কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট স্বীকার করতে বাধ্য হলেন ‘আমার পিছনে জনগণ নেই’
পার্লামেন্টে আগুন, গুলি করে মানুষ হত্যার পর বিতর্কিত উচ্চ ট্যাক্সের বিল প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য হলেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো। মঙ্গলবার এই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী জনতা ঝড়ো গতিতে ঢুকে পড়েন পার্লামেন্ট ভবনে। তাতে তারা আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় সহিংসতায় এবং গুলিতে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, তীব্র গণরোষের মুখে প্রেসিডেন্ট রুটো ওই ঘোষণা দিতে বাধ্য হন। জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার হয়েছে যে- এই বিল কেনিয়ানরা চান না। আমি পরাজয় স্বীকার করে নিচ্ছি। বিলটিতে আমি স্বাক্ষর করবো না। রাষ্ট্রীয় তহবিলে পরিচালিত কেনিয়ান ন্যাশনাল কমিশন অন হিউম্যান রাইটসের তথ্যমতে, মঙ্গলবারের ওই প্রতিবাদ বিক্ষোভে কমপক্ষে ২২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রুটো বলেছেন, তিনি এখন তরুণদের সঙ্গে আলোচনায় লিপ্ত হবেন।
তিনি ২০২২ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই সেখানে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ। এর সামনের সারিতে আছে তরুণরা। সারাদেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সত্তে¡ও উচ্চ ট্যাক্সের বিল মঙ্গলবার পাস হয় দেশটির পার্লামেন্টে। এর পরই বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের ভিতর প্রবেশ করেন। তারা এর ভিতরের বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। পার্লামেন্টের কোনো কোনো অংশে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। প্রথমে ‘সহিংসতা ও নৈরাজ্য’ দমন করতে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট রুটো। তিনি বলেন, এসব আর সহ্য করা হবে না। কিন্তু বুধবার তিনি সেই অবস্থান থেকে নমনীয় হন। জনতার অসাধারণ প্রতিবাদ বিক্ষোভের পর তিনি নরম হন। কেনিয়ার সিটিজেন টিভির সংবাদ শিরোনামে বলা হয়- তরুণ প্রজন্মের চাপের কাছে মাথা নত করেছেন রুটো। তিনি ফাইন্যান্স বিল প্রত্যাহার করছেন। এরপর ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি। এ সময় তিনি বর্ণনা দেন কেন ট্যাক্স বাড়ানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। দেশটির কাঁধে কমপক্ষে ৮০০০ কোটি ডলারের ঋণ। সেই ঋণ কিছুটা লাঘব হওয়ার জন্য এমন বিল নেয়া হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট রুটো বলেন, তার সরকার অগ্রগতি করছে। ঋণ শোধ করে দেশকে সার্বভৌম করার পথে রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এতে যেসব বিধান রাখা হয়েছে তাতে সুবিধা পাবেন কৃষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। কিন্তু তিনি স্বীকার করেন জনগণ তার পিছনে নেই। তিনি বলেন, আমি জনগণের নেতৃত্ব দিই এবং জনগণ তাদের রায় দিয়ে দিয়েছেন।