নক্ষত্রমণ্ডল : যেখানে নক্ষত্রেরা ঝাঁক বেঁধে থাকে
এই যে আমরা রাতের আকাশে বিভিন্ন নক্ষত্রমণ্ডলের হরেক রকম নক্ষত্র দেখতে পাই—এগুলো কালেভদ্রে পারস্পরিক ভৌত সম্পর্কে জড়িত। অর্থাৎ, এক নক্ষত্রের সাথে অন্য নক্ষত্রের যোগটা নেই বললেই চলে। যদিও আমরা চোখে দেখে আলাদা করতে পারি না। একই জায়গায় মনে হয় সব।
বুঝি কত কাছের সবাই।
আকাশে নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ প্যাটার্ন নক্ষত্রবিদ্যা বা ‘অ্যাস্টেরিজম’ নামে পরিচিত। এই প্যাটার্নে চারপাশের নক্ষত্র গ্রিডের মতো ওপরে-নিচে নির্দিষ্ট গঠনে সজ্জিত থাকে। ‘বিগ ডিপার’ নামের প্যাটার্নে বিশাল উরসা প্রধান নক্ষত্রমণ্ডলের উজ্জ্বল নক্ষত্রের সাথে মিল পাওয়া যায়।
এমন নামকরণ করা হয়েছে মিশরীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লডিয়াস টলেমির লেখা জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত ‘অ্যালমাজেস্ট’ বই থেকে। বইটি রচনাকাল খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দী।
পৃথিবী তার নিজ অক্ষের ওপর পাক খায়, তাই আকাশের নক্ষত্রগুলোকেও চলমান বলে মনে হয়। ফলে আমরা নক্ষত্রগুলোকে পৃথিবীর অক্ষের সাথে সাথেই ঘুরতে দেখি।
নক্ষত্রেরগুচ্ছ উত্তর মেরুর দিকে শ্রেণিবদ্ধ হয়ে থাকে। গ্রহ ও চাঁদ একই রেখায় সূর্যকে প্রদক্ষিণ করলে গ্রহণ হয়। অর্থাৎ, পৃথিবী থেকে দেখা যায় চাঁদ সূর্যকে আড়াল করে দিচ্ছে। এক কথায় সূর্য, গ্রহগুলো, চাঁদ সকলেই মহাকাশীয় গোলকের সার্বজনীন কক্ষপথে চলমান রয়েছে। মহাকাশের সময়ের তুলনায় পৃথিবীর সময় অতি নগণ্য।
বৃত্তাকার গোলকের অতিক্রান্ত পথের নক্ষত্রপুঞ্জ ১৩টি চক্রের নক্ষত্রমণ্ডল।
মহাকাশীয় গোলকটি ৮৮টি নক্ষত্রমণ্ডলে বিভক্ত। আমরা পৃথিবী থেকে এদেরই অধিকাংশ সদস্যকে সাধারণ চোখে দেখতে পাই।
পরিমণ্ডল
এই আধুনিক যুগে এসেও অগণিত মানুষ বিশ্বাস করেন আকাশে গ্রহের অবস্থান, চাঁদের বাড়া-কমা, পর্যায় বা রাশিচক্র মাধ্যমে জীবন প্রভাবিত হয়। ধারণাটি ২ হাজার বছর আগের। সূর্যের জন্ম নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে। যাহোক, জ্যোতির্বিজ্ঞানে এসবের কোনো স্থান নেই। জ্যোতিবিজ্ঞানের কিছুই মানুষের ভাগ্য, প্রাণীর ভবিষ্যৎ গড়ে দেয় না বা নিয়ন্ত্রণ করে না।