বাংলাদেশিদের নিয়ে আমার বক্তব্যের ‘এডিটেড ভার্সন’ প্রচার হয়েছে, লন্ডন মিশনকে স্টারমার
টিভি শোতে প্রচারিত বাংলাদেশিদের নিয়ে ‘আপত্তিকর মন্তব্যে’র একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন বৃটেনের লেবার নেতা শীর্ষ স্যার কিয়ার স্টারমার। তার বক্তব্যের পুরোটা প্রকাশ করা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন আমার বক্তব্যের ‘এডিটেড ভার্সন’ ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে।
কিয়ার স্টারমারের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে গত ২৬শে জুন লেবার পার্টিকে চিঠি দেয় লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম স্বাক্ষরিত ওই চিঠির
জবাবে লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার তার বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশিদের ক্ষু্ব্দ প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশদের সঙ্গে লেবার পার্টি এবং নিজের সম্পর্কের বিবরণ তুলে ধরেন। এ সময় তিনি তার বক্তব্য নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তির বিষয়টি নিরসনেরও চেষ্টা করেন। ২৯শে জুন পাঠানো ফিরতি চিঠিতে
স্যার কিয়ার স্টারমার বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতে দ্য সানকে দেয়ার সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশিদের বিষয়ে প্রচারিত আমার একটি মন্তব্য বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের অনেককে হতাশ করেছে। এই চিঠিতে আমি তা স্পষ্ট করার সুযোগটি নিতে চাই। এটি আমার বক্তব্যের একটি সম্পাদিত সংস্করণ, যা ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসন সীমিত করার বিষয়ে লেবার পার্টির নীতি সম্পর্কে তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল। জবাবে আমি উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের নামটি নিয়েছি। কারণ আমাদের দুই দেশের সরকারের মধ্যে এমন একটি কার্যকর অংশীদারিত্ব রয়েছে, যেখানে বৃটেনে থাকার অধিকার হারিয়েছেন এমন অভিবাসীদের নিরাপদে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
চিঠিতে কিয়ার স্টারমার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকদের ব্যাপক প্রশংসা করেন।
তিনি বৃটেনে বাংলাদেশ কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেন। বলেন, বহু বছর ধরে বাংলাদেশ কমিউনিটির সঙ্গে লেবার পার্টির ঐতিহাসিক ও অর্থবহ সম্পর্ক রয়েছে । লন্ডনের পূর্ব প্রান্ত থেকে বার্মিংহাম ও ওল্ডহাম পর্যন্ত বাংলাদেশ কমিউনিটির অনেক অবদান রয়েছে।
বৃটিশ মিউজিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে এবং অসংখ্য কারি পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ করে স্যার কিয়ার স্টারমার লিখেন- সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টগুলোতে অংশ নেয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। এ জন্য আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। তাছাড়া আমার নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকদের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।
২০১৬ সালে ঢাকা ও লন্ডন প্রবাসী অধ্যুষিত বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় জেলা সিলেট সফরের কথা স্মরণ করে স্যার কিয়ার স্টারমার তার চিঠিতে বলেন, আজ আমার বাংলাদেশ সফরের কথা মনে পড়ছে। আমি সবসময় বাংলাদেশ এবং বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটির বন্ধু এবং সমর্থক ছিলাম এবং আছি। ভবিষ্যতেও এই বন্ধুত্ব ও সমর্থন অব্যাহত রাখবো।
উল্লেখ্য, স্যার কিয়ার স্টারমারকে পাঠানো প্রতিবাদ পত্রে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেছিলেন, আপনার খুব ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচারণার এই সময়ে একটি সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করতে লিখছি। যা ২৪শে জুন ২০২৪ তারিখে দ্য সান-এর নির্বাচনী শোডাউনে আপনার সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছিল। যেখানে আপনি রুয়ান্ডা আইন সম্পর্কিত একটি প্রশ্নের উত্তরে জবাবে বলেন, আশ্রয় এবং অভিবাসন যে, ‘বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে লোকদের (অবৈধ অভিবাসী) টোরিদের অধীনে তাদের নিজ দেশে সরানো হচ্ছে না’। তারপর থেকে আমার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি অনেক বিশিষ্ট নেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে যারা শুধু আপনার মন্তব্যে দুঃখিত হননি বরং যুক্তরাজ্যে প্রবাসী সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।