Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

মেট্রো ম্যাজিকে গতি বাড়বে ঢাকার, মাকড়সার জালের মতো হবে ১৪১ কিমি. পথ

২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা শহরে ৬টি মেট্রো লাইন * মেট্রোর সুফল পেতে সমন্বিত পরিবহণব্যবস্থা দরকার-বিশেষজ্ঞ

বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর রাজধানী ঢাকায় মেট্রো ম্যাজিক দিয়ে গতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে ১৪১ কিলোমিটারজুড়ে মাকড়সার জালের মতো মেট্রোরেল সংযোগ গড়ে তোলা হবে। এতে দৈনিক প্রায় ৫০ লাখ ট্রিপে যাত্রীরা যানজটের ধকল সামলে অল্পসময়ে চলাচল করতে পারবেন। মেট্রোরেল বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িতদের মতে, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে বছরে যানজট বাবদ ক্ষতি কমবে ৪৪ হাজার কোটি টাকা। সময় অপচয় রোধের খরচ কমাবে ৩ হাজার ৫৮ কোটি টাকা এবং পরিবহণ পরিচালনার ব্যয় হ্রাস পাবে ৪৩০ কোটি টাকা। আর বছরে কার্বন নিঃসরণ করবে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৭৫৫ টন।

তারা জানান, ২০২২ সালে রাজধানী ঢাকার পরিবহণের ঘণ্টায় গড় গতি ছিল ৪.৮ কিলোমিটার, যেটা হাঁটার গতির চেয়েও কম। একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার হাঁটতে পারেন বলে বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে। অথচ এক যুগ আগেও রাজধানীর যানবাহনের ঘণ্টায় গড় গতিবেগ ছিল ২১ কিলোমিটার। ২০২০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে আসে, বাংলাদেশ চলতি দশকে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো চলমান নগর পরিবহণ অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর সুফল পেতে শুরু করবে। বাস্তবতা হলো, ইতোমধ্যে নগরবাসী সে সুফল ভোগ করছে। পরিকল্পনাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে আরও সুফল পাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০৩০ সালে ঢাকায় যাত্রী ট্রিপ হবে ৫ কোটি, যার ১০ শতাংশ পরিবহণ করতে পারবে মেট্রোরেল। বাকি ৯০ ভাগ ট্রিপ মেট্রোরেলের বাইরে চলাচল করবে। এজন্য ঢাকার যানজট নিরসন ও চলাচলের গতি বাড়াতে মেট্রো প্রকল্পের পাশাপাশি সমন্বিত পরিবহণব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায় স্বপ্নের মেট্রোর কাঙ্ক্ষিত সুফল পাবে না এই মেগাসিটির বাসিন্দারা।

মেট্রোরেল নির্মাতা ও পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নাধীন মেট্রোরেল লাইনের মধ্যে আছে-এমআরটি লাইন-৬, দৈর্ঘ্য ২১.২৬ কিলোমিটার; এমআরটি লাইন-১, দৈর্ঘ্য ৩১.২৪ কিলোমিটার; এমআরটি লাইন-৫-এর নর্দান রুট, দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার; এমআরটি লাইন-৫-এর সাউদার্ন রুট, দৈর্ঘ্য ১৭.২০ কিলোমিটার; এমআরটি লাইন-২, দৈর্ঘ্য ৩৫ কিলোমিটার এবং এমআরটি লাইন-৪, দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার। প্রথম পর্যায়ে অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে ১৪০.৭০ কিলোমিটার মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে অর্ধেকের কিছু বেশি অংশে হবে উড়াল এবং বাকি অংশ পাতাল পথে নির্মাণ হবে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে খরচ হতে পারে আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা; যা সময়, নির্মাণসামগ্রী ও ডলারের দামের ওপর নির্ভর করবে।

ঢাকায় ৬ মেট্রোরেল : ঢাকার যানজট হ্রাস করে কর্মঘণ্টা বাড়ানো এবং পরিবেশ উন্নয়নে সরকার ৬টি মেট্রোরেল বাস্তবায়ন করতে চায়। ইতোমধ্যে কয়েকটির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পগুলোর বিদ্যমান অবস্থা-

এমআরটি লাইন-১ : এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের দুই অংশ থাকবে। একটি অংশ পাতাল পথে যাবে আর অপরটি উড়াল পথে। দুটি অংশের দূরত্ব হবে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশ পাতাল পথে যাবে, এ অংশের দূরত্ব ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এ রুটে স্টেশন সংখ্যা ১২টি, সম্প্রতি এই অংশের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। কুড়িল প্রগতি সরণি সড়কের একাংশ বন্ধ করে কাজ চলছে। আর নতুনবাজার থেকে কুড়িল হয়ে পূর্বাচল দিয়ে রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত যাবে। এ রুটের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। এ রুটের স্টেশন সংখ্যা ৯টি, ইতোমধ্যে এ রুটের নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় চিন্তা করা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। এ মেট্রোরেলে দৈনিক ৮ লাখ যাত্রী পরিবহণ করতে পারবে।

এমআরটি লাইন-২ : এমআরটি লাইন-২ উড়াল ও পাতাল দুভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। গাবতলী থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত চলবে এই ট্রেন। নিউমার্কেট, গুলিস্তান হয়ে একটি অংশ সদরঘাট যাবে এবং একটি অংশ সাইনবোর্ড হয়ে নারায়ণগঞ্জ যাবে। জি-টু-জি ভিত্তিতে অথবা সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বমূলক পদ্ধতিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের প্রাথমিক স্টাডি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হবে ৩৫ কিলোমিটার। গাবতলী থেকে মুগদা পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে যাবে। আর মুগদা থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত উড়াল পথে যাবে। তবে নতুন যুক্ত হওয়া গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত কীভাবে তৈরি হবে, তা সংশ্লিষ্টরা জানাতে পারেননি। ২০৩০ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচের ধারণা করা হচ্ছে।

এমআরটি লাইন-৪ : এমআরটি লাইন-৪ উড়াল পথে নির্মিত হবে। ঢাকার কমলাপুর থেকে সায়েদাবাদ, শনিরআখড়া ও কাঁচপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর পর্যন্ত যাবে। এ মেট্রো রুটের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১৬ কিলোমিটার। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়নি। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা অনুসন্ধান কাজ চলমান। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হতে পারে বলে জানা গেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে। এ প্রকল্পের কাজও ২০৩০ সালে শেষ হতে পারে।

এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুট : এমআরটি লাইন-৫-এর নর্দান রুটের কাজ ২০২৮ সালে শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত যাবে। পাতাল ও উড়াল দুভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার, এ রুটে ১৪টি স্টেশন থাকবে। প্রকল্পের প্রাথমিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। এ রুটে প্রতিদিন ১০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। ২০২৮ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

এমআরটি লাইন-৫ সাউদার্ন রুট : এমআরটি লাইন-৫-এর সাউদার্ন রুটে উড়াল ও পাতাল উভয় পথে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এ রুটের দৈর্ঘ্য ১৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্রকল্পের সমীক্ষা, বিভিন্ন ধরনের সার্ভে ও প্রকৌশলগত নকশা প্রণয়নের কাজ চলমান। গাবতলী থেকে আফতাবনগর পর্যন্ত ১২ দশমিক ৮০ কিলোমিটার পাতাল পথে যাবে। এ রুটের পাতাল স্টেশন হবে-গাবতলী, টেকনিক্যাল, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট, আসাদগেট, রাসেল স্কয়ার, পান্থপথ, সোনারগাঁও মোড়, হাতিরঝিল, নিকেতন ও আফতাবনগর পশ্চিম। আফতাবনগর কেন্দ্র থেকে আফতাবনগর পূর্ব হয়ে দাশেরকান্দি পর্যন্ত ৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার যাবে উড়াল পথে। এই রেলপথ নির্মাণকাজ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩০ সাল। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় চিন্তা করা হয়েছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা। এ মেট্রোপথে দৈনিক ৯ লাখ ২৪ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবেন।

এমআরটি লাইন-৬ : এমআরটি লাইন-৬ বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত চলাচল করবে এ মেট্রোরেল। এ অংশর দৈর্ঘ্য ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার, এই রুটের স্টেশন সংখ্যা ১৭টি। এই পথে দৈনিক ৫ লাখ ৪৩ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ পড়ছে প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের উত্তরা থেকে মতিঝিল অংশ চালু হয়েছে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের কাজ ৩৪.৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

তবে নতুন করে উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত এ মেট্রোরুটের ৭.৫০ কিলোমিটার অংশ সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেই সরকারের। দ্বিতীয় পর্যায়ের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকতে পারবে উত্তরা থেকে টঙ্গী অংশের কাজ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা এবং আশপাশের এলাকার জন্য ২০১৫ সালে প্রণীত সংশোধিত কৌশলগত পরিবহণ পরিকল্পনা (আরএসটিপি) অনুযায়ী, ২০১৬-২০১৭ সালে যাত্রী পরিবহণে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় দৈনিক গড়ে তিন কোটি ট্রিপ ছিল। বিদ্যমান কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালে ট্রিপ বেড়ে ৪ কোটি এবং ২০৩৫ সালে পাঁচ কোটি ট্রিপ হবে, তবে এর বাইরে রয়েছে পণ্য পরিবহণ। আরএসটিপিতে ট্রিপের সংজ্ঞা বলতে বোঝানো হয়েছে, একজন লোক একবার গেলে একটি ট্রিপ হয়। আরএসটিপিতে আরও বলা হয়েছে, ২০৩৫ সালে ঢাকায় ব্যক্তিগত গাড়িতে ট্রিপ হতে পারে ১০ দশমিক ১২ ভাগ, বাসে ৩৬ দশমিক ৮২ ভাগ, রিকশায় ৫ ভাগ, সিএনজিতে ১০ দশমিক ৪৯ ভাগ, হেঁটে ২৪ ভাগ, মোটরবাইকে ১ দশমিক ৮ ভাগ এবং মেট্রোরেলে চলাচল করবে ১১ দশমিক ৫২ ভাগ।

বিশেষজ্ঞ অভিমত : বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ৬টি মেট্রোরেল নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। মেট্রোরেলে চলাচলের গতি বাড়াবে সত্য, তবে শুধু এই যানবাহন দিয়ে ঢাকার যানজট নিরসন হবে না। এজন্য সমন্বিত বহুমুখী যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। সে ধরনের কোনো কাজ দেখা যাচ্ছে না, সরকারকে সেদিকে মনোযোগী হতে হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোসলেহ উদ্দীন হাসান বলেন, ঢাকায় শর্ট ও মিডিয়াম ট্রিপ ৬০ ভাগ। ঢাকার বেশির ভাগ ট্রিপের জন্য এমআরটিতে চড়তে হবে না। এজন্য সমন্বিত গণপরিবহণব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। হাঁটা, রিকশা, সাইকেল থাকবে এবং এগুলোকে মেট্রোরেলের সঙ্গে অন্যান্য পরিবহণব্যবস্থার কার্যকর সমন্বয় করতে হবে। তাহলে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে, সরকারকে সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেল ঢাকার যানজট কমিয়ে নগরজীবনকে স্বস্তিদায়ক করে তুলতে শুরু করেছে। সবকটি চালু হলে ঢাকার মানুষের চলাচল আরও সহজ হয়ে যাবে। পাশাপাশি মেট্রোরেল পরিবেশ উন্নয়ন ঘটাবে এবং যানজট নিরসন ও সময় হ্রাস করে অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto