দুই রাত সমুদ্রে ভেসেছে ৩৫ বাংলাদেশি, অতঃপর…
ভূমধ্যসাগরীয় মাল্টা উপকূলে দুর্দশাগ্রস্ত একটি নৌকায় থাকা ৩৫ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে মানবিক উদ্ধার জাহাজ ওশান ভাইকিং। উদ্ধার জাহাজটিতে থাকা বার্তা সংস্থা এএফপির একজন সাংবাদিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রবিবার (১৯ মে) রাত থেকে সোমবার (২০ মে) সকালের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করে এনজিও এসওএস মেডিটারানের উদ্ধার জাহাজ ওশান ভাইকিং।
অভিবাসীদের সবাই পুরুষ এবং তারা লিবিয়ার বেনগাজি উপকূল থেকে একটি ফাইবারগ্লাসের নৌকায় রওনা হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে এএফপি। মাল্টা এবং ইটালির যৌথ অনুসন্ধান জোন থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে জাহাজে তোলা হয়েছে।
জাহাজে তোলার পর সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। অভিবাসীদের মধ্যে অনেকেই হাইপোথার্মিয়া এবং গুরুতর ডিহাইড্রেশনে ভুগছিলেন। তাদের সবাইকে তাৎক্ষণিক গরম কম্বল, সুপেয় পানি, খাবার এবং কাপড় দিয়েছে ওশান ভাইকিংয়ের কর্মীরা।
উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানিয়েছে, তারা কমপক্ষে দুই দিন এবং দুই রাত সমুদ্রে ভেসেছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় এনজিও অ্যালার্ম ফোন ঝুঁকিতে থাকা নৌকার ব্যাপারে জানালে এসওএস মেডিটারানে তাদের উদ্ধার জাহাজকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠায়।
দক্ষিণ ফ্রান্সের মার্সেই ভিত্তিক এই এনজিওটি এএফপিকে জানিয়েছে, এই উদ্ধার অভিযানে আগে জাহাজটি ইটালির সিসিলির দিকে যাচ্ছিল।
ইটালি কর্তৃপক্ষ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে দেশটির অটোনা বন্দরে নামানোর অনুমতি দিয়েছে। যেখানে যেতে আড়াই দিনেরও বেশি সময় লাগবে। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে ওশান ভাইকিং জাহাজের পরিচালনা সংস্থা। কারণ বন্দরটি উদ্ধারের স্থান থেকে অনেক দূরে।
চলতি মাসের শুরুতে ইটালি বাংলাদেশকে নিরাপদ দেশের তালিকায় যুক্ত করেছে। অর্থাৎ এখন থেকে বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদন দ্রুততর সময়ে প্রক্রিয়াকরণ করা হবে। এর আগে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময় নিয়ে বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদন যাচাই করা হতো।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে তিন হাজার ১০৫ জন অভিবাসী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।