Hot

ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট: ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব

‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেছেন। তিনি তার এই প্রস্তাবিত বাজেটকে ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে অপরাজেয় প্রত্যয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ সময় তিনি গত দেড় দশকের বিস্ময়কর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বাংলাদেশকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি নির্বাচনী ইশতেহারের অগ্রাধিকারে থাকা কার্যক্রমগুলোকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়েছেন। সে আলোকেই বাজেটের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ অর্জনের পথ নকশা প্রণয়ন করেছেন।

পথনকশার এই লক্ষ্য অর্জনে অর্থমন্ত্রী তার প্রথম বাজেটে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন। যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৪ দশমিক ২০ শতাংশ। এই বাজেটের মধ্যে পরিচালন তথা সরকার পরিচালনায় খরচ হবে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ব্যয় হবে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এই উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) পরিমাণ ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। 

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়েই এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রতিটি খাতে আধুনিক ও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী ভৌত, সামাজিক ও প্রযুক্তি অবকাঠামো বিনির্মাণের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। যাতে স্মার্ট অর্থনীতির সুফল দেশের সর্বশেষ প্রান্তে থাকা নাগরিকের কাছেও পৌঁছে দেওয়া যায়। 

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের মানুষ আমাদের সব গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের প্রকৃত দাবিদার। এ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজ আমরা দুর্দমনীয় গতিতে ছুটে চলেছি প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করে আমরা ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণ নিশ্চিত করেছি। এখন সামনে আরও এগিয়ে যাবার পালা।’

অর্থমন্ত্রীর নতুন বাজেট দেশের জিডিপি অনুপাতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ছোট বাজেট। এ ছাড়া অন্য বছরগুলোর মতো পাল্লা দিয়ে এবার বাজেটের আকারও বাড়নো হয়নি। আগে এক বছর থেকে অন্য বছর বাজেটের আকার বাড়ানো হচ্ছিল ১০ শতাংশের বেশি হারে। তবে এবার বাড়ানো হয়েছে ৫ শতাংশের কম। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘শুধু শুধু বাজেটের আকার বাড়িয়ে লাভ নেই।’ তাই তিনি তার পূর্বসূরিদের সঙ্গে পাল্লা না দিয়ে বাজেটের আকার যতটা সম্ভব ছোট রাখার চেষ্টা করেছেন।

সংশোধিত আকারকে ভিত্তি ধরলে আগামী বাজেটের আকার বাড়ছে ৮২ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাড়ানো হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। অবশ্য অর্থের সংস্থান কম থাকায় বাজেট ছোট রাখার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ)।

নতুন অর্থবছরের বাজেট ব্যয়ের অর্থ জোগাতে সরকার ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনা করেছেন। এর মধ্যে করসমূহ থেকে পাওয়া যাবে ৪ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা এবং করবিহীন আয় থেকে পাওয়া যাবে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। করসমূহ থেকে আয়ের মধ্যে প্রধান আয় হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়। আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডবহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব পাওয়া যাবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর আয় হিসাবে বিদেশী অনুদান পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

এবারের বাজেটের লক্ষণীয় বিষয় হলো আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার বাড়লেও ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হচ্ছে ৫ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

এই ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এই অঙ্ক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি থেকে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা কম। অবশ্য  সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৭৬ হাজার ২৯৩ কোটি থেকে ১৪ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বেশি।

এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের মূল অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা বেশি। অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, আর সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

দেশের জিডিপির তুলনায় এই ঘাটতির পরিমাণ ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪.৬ শতাংশ। যদিও এর আগের বছর এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল জিডিপির ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। এরপর প্রতি বছরই বাজেট ঘাটতি হয় পাচ শতাংশের কাছাকাছি অথবা পাচ শতাংশের বেশি ছিল। কোন কোন বছর এই ঘাটতি ছয় শতাংশে গিয়েও ঠেকেছে। এবার বাজেটের আকার কমিয়ে আনার পাশাপাশি বাজেট ঘাটতি কমিয়ে এনে অর্থমন্ত্রী বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। 

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের মূল লক্ষ্য দেশের বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা ও জিপিডি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা। তাই আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রভিশনাল হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার এপ্রিল পর্যন্ত ৮ দশমিক ৪ শতাংশ ছিল।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির আওতায় নেওয়া পদক্ষেপগুলোর সাফল্য নিশ্চিত করতে এর পাশাপাশি রাজস্ব নীতিতেও সহায়ক নীতিকৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতে ফ্যামিলি কার্ড, ওএমএস ইত্যাদি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। আশা করছি, আমাদের গৃহীত এসব নীতি-কৌশলের ফলে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে।’

২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের তুলনায় কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশে দাঁড়াবে। আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে যা ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতার উপসংহারে প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বলেছেন, চলমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং অভ্যন্তরীণ সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব খাতের যুগোপযোগী সংস্কার করা হবে। যাতে পর্যন্ত সম্পদের জোগান নিশ্চিত করা যায়। বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রেখে তা পূরণে বৈদেশিক উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো হবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে নিম্ন আয়ের মানুষকে সুরক্ষা প্রদানের কার্যক্রম বাড়ানো হবে।

সর্বোপরি তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ নেতৃত্বে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ আজ এক অনন্য উচ্চতায় আসীন। নানা প্রতিকূল পরিবেশেও নিরবচ্ছিন্ন উন্নয়নের ধারা বজায় রেখে বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি জ্ঞানভিত্তিক, সুখী-সমৃদ্ধ, স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন পূরণ করে আমরা এগিয়ে যাব অপার সম্ভাবনায়।’

সংশোধিত বাজেট ॥ নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করার আগে অর্থমন্ত্রী চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু মার্চ পর্যন্ত ব্যয়ের অগ্রগতি বিবেচনা করে সংশোধিত বাজেটে সরকারি ব্যয় ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি থেকে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কমসূচির আকার ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা হ্রাস করে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।

মূল বাজেটের সঙ্গে বাজেট ঘাটতির পরিমাণও কমানো হয়েছে। মূল বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এটি সংশোধন করে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা জিডিপির ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। মূল বাজেটে যা ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

বাজেটে যেসব বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ॥ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত করতে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রমকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেছেন, উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ বছরের নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যে অঙ্গীকার করেছি, সেগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মক্ষম সবার জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থান, কৃষির উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও শিল্পের প্রসার, উপযুক্ত স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকার ইত্যাদি নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষের জীবনমানের সুরক্ষা প্রদান করা হবে। সর্বোপরি নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক ভিত্তি রচনা হবে আমাদের এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য।

এবারের বাজেটে যেসব বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- ১. অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ২. বিজ্ঞান শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবন সহায়ক শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ৩. কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ৪. মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা উন্নত ও সম্প্রসারিতকরণ ৫. তরুণদের প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ৬. সম্ভাব্য সব সেবা ডিজিটালাইজ করাসহ সর্বস্তরে প্রযুক্তির ব্যবহার ৭. ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ ৮. ২০৩১ সালের মধ্যে অতি দারিদ্র্য নির্মূলকরণ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ সাধারণ দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনা ৯. শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ১০. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ ১১. জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিতামূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখা।

প্রস্তাবিত বাজেট মন্ত্রিসভার অনুমোদন ॥ বাজেট পেশ করার আগে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেয়। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত বিশেষ বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বাজেট অনুমোদন পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাজেট পেশের সুপারিশ করেন।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে মাহমুদ আলী প্রথমবারের মতো বাজেট উপস্থাপন করেন। দেশের ইতিহাসে এটি ৫৩তম বাজেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন টানা চতুর্থ মেয়াদের সরকারের প্রথম বাজেট এটি, আর দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ সরকারের ৬ মেয়াদের ২৬তম বাজেট। ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ শীর্ষক এই বাজেট আগামী ৩০ জুন পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

অধিবেশন রবিবার পর্যন্ত মুলতবি ॥ বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় সারাদিন সংসদ ভবনেই কাটান। দুপুরে বাজেট অনুমোদন উপলক্ষে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয় সংসদ ভবনে। সব প্রক্রিয়া শেষে প্রধানমন্ত্রী অপরাহ্ন ২.৫৫ মিনিটে নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় অর্থমন্ত্রীর হাতে ছিল বাজেট ডকুমেন্টস সংবলিত কালো ব্রিফকেস।

ঠিক কাটায় কাটায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে যায় সংসদের অধিবেশন। কোরআন তেলাওয়াত শেষে স্পিকার অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী স্পিকারের অনুমতি নিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন শুরু করেন। স্পিকারের অনুমতি নিয়েই ৮২ বছর বয়সী অর্থমন্ত্রী কিছু সময় দাঁড়িয়ে এবং পরবর্তীতে বসে তার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন। বাজেট বক্তৃতা উপস্থাপন শেষে অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের ব্যয় সংবলিত অর্থবিল ২০২৪ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন। বাজেট উপস্থাপন প্রক্রিয়া শেষে স্পিকার ড. শিরীর শারমিন চৌধুরী রবিবার পর্যন্ত সংসদ অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button