Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

টাকার মান কমেছে বাজারে, বেড়েছে কাগজে-কলমে, গত সোয়া দুই বছরে ডলারের বিপরীতে বাস্তবে টাকার মান কমেছে ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ

দীর্ঘ সময় ধরে সংকটের কারণে ডলারের বিপরীতে বাস্তবে বা বাজারে টাকার মান কমে যাচ্ছে। আগামীতে আরও কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে কাগজে-কলমে বা প্রকৃত বিনিময় হারের হিসাবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান বেড়েই চলেছে। 

গত সোয়া দুই বছরে ডলারের বিপরীতে বাস্তবে টাকার মান কমেছে ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ। অথচ ওই সময়ে প্রকৃত বিনিময় হারে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেনি। বরং বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। যদিও বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। একই সঙ্গে প্রকৃত ও সাধারণ বিনিময় হারের মধ্যেকার ব্যবধানও অনেক বেশি বেড়ে গেছে।

ডলারের দামে এই ধরনের আচরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষকদের মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরাও রীতিমতো অবাক। তাদের মতে, এমনটি হওয়ার কথা নয়। তারা এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য নিবিড়ভাবে গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বুঝতে প্রকৃত বিনিময় হার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচকে কেন এমন মিসম্যাচ বা সমস্যা হলো? তা খতিয়ে দেখা উচিত। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকগুলোতে কোনো সমস্যা হওয়ায় এমনটি হয়ে থাকতে পারে।

সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ফেব্র“য়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে বৈশ্বিকভাবে পণ্যের দাম বেড়ে গিয়ে আমদানি ব্যয়ও বেড়ে যায়। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ে। ফলে আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে ডলারের সংকট দেখা দেয়। এরপর থেকে ডলারের দাম বাড়তে থাকে। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। 

দেশে ডলারের দাম দুইভাবে নির্ধারিত হয়। একটি হচ্ছে সাধারণ বা নমিনাল দর। এটি বাজারে ডলারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারের চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করে। এই দরেই বাজারে ডলার বেচাকেনা হয়।

অপরটি হচ্ছে রিয়েল এক্সচেঞ্জ রেট বা প্রকৃত বিনিময় হার। এটি বাংলাদেশের যেসব দেশের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক সম্পর্কে বেশি ওইসব দেশের মুদ্রাগুলো নিয়ে একটি বাস্কেট বা ঝুড়ি তৈরি করা হয়। এসব দেশের মুদ্রার বিনিময় হার, মূল্যস্ফীতির হার, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ও জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার বিশ্লেষণ করে প্রকৃত বিনিময় হার তৈরি করা হয়। তবে প্রকৃত বিনিময় হারটি বাজারে প্রয়োগ করা হয় না। এটি প্রতিযোগী বা বাংলাদেশের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে এমন দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান জানার জন্য তৈরি করা হয়। বর্তমানে ১৫টি দেশের মুদ্রা নিয়ে একটি বাস্কেট তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, চীন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ। 

সাধারণত ডলারের প্রকৃত বিনিময় হারের চেয়ে বাজার দর ৬ থেকে ১০ টাকা বেশি থাকে। রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো উৎসাহিত করতে ডলারের দাম প্রকৃত বিনিময় হারের চেয়ে বাজার দর একটু বেশি রাখা হয়। এর মাধ্যমে রপ্তানিকারক ও রেমিটরদের কারেন্সি বেনিফিট বা মদ্র্রা বিনিময় হারের সুবিধা দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, করোনার বেশ আগে থেকে এ সমস্যাটি হয়েছে। অর্থনীতির কোনো সূচকে গোলমাল হয়েছে হয়তো, যে কারণে বিনিময় হারে এমন বৈপরীত্য পাওয়া গেছে। তবে এখন দুই হারের মধ্যকার ব্যবধান বেশি মাত্রায় বেড়ে গেছে। এত বাড়াটা ঠিক হচ্ছে না। এখন ডলার সংকটের কারণেও এমনটি হতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাজারে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। মে মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৮ টাকায়। তবে এই দামে ব্যাংকে ডলার পাওয়া যায় না। আমদানিতে ১২৫ টাকায় ডলার কিনতে হচ্ছে। আগাম কিনলে প্রতি ডলার লাগছে ১৩০ টাকা। আমদানির বেশিরভাগ ডলারই এখন আগাম কেনা হচ্ছে। ফলে ওই সময়ে ডলারের দাম বেড়েছে গড়ে ৩২ টাকা থেকে ৪৪ টাকা। এ হিসাবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশ। 

একই সময়ের ব্যবধানে প্রকৃত বিনিময় হারের হিসাবেও ডলারের দাম বাড়ার ও টাকার মান কমার কথা। কিন্তু সেটি হয়নি। হয়েছে উলটোটি। ওই সময়ে ডলারের দাম কমেছে, বেড়েছে টাকার মান। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকৃত বিনিময় হারে ডলারের দাম ছিল ১১৪ টাকা ৬৪ পয়সা। মে মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০৭ টাকা ০৮ পয়সা। আলোচ্য সময়ে ডলারের দাম কমেছে ৭ টাকা ৫৬ পয়সা। অর্থাৎ ডলারের বিপরীতে টাকার মান বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। তবে বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই।

ডলারের প্রকৃত ও সাধারণ বিনিময় হারের মধ্যকার বৈপরীত্য শুরু হয় করোনার আগে থেকে। ওই সময়ে বাজার দরের চেয়ে প্রকৃত বিনিময় হারের দর বাড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারিতে বাজার দর যেখানে ৮৬ টাকা ছিল, সেখানে প্রকৃত বিনিময় হার ছিল ১১৪ টাকা ৬৪ পয়সা। বাজার দরের চেয়ে প্রকৃত বিনিময় হার বেশি ছিল ২৮ টাকা ৬৪ পয়সা। এটিকে একেবারেই অস্বাভাবিক মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষকরা। বাজার দরের চেয়ে প্রকৃত বিনিময় হারের দর কম হওয়া উচিত ছিল। একই বছরের মার্চে প্রকৃত বিনিময় হার আরও বেড়ে ১১৫ টাকা ৪৯ পয়সা ওঠে। ওই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষকরা বিনিময় হারের এই বৈপরীত্য নিয়ে কাজ করে অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে কিছু বৈষম্য দেখতে পান। পরে এগুলো পর্যায়ক্রমে ঠিক করা হয়। এর পর থেকে প্রকৃত বিনিময় হারের দাম কমতে থাকে এবং বাজারে ডলারের দাম বাড়তে থাকে। 

এর আগে প্রতি বছরই বাজার দরে টাকার মান কিছুটা কমলেও ২০২০ সালে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কিছুটা বেড়েছে। কারণ ওই বছরে আমদানি কম ছিল, ডলারের প্রবাহ বেশি ছিল। যে কারণে টাকার মান সামান্য বেড়েছিল।

২০২২ সালের মার্চ থেকে ডলারের দাম বাড়তে থাকে। ওই মাসে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা, ২০২৩ সালের মার্চে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৬ টাকা ৮০ পয়সায়। একই বছরের সেপ্টেম্বরে আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১১০ টাকা ৫০ পয়সায়। ডিসেম্বরে আবার ১১০ টাকায় নামে। এরপর থেকে ৮ মে পর্যন্ত ১১০ টাকায় স্থির ছিল। ৯ মে থেকে ডলারের দাম আবার বেড়ে ১১৮ টাকায় ওঠে।

একই সঙ্গে প্রকৃত বিনিময় হারে ডলারের দাম কমতে থাকে। ২০২৩ সালের মার্চে তা কমে দাঁড়ায় ১০২ টাকা ৬৫ পয়সা। সেপ্টেম্বরে আবার সামান্য বেড়ে ১০৬ টাকা ৫৭ পয়সায় ওঠে। ডিসেম্বরে আবার ১০২ টাকা ৪২ পয়সায় নেমে যায়। এ বছরের শুরু থেকে আবার এর দাম বাড়তে থাকে। মে পর্যন্ত ধীরে ধীরে বেড়ে ১০৭ টাকা ০৮ পয়সা দাঁড়িয়েছে।

২০২৩ সালের মার্চ থেকে বিনিময় হারে বৈপরীত্য দূর হতে থাকে, এখন অনেকটা স্বাভাবিক ধারায় ফিরছে। মে মাসে বাজারে ডলারের দাম ১১৮ থেকে ১৩০ টাকা। প্রকৃত বিনিময় হারে দাম ১০৭ টাকা ০৮ পয়সা। এ হিসাবে দুই ধরের মধ্যকার ব্যবধান হচ্ছে ১১ থেকে ২৩ টাকা। ব্যবধান এত বেশি হওয়াটাও যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ টাকা বেশি অবমূল্যায়িত হলে আমদানি ব্যয়সহ বৈদেশিক দায় বেড়ে যাবে। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto