দেশে ডলার সংকটের মূলে রয়েছে টাকা পাচার
► বছরে ৮১ থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয় ► টাকা পাচার থেকেই ডলার সংকটের শুরু ► জরুরি ভিত্তিতে রোধ করার পদক্ষেপ দরকার ► ঋণের ২২ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ব্যাংকের খরচ বেড়ে যাচ্ছে
এখনো বাজেট পাস হয়নি। বাজেট নিয়ে সব ধরনের প্রতিক্রিয়া আমলে নিচ্ছে সরকার। প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে যেগুলো বাস্তবসম্মত এবং বাজেটে বাস্তবায়নযোগ্য সেগুলো পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি : প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও পুষ্টি’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেট পেশ করার পর নানা মহল নানা বক্তব্য দিচ্ছে। আবার অনেকেই সমালোচনা করছেন। তাঁদের উদ্দেশে বলব, আমাদের অর্থনীতি নিয়ে, বাজেট নিয়ে বিশ্বব্যাংক কী বলছে সেদিকেও নজর দিয়েন।
বিশ্বব্যাংক বলেছে ভালো হয়েছে। আমার টাকা লাগবে, বিশ্বব্যাংকের কথা শুনতে হবে। না হলে আপনারা টাকা দেন। বিশ্বব্যাংক কিছু বোঝে না, আপনি সব কিছু বোঝেন? বাজেট দিলাম, এটা দেখেন ও বোঝার চেষ্টা করেন।
এই বাজেট জনবান্ধব বাজেট। কোনো কিছুতে সমস্যা থাকলে পুনর্বিবেচনা করার সম্ভাবনা আছে।’
সভায় সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও কৃষিবিদ ড. শামসুল আলম বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ডলার সংকটের মূল কারণ টাকা পাচার। বছরে সাত থেকে আট বিলিয়ন ডলার বা ৮১ থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। টাকা পাচার থেকেই ডলার সংকটের শুরু।
তাই জরুরি ভিত্তিতে এটি রোধ করার পদক্ষেপ দরকার। ঋণের ২২ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ব্যাংকের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এর রাশ টানতে হবেই। ব্যাংক কমিশন করলে ভালো, না হলে অন্তত শক্তিশালী একটা কমিটি করা উচিত বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের নিয়ে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তিন লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা হওয়ার কথা এডিপি। হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে ধনীদের করহার বাড়ানো, সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে করমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহারের মতো প্রস্তাব সাহসী পদক্ষেপ। ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ পর্যায়ে উৎস কর ১ শতাংশ কমানো মূল্যস্ফীতি কমাতে ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর উদ্দেশ্যে সরকার এবার বাজেট কমিয়েছে। ঘাটতিও কমানো হয়েছে, যা খরচ কমানোর স্বার্থে করা হয়েছে। সে জন্য বলছি, এটি একটি সাহসী বাজেট।’
তিনি আরো বলেন, ‘এনবিআরকে শুধু কর আদায়ে ব্যবহার করুন। তবে ঋণখেলাপি কিভাবে কমানো যায় তা চিন্তা করতে হবে। ব্যাংক একীভূত করার যে উদ্যোগ তার ফল অনিশ্চিত।’
এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান।