থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি রকেট ইঞ্জিনে চাঁদে যাবে ভারত
থ্রিডি প্রিন্টারে নতুন ধরনের রকেট ইঞ্জিন তৈরিতে বেশ কিছুদিন ধরেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে ভারত। এবার থ্রিডি প্রিন্টারে রকেট ইঞ্জিন তৈরি ও তা উৎক্ষেপণে সাফল্য পেয়েছেন ভারতীয় প্রকৌশলীরা। মহাকাশে যাওয়া–আসা বেশ ব্যয়বহুল। অনেক সময় এক ইঞ্জিন একবার ব্যবহারের সুযোগ থাকে। এ কারণে ব্যয়বহুল ইঞ্জিন তৈরি করা ভারতের মতো তুলনামূলক কম বাজেটের দেশের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। সেই সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে তৈরি যন্ত্রাংশের মাধ্যমে রকেটের ইঞ্জিন তৈরি করছে ভারত। নতুন পদ্ধতিতে তৈরি এই ইঞ্জিন তৈরিতে সময় সাশ্রয় হয় বলে প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।
ভারতের পিএসএলভি নামের রকেটে একটি পিএস–৪ ইঞ্জিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ মে। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) তরল জ্বালানিযুক্ত রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা করে। ইঞ্জিনটি কার্যকরভাবে নাইট্রোজেন টেট্রোক্সাইড ও মনোমিথাইল হাইড্রাজিনের একটি হাইপারগোলিক মিশ্রণকে ভালোভাবে পুড়িয়ে প্রকৌশলীদের সামনে নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। ৬৬৫ সেকেন্ড ধরে ইঞ্জিনটি জ্বালানি পোড়ানোর সক্ষমতা দেখায়। ইঞ্জিনটি ভবিষ্যতে ভারতের পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেলে ব্যবহৃত হবে।
ইসরো জানিয়েছে, ইঞ্জিন তৈরি করতে লেজার পাউডার বেড ফিউশন নামের নতুন কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনে আগে ১৪টি অংশ ছিল, যা প্রিন্ট করার কারণে একটিতে এককভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রিন্ট করার কারণে ১৯টি সংযোগে আর ঢালাইয়ের প্রয়োজন হবে না। নতুন প্রক্রিয়ায় ইঞ্জিন তৈরি করতে মাত্র ১৩ দশমিক ৭ কিলোগ্রাম ধাতবগুঁড়া ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারণভাবে ইঞ্জিন তৈরিতে ৫৬৫ কেজি উপাদান ব্যবহার করা হয়।
১৪৫ ফুট লম্বা পিএসএলভি রকেটে এখন ভারত মহাকাশ অভিযান পরিচালনা করছে। রকেটের মাধ্যমে ৩৭০ মাইল উচ্চতায় ১ হাজার ৭৫০ কেজি পণ্য পরিবহন করা যায়। সাশ্রীয় এই ইঞ্জিনের মাধ্যমে ভারত আরও দ্রুত মহাকাশ অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত চাঁদে ঘাঁটি স্থাপন করতে চায়। সেই লক্ষ্যে নতুন ইঞ্জিন ভারতকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে।