International

কেরালায় ‘মগজ-খেকো’ অ্যামিবায় আক্রান্ত আরও এক কিশোর

ভারতের কেরালায় ‘মগজ খেকো’ অ্যামিবা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে আরও এক কিশোর। এ নিয়ে দেশটির ওই রাজ্যে মে মাস থেকে মোট চারজন মস্তিষ্কের বিরল এই সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা গেল। আক্রান্ত চারজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাদের মধ্যে তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গত ৪ জুলাই এই সংক্রমণে ১৪ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়। এতে রাজ্যজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এরই মধ্যে তিনি ওই রাজ্যে যত দুষিত পুকুর বা নদী আছে তাতে স্নান বা গোসল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সুইমিং পুলগুলোর পানিতে ক্লোরিন দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।  জানা গেছে, চতুর্থ কেস হিসেবে রাজ্যের উত্তর কেরালা জেলার পায়েলির ১৪ বছরের এক কিশোরের এই রোগ শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

কী এই ‘মগজ খেকো’ অ্যামিবা?

এটি হচ্ছে- প্রাইমারি অ্যামিওবিক মেনিনজেওসেফেলাইটিস বা পিএএম। অ্যামিবা হল এককোষী প্রাণী। খালি চোখে দেখা যায় না এই প্রাণীকে। এটি থার্মোফিলিক। উষ্ণ প্রস্রবণ বা গরম পানিতে এই প্রাণীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় ভাল থাকে এই অ্যামিবারা। সেজন্য হট ওয়াটার লেক বা উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতে এদের দেখা মেলে অনেক বেশি।

সাধারণত উষ্ণ অঞ্চলের পুকুর বা নদীর পানিতে থাকা অ্যামিবা মানুষের নার্ভস সিস্টেমে হামলা চালায়। পানিতে নেমে গোসল করলে এটি কান ও নাকের ফুটে দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। তারপর সেটি চলে যায় মস্তিস্কে। এটি সরাসরি ব্রেনের কোষ ও টিস্যুতে আক্রমণ করে। তাই এটিকে ‘মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবা’ও বলা হয়। আক্রান্ত হলে মৃত্যুর হার প্রায় ৯০ শতাংশ। এবং আক্রান্ত হওয়ার ১-৮ দিনের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হয়। এই ধরনের সংক্রমণ এতটাই বিরল যে, এর কোনও নির্দেশিত চিকিৎসা নেই।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ধরনের সংক্রমণে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘাড়ে সমস্যা, বমি বমি ভাব, বমি, বিভ্রান্তি, চেতনা হারানো, খিঁচুনি, পেশির দুর্বলতার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। পরের দিকে তা আরও গুরুতর আকার ধারণ করে প্রাণঘাতীও হতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button