Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

দুর্নীতির ‘সম্রাট’ অতিধূর্ত: অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে নানা কারসাজি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ‘দুর্নীতিবাজ’ সদ্য সাবেক প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের পথ অনুসরণ করেছেন সাবেক দ্বিতীয় সচিব মেহরাজ উল আলম সম্রাট। বয়সে অনেকটা নবীন এ কর্মকর্তা দুর্নীতিতে অতি ধূর্ত। ফয়সাল স্ত্রী, শাশুড়ি, শ্যালকের নামে বিপুল সম্পদ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে আটকে গেছেন। কিন্তু একই পথে হেঁটে সম্রাট এখনো অধরা। অভিযোগ আছে, জ্ঞাতআয়বহির্ভূত কোটি কোটি টাকার সম্পদ বৈধ করতে তিনি নানা কারসাজি করেছেন। আশ্রয় নিয়েছেন জাল-জালিয়াতির। গৃহিণী স্ত্রী ও শাশুড়িকে পরিণত করেছেন ‘টাকা সাদা করার মেশিনে’। ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন-শুধু নামে নয়, প্রকৃতপক্ষেই কাস্টমসে দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতির ‘সম্রাট’ হিসাবেই পরিচিত তিনি! এরপরও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সম্রাট শুদ্ধাচার চর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০-২১ অর্থবছরে পেয়েছেন ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’।

দুদকের অনুসন্ধানে তার অবৈধ সম্পদ ও জালিয়াতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলেও তা ‘ফাইলবন্দি’ আছে। প্রভাবশালী মহলের তদবিরে চলছে অভিযোগ পরিসমাপ্তির পাঁয়তারা। একই সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৩ জুন ৬ মাসের লিয়েনে যোগ দিয়েছেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে (এডিবি)। দুদক থেকে প্রাপ্ত নথির সূত্র ধরে যুগান্তরের অনুসন্ধানে উল্লিখিত তথ্য পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আতিয়া তমা বলেন, ‘মেহরাজ উল আলম সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান পর্যায়ে থাকায় আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’ এ বিষয়ে জানতে সংস্থার উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার ওপর কোনো চাপ নেই। আমি কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

অনুসন্ধানকালে সম্রাটের ব্যক্তিগত ফাইল, স্ত্রী-শাশুড়ির আয়কর নথি ও দুদকে জমা হওয়া অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করেছেন এ প্রতিবেদক। তাতে দেখা গেছে, বিসিএস ৩০তম ব্যাচে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১২ সালের ৩ জুন তিনি কাস্টমস ক্যাডারে চাকরিতে যোগ দেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সম্রাট চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিশনারেটে দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে এনবিআরের কাস্টমস শুল্কনীতি বিভাগের দ্বিতীয় সচিব ছিলেন ২ বছর। সংস্থাটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলেও (সিআইসি) নিয়োগ পেয়েছিলেন। তখন এনবিআরের ভেতরে-বাইরে সমালোচনার ঝড় উঠে। কারণ যাদের বিরুদ্ধে ঘুস-দুর্নীতির অভিযোগ থাকে তাদের সাধারণত সিআইসিতে পদায়ন করা হয় না। দুদকে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া ও বেনজীর-মতিউর ইস্যুতে তোলপাড় শুরু হলে সম্রাটের ঘুস-দুর্নীতির ঘটনাও সামনে আসে। এমনকি দুদকের শুনানিতে তার হাজিরার ঘটনায় হইচই শুরু হলে তার শুদ্ধাচার পুরস্কারও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এ অবস্থায় নিজেকে বিতর্কের বাইরে রাখতে লিয়েন নিয়ে এডিবিতে যোগ দেন তিনি।

অভিযোগ আছে, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে থাকা অবস্থায় ঘুস-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন সম্রাট। এরপর স্ত্রী নাশিদ আলী ও শাশুড়ি রোকেয়া বেগমের নামে সম্পত্তি গড়তে শুরু করেন। অবৈধ উপায়ে অর্জিত কালোটাকা সাদা করতে চাকরিতে যোগদানের পরের বছরই ২০১৩ সালের ১৫ নভেম্বর শাশুড়ির নামে আয়কর ফাইল খোলেন। ১৪ সাল থেকে তার ফাইলে কক্সবাজার এলাকার জমি দেখানো শুরু হয়। একইভাবে স্ত্রীর আয়কর ফাইলেও বাড়তে থাকে সম্পত্তি। দুদক যেসব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ভবিষ্যতে রিসোর্ট করার ভাবনা থেকে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা মৌজায় শাশুড়ির নামে অন্তত ১৬ কোটি টাকার জায়গা কেনেন সম্রাট। এই অভিযোগ অনুসন্ধানকালে ২০২১ সালে দাখিল করা সম্রাটের শাশুড়ি রোকেয়া বেগমের আয়কর ফাইলে দেখা গেছে, মগনামা মৌজার ১৯৯৫ খতিয়ানে ২৪ দশমিক ৩০৪ শতাংশ, ২০১৬ খতিয়ানে ৮ দশমিক ৫৯৭ শতাংশ, ৭৭ ও ৮৩ খতিয়ানে যথাক্রমে ৮৭ দশমিক ৫ ও ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি রয়েছে। ওয়ারিশ সূত্রে এই জমি রোকেয়া বেগম পেয়েছেন বলে আয়কর ফাইলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে, একই বছরে স্ত্রী নাশিদা আলীর আয়কর ফাইলে একই খতিয়ানের জমি ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি খতিয়ানে শাশুড়ির চেয়ে স্ত্রীর জমির পরিমাণ বেশি। স্ত্রীর নামে মগনামা মৌজার ১৯৯৫ খতিয়ানে ৫৭ দশমিক ২৩২ শতাংশ, ২০১৬ খতিয়ানে ১৯ দশমিক ৩৯৯ শতাংশ ও৭৭ ও ৮৩ খতিয়ানে ১১১ দশমিক ২৫ শতাংশ দেখানো হয়েছে। এছাড়া শাশুড়ি ও স্ত্রী দুজনের ফাইলেই ৯৯৯, ৮৫৭ ও ৯৭৯ খতিয়ানে সমপরিমাণ ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ করে জমি দেখানো আছে। অভিযোগ আছে, সম্রাটের অবৈধ টাকা বৈধ করতে শুরুতে শাশুড়ির নামে জমি কিনে পরে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর করা হয়। শাশুড়ির আয়কর ২০১৩ সালে খোলার সময় এসব জমি দেখানো হয়নি। এক সময় রহস্যজনক কারণে শাশুড়ির আয়কর ফাইলের স্থায়ী ঠিকানা কক্সবাজারের পেকুয়ার পরিবর্তে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকার অভিজাত ওআর নিজাম রোডের ৯৪ নম্বর বাড়ি দেখানো হয়েছে। আর শাশুড়ির টিন ফাইলে ব্যবহার করা হয়েছে সম্রাটের মোবাইল নম্বর।

আরও জানা গেছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সি ব্লকের ১৫ নম্বর রোডের ২৯৭/ডি নম্বরে অবস্থিত বিলাসবহুল ‘নাভানা লুপিন’ নামের বহুতল বাড়িতে স্ত্রীর নামে ২ হাজার ৩৭২ বর্গফুট আয়তনের অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন সম্রাট। সুইমিংপুলসহ অভিজাত ভবনটির প্রতি বর্গফুট ১৪ হাজার টাকা হিসাবে দাম আসে ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮ হাজার। কিন্তু আয়কর ফাইলে দলিলমূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র ৮৪ লাখ ৩৮ হাজার ২০০ টাকা। এখানে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৪৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮০০ টাকা। স্ত্রী ও শাশুড়ির জন্য ঢাকার নামি দুটি জুয়েলারি থেকে কেনা হয়েছে কোটি টাকা দামে ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার। এসব স্বর্ণালংকার আয়কর ফাইলে বিয়ের উপহার হিসাবে দেখানো হয়েছে। স্ত্রী ও শাশুড়ির আয়ের উৎস দেখাতেও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন সম্রাট। কক্সবাজারের লবণ চাষ থেকে শাশুড়ির বাৎসরিক আয় দেখানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা। একই ব্যবসা থেকে স্ত্রীর আয়কর ফাইলেও ১০ লাখ টাকা আয় দেখানো হয়েছে। বাস্তবে তাদের লবণ চাষ ব্যবসার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এছাড়া স্ত্রী কোনো চাকরি না করলেও বেতন খাতে তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৫৪ টাকা। এভাবে স্ত্রী ও শাশুড়িকে কালোটাকা সাদা করার মেশিন হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ব্যাংক নথিতে সম্রাটের আরও জালিয়াতির ঘটনা পাওয়া গেছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জনৈক হাসানের নামে পদ্মা ব্যাংকে একটি বেনামি অ্যাকাউন্ট খুলে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর করেন সম্রাট। হাসানের স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা। তবে অ্যাকাউন্ট খুলতে সম্রাটের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর একই ব্যাংকে নিজের নামে ১০ লাখ করে মোট ৩০ লাখ টাকার তিনটি এফডিআর করেন সম্রাট। এছাড়াও শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে বিপুল টাকা জমা রাখা হয়েছে। ওইসব অ্যাকাউন্ট খুলতেও সম্রাটের নামে থাকা ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএঅআইইউ) মাধ্যমে খবর নিলেই বেনামি অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সব তথ্য পাবেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

বিআরটিএর নথিতে দেখা গেছে, গাড়ি রেজিস্ট্রেশনেও দুর্নীতি ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন সম্রাট। তার কেনা হুন্দাই টাকসন মডেলের বিলাসবহুল গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ-২১-৫১৫২) রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে শাশুড়ি রোকেয়া বেগমের নামে। মালিকের বাসার ঠিকানায় সম্রাটের বসুন্ধরার অ্যাপার্টমন্টের হোল্ডিং উল্লেখ করা হয়েছে। আর টিআইএন যোগাযোগে যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে সেটা ভুয়া। মো. ইমরান ইবনে মঞ্জু নামে এক যুবকের এনআইডি দিয়ে ওই মোবাইল নম্বর তোলা হয়েছে। মঞ্জুর বাড়ি রংপুর। আর ট্যাক্স টোকেনের জায়গায় সম্রাটের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। আর স্ত্রী নাশিদ আলীর ব্যবহৃত প্রিমিও মডেলের গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো গ-২৬-৩১৯২) তার নামেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে কেনা হয়েছে। এছাড়া ইউসিবি ব্যাংকে স্ত্রীর নামে আছে ১০ লাখ টাকার এফডিআর।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মেহরাজ উল আলম সম্রাট যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি যখন সিআইসিতে দায়িত্বে ছিলাম তখন আমার কাজে সংক্ষুব্ধ হয়ে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ করেছে। সেটা এখনো অনুসন্ধানাধীন। আমাকে দুদকে ডেকেছে আমি গিয়েছি। তবে আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা। আমার স্ত্রী ও শাশুড়ির নামে কক্সবাজারে জায়গা শ্বশুরবাড়ির ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া। এটা নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।’ ১২ বছরে আপনি কমবেশি এক কোটি টাকার কিছু বেশি বেতন পেয়েছেন, বসুন্ধরায় স্ত্রীর নামে সাড়ে তিন কোটি টাকার অ্যাপার্টমেন্ট কিভাবে কিনলেন-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সাড়ে তিন কোটি টাকায় নয়, বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে মৌজা দামে আমি ফ্ল্যাট কিনেছি।’ পদ্মা ব্যাংকে একই দিনে আপনার বেনামে করা এফডিআরের ৫০ লাখ টাকার উৎস কি-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর করিনি। আমার মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কারা এ এফডিআর করেছিল তা আমার জানা নেই।’ শাশুড়ি ও স্ত্রীর নামে গাড়ি কেনার বিষয়ে কি বলবেন-‘শাশুড়ির গাড়ি তিনি নিজেই কিনেছেন। ওটা আমার টাকায় কেনা নয়। আর স্ত্রী যখন চাকরি করতেন তখন তিনি তার টাকায় গাড়ি কিনেছেন। এগুলো তাদের আয়কর ফাইলে দেখানো আছে।’ অন্যান্য ক্ষেত্রে জাল-জালিয়াতির বিষয়ও তিনি অস্বীকার করেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto