USA

সরে দাঁড়ানো নিয়ে নিজ দলেই চাপের মুখে বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবারের বিতর্কে ধরাশায়ী হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর পর থেকে বাইডেনের হিসাবের পাশার দান যেন উল্টে যেতে শুরু করেছে। সমালোচিত হওয়ার পাশাপাশি আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যেতে বাইডেনের ওপর চাপ ক্রমে বাড়ছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি।

নির্বাচনের মাস চারেক আগে এসে দাতাদের অনেকেই বাইডেনকে সরে যেতে বলছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্যদের অনেকেই সংশয় প্রকাশ করে প্রকাশ্যেই বলছেন, আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে বাইডেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে টেক্কা দিতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের ডেমোক্রেটিক পার্টির এক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে জানান, কয়েক দিনের মধ্যে তাঁর দলের ২৫ জন কংগ্রেস সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যেতে বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

ট্রাম্প-বাইডেনের বিতর্কের পর করা রয়টার্স/ইপসসের জরিপের ফল বলছে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতি তিনজনের একজন মনে করেন, বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসা উচিত।

টেক্সাসের ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য লয়েড ডগেট গতকাল মঙ্গলবার এনবিসি নিউজকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। বাইডেনের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসুন। তিনি আশা করেন, তাঁর দলের অন্য আইনপ্রণেতারাও বাইডেনের প্রতি একই আহ্বান জানাতে এগিয়ে আসবেন।

লয়েড ডগেট হলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রথম আইনপ্রণেতা, যিনি নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসতে বাইডেনের প্রতি প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছেন।

বিতর্কের প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি গতকাল এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই বিতর্ক শুধু এক রাতের বিষয় নয়, বরং বাইডেনের স্বাস্থ্য নিয়ে পুরোনো প্রশ্ন সামনে টেনে এনেছে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও এটা বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেনের বিকল্প প্রার্থী হিসেবে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নাম বলেছেন লয়েড ডগেট। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদমাধ্যমটিকে কমলা হ্যারিস বলেন, ‘বাইডেন আমাদের প্রার্থী। আমরা এর আগে একবার ট্রাম্পকে হারিয়েছি। আমরা আবারও তা–ই করব।’

এদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে খারাপ করলেও বসে নেই বাইডেন। নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ম্যাকলিনে প্রচারে গিয়ে বাইডেন স্বীকার করে নেন, ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কটি ভালো হয়নি।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘এটা আমার জন্য সেরা রাত ছিল না। বিতর্কের আগে বিশ্বভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। প্রায় ১০০ টাইমজোন ঘুরে এসেছি।’

নিজের সহকর্মীদের নিষেধ শোনেননি মন্তব্য করে বাইডেন বলেন, ‘ফিরে এসে বিতর্কে অংশ নিয়েছি। মঞ্চে প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এটা কোনো অজুহাত হতে পারে না। তবে এটা একটি ব্যাখ্যা।’

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। দুজনে আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন। এই বিতর্কে মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী (৮১ বছর) প্রেসিডেন্ট বাইডেন ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ। ট্রাম্পের বাক্যবাণে প্রথম দিকে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি।

এত কিছুর পরও ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button