Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

১৬৯৭০ কর্মী নিঃস্ব, সিন্ডিকেটের পকেট ভারী: মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

বাংলাদেশ জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো’র (বিএমইটি) ছাড়পত্র পেয়েও মালয়েশিয়ার বেঁধে দেয়া সময়ের ভেতরে যেতে পারেননি ১৬ হাজার ৯৭০ জন কর্মী। এসব কর্মী কবে যেতে পারবেন নাকি আর যেতে পারবেন না এ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। সংশ্লিষ্টদের অবহেলার বলি হওয়া এসব কর্মী যেতে না পারলেও ভারী হয়েছে সিন্ডিকেটের পকেট। মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও সিন্ডিকেটরা শ্রমিকদের কাছ থেকে ব্যক্তিভেদে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা করে নিয়েছে। এতে করে একদিকে যেমন শ্রমিকদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে অন্যদিকে গরু, জমি, স্বর্ণ বিক্রি ও ঋণ-ধার করা টাকাও গচ্ছা গেছে তাদের। জীবনের শেষ সম্বল এজেন্সি ও দালালদের হাতে তুলে দিয়ে পথে বসে গেছেন অনেকেই। আদৌ তারা এসব টাকা ফেরত পাবেন কিনা তার জবাব দিচ্ছে না মন্ত্রণালয়সহ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। শ্রমিকদের তোপের মুখে অনেক এজেন্সি অফিস বন্ধ করে গাঢাকা দিয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় বলছে, মালয়েশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ দিনের ভেতরে তারা তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ জমা দেবে।

বিজ্ঞাপন তদন্তে যাদের অবহেলা ও গাফিলতি পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালের ১লা জুলাই থেকে চলতি বছরের ৩১শে মে পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুক ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৩ জনকে অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।  এদের মধ্যে বিএমইটি ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে। মালয়েশিয়ায় গিয়ে পৌঁছেছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন। আর ৩১শে মে’র মধ্যে যেতে পারেনি ১৬ হাজার ৯৭০ জন। ভুক্তভোগীদের দাবি, মন্ত্রণালয় অভিবাসন খরচের যে লিমিট বেঁধে দিয়েছে তা মানেনি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। তাদের কাছ থেকে এসব এজেন্সি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা করে নিয়েছে। গড়ে ৫ লাখ টাকা করে ধরলে যারা যেতে পারেনি তাদের পকেট থেকে ৮৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা গচ্ছা গেছে। এই পুরো টাকা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের পকেটেই ঢুকেছে। বেকারত্ব দূর ও অভাব অনটনের পরিবারে সামান্য অর্থের যোগান দিতে তারা মালয়েশিয়া যাওয়ার স্বপ্ন বুনেছিলেন। অনেকেই মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ যোগাতে গিয়ে ঋণে জর্জরিত হয়েছেন। এখন মালয়েশিয়াও যেতে পারেনি উল্টো ঋণ পরিশোধের বাড়তি টেনশন নিয়ে দিন পার করছেন। 

সূত্রগুলো বলছে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর দুই বছর আগে চালু হওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলার কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় মানুষগুলো আরও অসহায় হয়েছে। মন্ত্রণালয়, বিএমইটি, বায়রা, ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতার কারণে এমনটি হয়েছে। সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এমন কিছু এজেন্সিকে কাজ দেয়া হয়েছে যাদের অনেকের অফিস পর্যন্ত নেই। ১ মাস আগে লাইসেন্স নিয়েছে এমন কোম্পানিকে রিক্রুটিংয়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে একটু যাচাই-বাছাই পর্যন্ত করা হয়নি। এসব এজেন্সি মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে টাকা আগেভাবে নিয়ে ভিসা প্রসেসিংসহ অন্যান্য অনুমতি ও কার্যক্রম সারতে গাফিলতি করে অতিরিক্ত সময় নিয়েছে। বিএমইটিও  ১ দিন আগে ছাড়পত্র দিয়েছে। শেষ মুহূর্তে এয়ার লাইন্সগুলোর ফ্লাইট সংকটের কারণে কর্মীরা বিদেশে যেতে পারেনি। সবমিলিয়ে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের বড় ধরনের অবহেলার বলি হয়েছে শ্রমিকরা। তবে মন্ত্রণালয় যাদের বৈধ ভিসা আছে তাদেরতে পাঠানো যায় কিনা এ নিয়ে ভাবছে। আগামী ৫ই জুন মালয়েশিয়ার দূতাবাসের সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের বৈঠক হবে। 

ময়মনসিংহের ত্রিশালের রাকিবুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য দালালকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দিয়েছি। এর মধ্যে সুদের উপর ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। আর বাকি যা ছিল তা সারাজীবন একটু একটু জমিয়েছি। এখন এই টাকা কীভাবে পরিশোধ করবো জানি না। পরিবারই চালাবো কি করে অন্যদিকে ঋনের বোঝা। শাহজাহান মুন্সী বলেন, সাড়ে ৫ লাখ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার চুক্তি করেছি। পুরো টাকা সুদে নিয়েছি। তিন মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে আমার সংসার। আমিই একমাত্র উপার্জনকারী। কতো স্বপ্ন ছিল। কিন্তু কিছু মানুষের অবহেলার কারণে সব মিইয়ে গেল। কোথায় যাবো কার কাছে বিচার দিবো জানি না। আদৌ যেতে পারবো কিনা সেটিও জানি না। দালালকেও খুঁজে পাচ্ছি না। আমার মতো অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। নড়াইলের রবিউল মোল্ল্যা বলেন, ৩টা গরু বিক্রি আর ধার-দেনা করে ৫ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। দালালের পেছন পেছন ঘুরেও যেতে পারিনি। এখন আমার টাকার কী হবে সেটি জানি না। এই ক্ষতি পোষানোর কোনো উপায় নাই।

মন্ত্রণালয় বলছে, মালয়েশিয়ার জন্য অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তা সবাইকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি কয়েকগুণ বেশি টাকা নিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কেউই অভিযোগ করেনি। নির্ধারিত সময়ের ভেতরে যাতে কর্মীরা মালয়েশিয়া যেতে পারে সেজন্য মন্ত্রণালয়ও তৎপর ছিল। বায়রাকে বলা হয়েছিল তাদের যেসব এজেন্সি লোক পাঠাবে এবং যাদেরকে পাঠাবে তার একটি তালিকা তৈরি করে মন্ত্রলালয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা সেটি দেয়নি। তবুও মন্ত্রণালয় কর্মীদের জন্য ২১টি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে।  ৩০শে মে ৪০০ জনের বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়। 

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন বলেন, ২৪ তারিখ থেকে যাদের বিমান টিকিট কনফার্ম হয়েছে তাদেরকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। টিকিট কনফার্ম ছাড়া ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। অনেকের আগেই ছাড়পত্র হয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সি ফিঙ্গার শেষের দিন নিয়েছে এমন হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিষয়ে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবে। আমরাও যারা যেতে পারেনি তাদের টাকা ফেরতের বিষয়ে কাজ করবো। ১৫ তারিখও প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, যারা যেতে পারবে না তারা যেন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য বায়রাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বায়রা তার কথা রাখবে। আমরাও সিরিয়াসলি দেখবো। যদি কেউ টাকা পরিশোধ না করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগেও ৫ হাজার মানুষ গিয়ে কাজ পায়নি। এখন যারা গিয়েছে তারা কাজ পাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা গিয়েছে তাদেরকে আমাদের পক্ষ থেকে রিসিভ করা হয়েছে। অ্যাম্বেসি থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। কাজ পায়নি এমন হয়নি। 

প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী গতকাল মন্ত্রণালয়ে বলেছেন, রিক্রুটিং এজেন্সি যখনই চেয়েছে আমরা ছাড়পত্র দিয়েছি। ছাড়পত্র দেয়ার প্রয়োজন আছে বলেই ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। পরে সবাই বলবে মন্ত্রণালয় ছাড়পত্র দেয়নি। শুধু ছাড়পত্র নয় বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করেছে। এখানে মন্ত্রণালয়ের কোনো গাফিলতি নাই। আমরা চেষ্টা করেছি সহযোগিতা করার জন্য। এখনো চেষ্টা করছি। সময় শেষ হওয়ার আগেই আমরা মালয়েশিয়া দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের সরকারকে চিঠি দিয়েছি সময় এক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য।

এখনো ঢাকায় মালয়েশিয়ার দূতের সঙ্গে আলাপ করেছি। যারা টাকা খরচ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেন মালয়েশিয়া পাঠানো যায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এয়ারলাইন্সগুলোর কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে আমাদের জানা নাই। এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ, এজেন্সি ও যারা টিকিট কেটেছে তারা জানে। আমাদেরকে কেউ অবহিত করেনি। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ান শ্রমবাজার খুলবে। মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না। যে দেশ শ্রমিক নিবে তাদের যদি পছন্দের কোনো এজেন্সির মাধ্যমে জনবল নিতে চায় এটা তাদের বিষয়। আমরা চাই আমাদের সব এজেন্টদের মাধ্যমে তারা কর্মী নিবে। বায়রার বিরুদ্ধে অভিযোগ সুনির্দিষ্ট। ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদেরকে ডাকা হবে। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। কেন তারা তালিকা দেয়নি সেটি জানতে চাওয়া হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto