অর্থনীতির খরা ও বৈরী সময়ের বাজেট
প্রস্তাবিত বাজেট সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে – আবুল হাসান মাহমুদ আলী, অর্থমন্ত্রী
আর্থিক সংকটের কারণে এই প্রথম বছরওয়ারি হিসাবে বাজেটের আকার প্রায় ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এতে বাজেট ঘাটতিও কিছুটা কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যা দেশের আর্থিক কাঠামো ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ কমাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বাজেটের আকার কমার কারণে অনেক খাতেই বরাদ্দ কমেছে। এতে সামগ্রিকভাবে জনগণের সুবিধা কমবে। বরং নতুন করে করের বোঝা চাপবে সাধারণ মানুষের কাঁধে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছিল জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। আর নতুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে জিডিপির ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন করা হয় এ বাজেট। এরপর এতে অনুস্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বিকাল ৩টার কিছু আগে অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরনে ছিল লাল পাড়ের জামদানি শাড়ি এবং সাদা শার্টের ওপর হালকা নীল রঙের স্যুট-কোট পরিহিত হাস্যোজ্জ্বল অর্থমন্ত্রীর পায়ে ছিল কালো জুতা। হাতে ছিল মেরুন রঙের ব্রিফকেস। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদের কার্যক্রম শুরু করলে বিকাল ৩টায় স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। ৮২ বছর বয়সী আবুল হাসান মাহমুদ আলী স্বাস্থ্যগত কারণে নিজ আসনে বসেই বাজেট উপস্থাপন করেন। বিকাল ৩টা থেকে শুরু বিকাল ৪টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত টানা ১ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় অধিবেশন কক্ষে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া গ্যালারিতে বসে দেশি-বিদেশি অতিথি, কূটনৈতিক, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা বাজেট অধিবেশন ও উপস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে। উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার এ বাজেট।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার জিডিপির ১৪ দশমিক ২০ শতাংশ। জিডিপির অনুপাতে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ছোট বাজেট এটি। চলতি বছরের বাজেটের মূল আকার ধরা হয়েছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। সংশোধন করে তা কমিয়ে আনা হয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকায়। চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটের আকারকে ভিত্তি ধরলে আগামী বাজেটের আকার বেড়েছে ৮২ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটের আকার বাড়ানো হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে টানা চার বছর পর ১৫ শতাংশ জরিমানা হিসেবে আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আনা হয়েছে। এতে দেশের অর্থনীতিতে থাকা কালো টাকা অর্থনীতির মূল স্রোতে আসবে। যা চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এদিকে আর্থিক সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে এ বছর বাজেটের আকার কমানো হয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা ধান, গম, ভুট্টা, আলু, পিঁয়াজ, আটা, লবণ, ভোজ্য তেল, চিনিসহ ৩০ ধরনের নিত্যপণ্যের আমদানি শুল্ককর কর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে নিম্নআয়ের মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এ জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে অন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও খাদ্য ও কৃষিসহ অন্যান্যা প্রয়োজনীয় খাতে ভর্তুকির প্রস্তাব করা হয়েছে।
যদিও চড়া মূল্যস্ফীতির বাজারে এবারও ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে বহাল থাকা বিভিন্ন শিল্পের কর অবকাশ সুবিধা সংকুচিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আবার ব্যবসা-বাণিজ্যের সুুবিধার্থে করপোরেট কর হার শর্তসাপেক্ষে আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণে বিত্তশালীদের সম্পদের ওপর বলবৎ থাকা ১০ শতাংশ সারচার্জের বিদ্যমান কাঠামো অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। কর ব্যবস্থায় সংস্কার এনে সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি তাঁর বক্তৃতায় বলেছেন, নতুন আয়কর আইন ২০২৩ ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ই-টিআইএন প্রবর্তন করার পর ব্যাপকহারে নতুন করদাতা করনেটের আওতায় যুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ১ কোটি ই-টিআইএনধারী রয়েছে। এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত ৪১ লাখ ই-টিআইএনধারী আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। যাদের অধিকাংশই ব্যক্তি করদাতা। রাজস্ব আয় বাড়াতে প্রতি বছর নতুন নতুন করদাতার অনুসন্ধানের ঘোষণার মতো এবারও একই রকম ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে এর বিস্তরিত কোনো পরিকল্পনা তিনি তুলে ধরেননি। বরং কর ব্যবস্থায় সংস্কার আনার ব্যাপারে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের ওপরই করের বোঝা চাপাবে।
নতুন বাজেটের মূল আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এতে আয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। যদিও চলতি বছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ থেকে অনেক দূরে রয়েছে এনবিআর। কৃচ্ছ্র সাধনের পর ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটে অনুদানসহ ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি পূরণে কয়েকটি খাতকে উৎস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। এই খাত থেকে মোটা দাগে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর বাইরে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিদেশি উৎস থেকে ঋণ ও অনুদান নেওয়া হবে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার। এর পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত খাত হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থের জোগান দিতে সরকারকে এখন আগের চেয়ে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। ফলে বাড়ছে ঋণ পরিশোধের চাপ। পাশাপাশি ডলার-সংকট ও ডলারের বাড়তি দাম সরকারকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আরও বেশি চাপে ফেলেছে। আগামী অর্থবছরের জন্য সুদ পরিশোধে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
নতুন অর্থবছরে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যা ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ শতাংশ। নতুন রাজস্ব প্রাপ্তির মধ্যে বরাবরের মতো এবারও বেশির ভাগ আয় করার দায়িত্বটি থাকবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। নন-এনবিআর খাত থেকে আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত রাজস্ব প্রাপ্তির টার্গেট ধরা হচ্ছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
নতুন অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এডিপির আকার করা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি : আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। যদিও আর্থিক সংকটের কারণে পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। এদিকে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বড় জোর ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রায় কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপণ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ)।
মূল্যস্ফীতি : আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর মূল্যস্ফীতির চাপকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে আটকে রাখার ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ ১০ শতাংশের কাছাকাছি। মূল্যস্ফীতির এই চাপ সবচেয়ে বেশি রয়েছে খাদ্যে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, বর্তমানে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের বেশি। এবারের বাজেট বক্তৃতায় বারবার এসেছে মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক সংকটের কথা। এ জন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারও দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে থাকছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নয়ন ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর চ্যালেঞ্জের কথাও বলা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। অর্থাৎ নানা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের। দেশের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হবে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে আনবে সরকার। চলতি অর্থবছরের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আসন্ন বাজেটে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আসছে আমদানি শুল্ক কাঠামোয়। এসব প্রস্তাবের মধ্যে যেমন রাজস্ব আয় বাড়ানোর উপায় দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী, আবার দেশীয় শিল্প সুরক্ষায়ও কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বাতিল হবে এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা। এক্ষেত্রে তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন নতুন এই বাজেটে।
মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট : অন্যদিকে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) মওকুফ আছে, যার সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাট মওকুফের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থাৎ আগামী ১ জুলাই থেকে মেট্রোরেলের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসছে। এতে সরকারের রাজস্ব যেমন বাড়বে তেমন জনগণের খরচের বোঝাও বাড়বে। যা মূল্যস্ফীতিতে আরও বেশি চাপ তৈরি করবে। গতকাল উপস্থাপিত এই বাজেট দেশের ইতিহাসে ৫৩তম বাজেট, আর টানা চতুর্থ মেয়াদে গঠিত বর্তমান সরকারের এটি প্রথম ও টানা ১৬তম বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২১তম বাজেট। প্রথা অনুযায়ী আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করবেন অর্থমন্ত্রী।
এদিকে বৈশ্বিক সংকট, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, ডলারের বিপরীতে টাকার মান অবনমন, রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি, রিজার্ভের পতন ও ব্যালান্স অব পেমেন্টের ভারসাম্যহীনতায় সামগ্রিক অর্থনৈতিক অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে শঙ্কাই দেখছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট দেশের অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। মুদ্রার অবমূল্যায়নে বাড়ছে বৈদেশিক ঋণের ব্যয়, যা দেশের অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন বাজেটের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো (এমটিবিএফ) অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর পরবর্তী প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দারুণভাবে বিঘিœত করে। এর ফলে দেশের মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে যায়- যা দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রাক্কলনের চেয়ে অনেক বেশি।