতি নিয়েও কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি। ডনাল্ড লু’র সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন সালমান এফ রহমান। সেখানে অনানুষ্ঠানিক অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, লু’র এবারের সফরে সেই নৈশভোজ কাম আলোচনাই ছিল মুখ্য। সেই বৈঠকেই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের তরফে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার আগ্রহ ব্যক্ত করা হয়। ডনাল্ড লুকে উদ্ধৃত করে সালমান এফ রহমান বলেন, এ নিয়ে তিনি একটি কথাই বলেছেন। উই ওয়ান্ট টু রিবিল্ড দ্য ট্রাস্ট। আমরা যেটা বুঝেছি তা হলো আমেরিকা আমাদের সঙ্গে আস্থার সম্পর্কটা আরও গভীর করতে আগ্রহী। নির্বাচনের আগে-পরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপড়েন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, এটা একটা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ ছিল। আজকের আলোচনায় (নৈশভোজে) তারা সে প্রসঙ্গে টানেননি, আমরাও নিজে থেকে তুলিনি। তারা যেটা চাচ্ছেন তাহলো, ইলেকশনের পরে আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা ভালো করতে। আমরা সেটা স্বাগত জানিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, আমরা সবাই জানি, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত, নির্বাচনের সময় এমনকি নির্বাচনের পরেও উনাদের তরফে একটা রিজার্ভেশন ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রীকে, সেটার পরে আমরা ভাবলাম যে, নির্বাচনটা তারা মেনে নিয়েছেন। আমাদেরকে এবং সরকারকেও তারা মেনে নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চিঠিটা খুবই পজেটিভ চিঠি ছিল। তারপর থেকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এনগেজমেন্ট শুরু করি। র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জবাবে লু বলেছেন, দুটো ইস্যুই যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের এখতিয়ারাধীন। এখানে হোয়াইট হাউস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইতিবাচক রয়েছে। ডনাল্ড লু তার আগের সফরে নিজের মুখে র‌্যাবের উন্নতির প্রশংসা করেছেন জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, র‌্যারের উন্নতির কথা আগের সফরে লু জনসম্মুখেই বলেছেন।

নৈশভোজে বিএনপি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বিএনপি, বিরোধী দল, রাজনীতি, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন- নিয়ে নৈশভোজে কোনো কথা হয়নি। নৈশভোজে সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের বোর্ড সদস্য রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান এবং ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ। অন্যদিকে মার্কিন প্রতিনিধিদলে ডনাল্ড লুর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর চিফ অব স্টাফ নেইট হাফট, রাজনৈতিক ইউনিটের প্রধান সারাহ এল্ডরিস, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্, দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর আর্তুরো হাইন্স এবং পলিটিক্যাল অফিসার ম্যাথ্যু বেহ। রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া নৈশভোজটি রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে শেষ হয়। 

নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতি ও নাগরিক অধিকারচর্চার বিষয়ে খোঁজ নিলেন ডনাল্ড লু: এদিকে সফরের প্রথম দিনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতিবিনিময় সভায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পাশাপাশি এখানকার অর্থনীতি, শ্রম অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জানতে চান লু। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারের চর্চা কতোটা অবাধে হচ্ছে, তাও জানতে চান ডনাল্ড লু। সেই বৈঠকে ফিলিস্তিন পরিস্থিতিও গুরুত্ব পায়। ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্-এর বাসায় এই মতবিনিময় সভা হয়। এতে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার এর সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর উইমেন ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, মানবাধিকারকর্মী মো. নুর খান, চাকমা সার্কেলের রানি ও মানবাধিকারকর্মী ইয়ান ইয়ান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্দোলনের সংগঠক সোহানুর রহমান এবং তরুণ সংগঠক মাহমুদা আক্তার (মনীষা) উপস্থিত ছিলেন। 

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য শুভকামনা ডনাল্ড লু’র: ওদিকে বুধবার বিকালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে শুভকামনা জানান ডনাল্ড লু। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ শুভকামনা জানান। সেখানে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে এক প্রীতি ম্যাচেও অংশ নেন ডনাল্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্। ম্যাচ শেষে ডনাল্ড লু সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছি। বাংলাদেশের জনগণ ক্রিকেটপাগল। যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট সিরিজের আয়োজন করতে পেরে সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করছে বলে আমরা খুব খুশি।

তিনি বলেন, আজকের প্রীতি ম্যাচে আম্পায়ার ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। তিনি একজন বিশ্বমানের আম্পায়ার। তিনি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন, এটি আমাদের জন্য আনন্দের। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দলের জন্য আমাদের শুভকামনা রইলো। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে বুধবার রাতে ঢাকা ছাড়বে। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে পৌঁছালে ডনাল্ড লু ও পিটার হাস্কে জার্সি ও ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। তাদের শুভেচ্ছা জানান বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান। এ সময় নারী ক্রিকেট দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ডনাল্ড লু গত ১৪ই মে ঢাকায় এসেছিলেন। ১৫ই মে মধ্যরাতে (১২টার পরে হওয়ায় এটি ১৬ই মে) তার ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতিতে ছিলেন। 

ডনাল্ড লু- পিটার হাস্ বললেন, ‘বাংলাদেশের ফুচকাই সেরা’: এদিকে মঙ্গলবার  সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানস্থ আমেরিকান ক্লাবে ভিন্নধর্মী এক আয়োজনে কিছু সময় কাটান ডনাল্ড লু ও পিটার হাস্। তারা উভয়ে বনে যান ‘শেফ’। এ সময় বেশ আগ্রহ ভরে দু’জন বাংলাদেশের ঝালমুড়ি ও ফুচকার স্বাদ নেন। মার্কিন দূতাবাসের প্রচারিত ভিডিও মতে, ফুচকা হাতে তুলে লু-হাস্ সমস্বরে বললেন, ‘বাংলাদেশের ফুচকাই সেরা।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button